নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: করোনাকালে খাদ্য় সুরক্ষা আইনের অধীনে থাকা ৮১ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন বিলি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। সেই প্রকল্পের নাম ছিল ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা।’ কিন্তু গত বছরের শেষে সেই প্রকল্প আর না এগনোর সিদ্ধান্তই নিয়েছিল মোদি সরকার। কিন্তু বৃহস্পতিবার ইউপিএ সরকারের খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের নাম বদলে তার নাম করা হল ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা’। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে ‘অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশন’। তাদের দাবি না মানলে ফেব্রুয়ারিতে তিনদিন সারা দেশ জুড়ে রেশন ধর্মঘটের ডাকও দিয়েছে তারা।
ঠিক কী নিয়ে ক্ষোভ ওই সংগঠনের? কেন্দ্র জানিয়েছে, চাল ও গমের জন্য কেজি প্রতি যথাক্রমে যে ৩ টাকা ও ২ টাকা নেওয়া হত তাও আর নেওয়া হবে না। আর এই পরিস্থিতিতে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসুর দাবি, ২০২৩ সালে এই নতুন প্রকল্পকে কার্যকর করতে সরকারকে বাড়তি ২ লক্ষ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। তাঁর মতে, এভাবে সুবিধাভোগীদের বোকা বানানো হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: রাজ্যের ডিএ মামলায় নতুন বেঞ্চ গঠন সুপ্রিম কোর্টের, শুনানি সোমবার]
পাশাপাশি তাঁর আরও বক্তব্য, মোদি সরকার আসলে PMGKAY প্রকল্প থেকে দূরে সরে গিয়ে NFSA প্রকল্পের অধীনে যে পরিমাণ খাদ্যশস্য দেওয়া হত তাই দিচ্ছে। তাঁর কথায়, ”আমরা চাই NFSA প্রকল্পের অধীনে খাদ্যশস্য বণ্টন জারি থাকুক। এবং PMGKAY যেভাবে চলছিল সেভাবেই চলুক।” তাঁর কটাক্ষ, সরকার নতুন বোতলে পুরনো মদ বিক্রি করছে।
তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ”রেশন ব্যবস্থায় টিকে থাকা অসম্ভব ব্যাপার। এই অবস্থায় আমরা গতকাল আমাদের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি যে ভারত সরকার যদি রেশন ডিলারদের ন্যূনতম আয় বার্ষিক ৫০ হাজার টাকা নিশ্চিত না করে এবং বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রেশন দিতে সমস্যা হওয়ায় বিকল্প ব্যবস্থা না নিলে আমরা ৭২ ঘণ্টা রেশন বনধ ডাকব ৭, ৮ ও ৯ ফেব্রুয়ারি। তাতেও কাজ না হলে রামলীলা ময়দানে জমায়েত করব ২০ মার্চ। তারপর সেখান থেকে পার্লামেন্টের দিকে মিছিল করব।” কেন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের দাবি মানছে না বলেও ক্ষোভ উগরে দেন তিনি।
[আরও পড়ুন:মনুস্মৃতি, রামচরিতমানসের মতো গ্রন্থ সমাজে ঘৃণা ছড়ায়, বিহারের শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্যে বিতর্ক]
উল্লেখ্য, এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন মোদির ভাই প্রহ্লাদ মোদি। বিশ্বম্ভরের দাবি, মোদির ভাই তাঁদের জানিয়েছেন, তিনি দাদা নরেন্দ্র মোদির বিরোধী না হলেও সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধী। সম্প্রতি দুর্ঘটনায় আহত হওয়ায় তিনি এদিনের বৈঠকে থাকতে পারেননি। কিন্তু তিনি জানিয়ে দিয়েছেন এই আন্দোলনকে তিনি সমর্থন করছেন।