shono
Advertisement

শীতের আগে জীবাণুদের হাত থেকে মুক্তি পাবেন কীভাবে?

জেনে নিন কী বলছেন চিকিৎসকরা। The post শীতের আগে জীবাণুদের হাত থেকে মুক্তি পাবেন কীভাবে? appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 07:49 PM Nov 10, 2017Updated: 02:19 PM Nov 10, 2017

রোগের পসরা সাজিয়ে বসেছে জীবাণুরা। সর্দি-কাশি-জ্বর-পেটখারাপ-গলাব্যথা-শ্বাসকষ্ট। সত্যি সময়টা খারাপ। ভাল থাকবেন কীভাবে? বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ শুনলেন গৌতম ব্রহ্ম।

Advertisement

সময়টা বড্ড খারাপ। ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ‘আপার ট্রাক্ট ইনফেকশন’, নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, ভাইরাল, আথ্রারাইটিস, ভাইরাল গ্যাসট্রোএন্টেরাইটিস। অসুখের এই মেলায় দিশেহারা হয়ে যাচ্ছেন ডাক্তারবাবুরা। রোগ ঠিকমতো ধরার আগেই রোগী কাহিল হয়ে পড়ছেন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে রাতারাতি চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দাদাগিরি করছে ভাইরাস। ঘরে ঘরে সর্দি-কাশি-জ্বর-পেটখারাপ-গলাব্যথা-শ্বাসকষ্ট।
কোথাও আবার ভাইরাসের তৈরি করা উর্বর মানব জমিনের দখল নিচ্ছে ব্যাকটেরিয়া। শরীরের দখল নিয়ে এই সময় এমন লড়াই চলেই জীবাণুর মধ্যে। ফলশ্রুতি? ‘সুপারঅ্যাডেড ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন’। প্রতি বছরই বর্ষা ও শীতের সন্ধিক্ষণে এমনটা হয়। কিন্তু এ বছর যেন জীবাণুর দাপট একটু বেশি। আক্রান্তের সংখ্যাও তাই বেশি। ‘সুখী’ গৃহকোণ অন্ধকার করে বাসা বাঁধছে অসুখ।

[এটিএম থেকে বেরোল ২০০০ টাকার পোড়া নোট, রাজ্যে বিভ্রান্তি]

ব্রুসেলোসিস ও স্ক্রাব টাইফাস: অজানা জ্বরের প্রকোপের মধ্যেই চিকিৎসকদের ধন্দ বাড়িয়ে দিয়েছে ‘ব্রুসেলোসিস’ ও স্ক্রাব টাইফাস। ডেঙ্গুর ছদ্মবেশে এই দুই রোগ ছোবল বসাচ্ছে। সম্প্রতি ব্রুসেলোসিসে আক্রান্ত হন আরামবাগের এক বাসিন্দা। জ্বর, মাথা ধরা, গাঁটে গাঁটে ব্যথা, র‌্যাশ বেরনো। ডেঙ্গুর মতোই উপসর্গ উপস্থিত ছিল রোগীর শরীরে। এমনকী, প্লেটলেটও কমে যাচ্ছিল। ডেঙ্গু বলেই ভেবে নিয়েছিলেন ডাক্তারবাবু। রক্ত পরীক্ষার পর ভুল ভাঙে। এই রোগ সাধারণত গবাদি পশুদের মধ্যে হয়। কিন্তু প্রাণীদের থেকে মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। যাকে ‘জুনোসিস’ বলা হয়। ব্রুসেলা লিভার, হার্ট, স্নায়ুতন্ত্রকেও অকেজা করে দিতে পারে। গবাদি পশু অধ্যুষিত অঞ্চলে রোগটি বেশি দেখা যায়। স্ক্রাব টাইফাস রোগের জন্য দায়ী এক ধরনের পোকা। খালি চোখে এদের দেখা যায় না। গত বছর পার্ক সার্কাসের একটি বেসরকারি শিশু হাসপাতালে ‘স্ক্রাব টাইফাস’ ধরা পড়েছিল দুই শিশুর মধ্যে। তখনও ধন্দে পড়েছিলেন ডাক্তাররা। ভেবেছিলেন রোগীর ডেঙ্গু হয়েছে। পরে ভুল ভাঙে। এ বছর স্ক্রাব টাইফাসের অনেক রোগীর সন্ধান মিলেছে।

সতর্কতা ও চিকিৎসা: সময়মতো অ্যান্টিবায়োটিক পড়লে এই রোগ সেরে যায়। কিন্তু ধরাটাই মুশকিল। কারন ব্রুসেলোসিস নির্ণয়ের পরীক্ষা কলকাতায় হয় না। পাস্তুরাইজড নয় এমন দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার (চিজ, মাখন, ঘি, ছানা) থেকেই মূলত এই জীবাণুটি মানুষের শরীরে প্রবেশ করছে। তাই দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার নিয়ে সাবধান হতে হবে।

[গিরে ফের সিংহকে ধাওয়া চার বাইক আরোহীর, ভাইরাল ভিডিও]

