শেখর চন্দ্র, আসানসোল: সাল ১৯৮৯। রানিগঞ্জ কোলফিল্ডের মহাবীর খনিতে আটকে পড়েন ৬৫ জন শ্রমিক। আর এই শ্রমিকদের ত্রাতা হয়ে এসেছিলেন মাইনিং ইঞ্জিনিয়ার যশবন্ত সিং গিল। বোরহোল করে ক্যাপসুলের মাধ্যমে এক এক করে শ্রমিকদের উদ্ধার করেন তিনি। সেই কাহিনি এখন সিনেমার পর্দায় ‘মিশন রানিগঞ্জ: দ্য গ্রেট ভারত রেসকিউ’। আর গিলের ভূমিকায় অক্ষয় কুমার। ছবি দেখে অতীতের কথা স্মরণ করলেন বাস্তবের হিরোরা। মুগ্ধ কয়লাঞ্চলের মানুষ।
আসানসোলে বেশিরভাগ সিনেমা হল বন্ধ। বন্ধ শপিং মলের মাল্টিপ্লেক্সগুলো। এই পরিস্থিতিতে সিনেমাপ্রেমীদের ভরসা আসানসোলের মনোজ টকিজ আর রানিগঞ্জের অঞ্জনা সিনেমা হলের মতো সিঙ্গল স্ক্রিন। প্রথম দিনে প্রথম শো দুটি সিনেমা হলেই বুক করে নেওয়া হয় চেম্বার অফ কমার্স থেকে। মহাবীর খনি থেকে বেঁচে ফেরা শ্রমিকদের সম্মান জানিয়ে সিনেমা দেখানোর ব্যবস্থা করে আসানসোলের মনোজ সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ। ১৯৮৯ সালের সেই ঘটনা সিনেমায় দেখে আবেগ চেপে রাখতে পারেননি খনি শ্রমিকরা।
[আরও পড়ুন: যৌনতার জ্ঞান দিতে গিয়ে ভরপুর ঠাট্টা, ‘থ্যাঙ্কু ফর কামিং’ একেবারেই টাইমপাস, পড়ুন রিভিউ]
এদিন ৬৫ জন জীবিত শ্রমিকের অন্যতম জগদীশ প্রজাপতি ও বালা প্রজাপতিকে সম্মানিত করা হয় সিনেমা হল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে। ছবি দেখে স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েন জগদীশ। যতটা ভালো লেগেছে, ততটাই বুকের ভিতরটা মোচড় দিয়ে উঠেছে। পুরনো সময় চোখের সামনে ভেসে উঠেছে। যাঁরা সেই সময় মারা গিয়েছিলেন, তাঁদের কোনও স্মারক স্মৃতি করা হয়নি, এই একটা আক্ষেপ রয়ে গিয়েছে জগদীশের মনে।
যদিও তৎকালীন মাইনিং সার্ভেয়ার দিলীপ কুমার নাগ বলেন, “৪ ইঞ্চির ডায়ামিটারের গর্ত ছিল। যার মাধ্যমে খনিতে দড়ির মাধ্যমে খাবার জল পাঠানো হয়েছিল। সেই খনিমুখকে ২৪ মিটার বাড়িয়ে ক্যাপসুল পাঠানো হয়। আর খনির ওপর থেকে চিহ্নিত করা কঠিন ছিল শ্রমিকরা ঠিক কোথায় আটকে আছে। সেখানেই গর্ত করা হবে। সেই কাজটি তিনিই করেছিলেন। ইসিএল, বিসিসিএল ও মাইন্স রেসকিউ টিমের সার্বিক প্রচেষ্টায় সেদিন মিশন রানিগঞ্জ সফল হয়েছিল। গিল সাহেবের একক কৃতিত্ব ছিল না।” অবশ্য রানিগঞ্জের গল্প সারা দেশের মানুষ জানতে পারছেন এতে খুশি মেয়র পারিষদ দিব্যেন্দু ভগৎ।