চিকুনগুনিয়া: চিকুনগুনিয়া মানে ‘কার্লড আপ’। এই রোগ হলে এত যন্ত্রণা হয় যে রোগী সাপের মতো কুঁকড়ে শুয়ে থাকতে চায়। তবে, এটা হেমারেজিক ডেঙ্গুর মতো বিপজ্জনক নয়। তবে ভোগান্তি প্রচুর। বাংলাদেশের একাংশ জুড়ে চিকুনগুনিয়ার দাপট ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে। আর যেহেতু চিকুনগুনিয়ার উপসর্গ ডেঙ্গুরই মতো। তাই ভয় পেয়ে শ’য়ে শ’য়ে চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত মানুষ কলকাতায় চলে আসছেন চিকিৎসা করাতে। গবেষকরা জানিয়ে দিয়েছেন, ইনফ্লুয়েঞ্জা ও ডেঙ্গু ভাইরাস নিজেদের মধ্যে অ্যান্টিজেন বিনিময় করে পরিস্থিতি জটিল করেছে। “চিকুনগুনিয়ার জন্য দায়ী টোগা ভাইরাস ও ডেঙ্গুর ফ্ল্যাবি ভাইরাসের যুগলবন্দিতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। কে বলতে পারে, এরাও নিজেদের মধ্যে অ্যান্টিজেন বিনিময় করছে না?” আশঙ্কা ভাইরোলজিস্ট ও ডাক্তারবাবুদের। দু’টি রোগেই ‘ভাইরাল আর্থ্রাইটিস’ বা ‘রিঅ্যাকটিভ আর্থ্রাইটিস’ হয়। ব্যথা কমাতে স্টেরয়েড পর্যন্ত দিতে হচ্ছে। ডাক্তারবাবুরা অনেক সময়ই বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছেন। বিভিন্ন জীবাণু একই ব্যক্তির শরীরে ঢুকে এমনভাবে ঘোঁট পাকাচ্ছে যে, রক্ত পরীক্ষায় আসল রোগ ধরাই পড়ছে না। এর উপর ‘ভাইরাল মায়োকার্ডাইটিস’ বা ‘সুপারএডেড ব্যাকটিরিয়াল ইনফেকশন’-এর মতো সংক্রমণ ছোবল বসিয়ে পরিস্থিতি নাগালের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে।

ভাইরাল আর্থ্রাইটিস: ভাইরাল জ্বর সেরে যাওয়ার পর ‘ভাইরাল আর্থ্রাইটিস’-এ আক্রান্ত হচ্ছেন বহু মানুষ। গাঁটে-গাঁটে প্রবল ব্যথা ও যন্ত্রণা, গোড়ালি, হাঁটুতে ব্যথা। এমনকী নড়াচড়ার ক্ষমতাও হারাচ্ছেন কেউ কেউ। কখনও ব্যথা কমানোর ওষুধেই কাজ হচ্ছে, কখনও আবার দিতে হচ্ছে স্টেরয়েড। ওষুধের সঙ্গে বিশ্রাম নিতে হবে। পাত্তা না দিলে ভয়ংকর বিপদের আশঙ্কা। এমনকী, হৃৎপিণ্ডেও ছোবল মারতে পারে ভাইরাল মায়োকার্ডাইটিস। ‘কার্ডিয়াক ফেলিওর’ হয়ে বেঘোরে প্রাণ হারাতে পারেন রোগী। সম্প্রতি ডেঙ্গু থেকে সেরে ওঠা কয়েকজন রোগীর এভাবেই মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তারপর হঠাৎ অবস্থার অবনতি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ারও সময় পাচ্ছেন না বাড়ির লোক। এই পরিস্থিতির জন্য ভাইরাল মায়োকার্ডাইটিসকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে ডাক্তারদের একাংশ। ‘পারবো ভাইরাস’ নামে একধরনের জীবাণু এই রোগের জন্য দায়ী। যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা ‘বি-১৯’ বলে চিহ্নিত করে থাকেন। ভাইরাসটি সাধারণত শিশুদের আক্রমণ করে। জ্বর, গালে র‌্যাশ-সহ নানা উপসর্গ দেখা দেয়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে গাঁটে গাঁটে ব্যথা বা ‘আর্থ্রাইটিস’ হয় না। কিন্তু বড়দের ক্ষেত্রে এই ভাইরাসই আর্থ্রাইটিসের জন্ম দেয়

[গারদে রাম রহিম, শুকোচ্ছে তার সাজানো বাগান]

সতর্কতা: ডেঙ্গু বা চিকুনগুনিয়া হলে জ্বর হয়। অনেকে জ্বর সেরে যাওয়ার পরই কাজে যোগ দেন। খাটাখাটনি শুরু করে দেন। এমনটা করা যাবে না। দিন সাতেক বিশ্রাম নিতেই হবে। আর ভাইরাল আর্থ্রাইটিস বা রিঅ্যাকটিভ আর্থ্রাইটিস হলে বিশ্রাম নিতেই হবে। পাত্তা না দিলে ছোবল দিতে পারে ‘ভাইরাল মায়োকার্ডাইটিস’। একশোজনের ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া হলে তিরিশজনের এই ভাইরাল আর্থ্রাইটিস হচ্ছে। কখনও ব্যথা এমন বাড়াবাড়ির পর্যায়ে যাচ্ছে যে, দিন দশেকের স্টেরয়েড কোর্স করাতে হচ্ছে।

আরও জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

The post শীতের আগে জীবাণুদের হাত থেকে মুক্তি পাবেন কীভাবে? appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার