shono
Advertisement

শীতে ভিজছে বঙ্গ, শক্তি খোয়ালেও ‘জাওয়াদে’র প্রভাবে ৪০ বছরের মধ্যে রেকর্ড বৃষ্টি

প্রচুর শস্য নষ্ট, ক্ষতি ফুলচাষের।
Posted: 11:31 AM Dec 07, 2021Updated: 11:45 AM Dec 07, 2021

স্টাফ রিপোর্টার: জাওয়াদের (Jawad) ঝাপটায় রেকর্ড খানখান। ডিসেম্বরে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টিপাতের গত ৪০ বছরের খতিয়ানকে গুঁড়িয়ে দিয়ে গেল হীনবল ‘জাওয়াদ’। ঘূর্ণিঝড় থেকে নিম্নচাপে পরিণত হয়েও কার্যত ভাসিয়ে দিয়ে গেল দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিকে। আবহাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, ১৯৮১ সালের ১১ ডিসেম্বরে ১৩৩ মিমি বৃষ্টি (Rain) হয়েছিল কলকাতায়। তারপর এই সময়ে এত বৃষ্টি হয়নি। রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত সবথেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছে তারকেশ্বরে। ১৭৫.২ মিলিমিটার। যাতে ভেঙে গিয়েছে সব ডিসেম্বর মাসের সব রেকর্ড। আর অসময়ের এই অতিবৃষ্টিতেই চাষবাসের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষত আলু চাষের। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে চাষিরা বড় আর্থিক ক্ষতির শিকার। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা ও হাওড়ার ফুল চাষেরও।

Advertisement

এদিন পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণে নবান্নে (Nabanna) কৃষি আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ‌্যায়। ছিলেন কৃষি বিমা সংস্থার আধিকারিকরাও। ৬টি জেলায় সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে কৃষি দপ্তর। জেলাগুলি হল, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া ও হুগলি। এদিন বৈঠকে মন্ত্রী আধিকারিকদের জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা যাতে দ্রুত বিমার টাকা পান তার ব‌্যবস্থা করার জন‌্য। বিমা করার বিষয়েও সচেতনতা বাড়াতে জোর দিতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। অন‌্যদিকে উত্তরবঙ্গে এবার ৭৬ লক্ষ কৃষক নয়া ‘কৃষকবন্ধু’র টাকা পাবেন যা গতবারের থেকে ১৩.৫৫ লক্ষ বেশি।

[আরও পড়ুন: নিজের দপ্তরে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সভাপতি! ভাইরাল ছবি ঘিরে তুঙ্গে বিতর্ক]

রবিবার রাত থেকে চলা টানা বৃষ্টি সোমবারও সঙ্গী ছিল সাধারণ মানুষের। ফলে সপ্তাহের প্রথম দিন দুর্যোগকে সঙ্গে নিয়েই রাস্তায় বেরোতে হয়েছে অফিসযাত্রীদের। বাস-ট্রামও ছিল অন্যদিনের তুলনায় কম। যার ফলে দুর্ভোগ হয়েছে। সেই সুযোগেই বাড়তি ভাড়া হেঁকেছে ক্যাব-ট্যাক্সি। টানা বৃষ্টির জেরে বহু নিচু এলাকায় জল দাঁড়িয়ে যায়। তবে পুরসভার তরফে পাম্প চালিয়ে দ্রুত তা বের করা হয়েছে।
সকাল থেকেই আকাশ ছিল মেঘলা। হালকা বৃষ্টিও হয়েছে শহরে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা একধাক্কায় ছ’ডিগ্রি কমে যাওয়ার কারণে শীতের আমেজও ভালোই ছিল। তবে আজ থেকে আকাশ পরিষ্কার হবে। বাড়বে দিনের তাপমাত্রাও। ফলে এদিন যতটা শীত অনুভূত হয়েছে দিনের বেলায়, ততটা আজ হবে না। গায়ে সোয়েটার চাপালে গরমও লাগতে পারে।

রবিবারই শক্তি হারিয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয় সাইক্লোন জাওয়াদ (Cyclone Jawad)। তবে তাতে দুর্ভোগে কমতি ছিল না দক্ষিণবঙ্গে। অধিকাংশ জেলাতেই ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হয়েছে। সোমবার বৃষ্টির তীব্রতা কমলেও দিনভর হালকা বৃষ্টি হয়েই চলেছে। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, আপাতত নিম্নচাপ খুব দুর্বল হয়ে বাংলাদেশের উপর চলে গিয়েছে। তার আগে অবশ্য ভাসিয়ে দিয়ে গিয়েছে বাংলা। বাংলায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে হুগলি, বর্ধমান ও নদিয়া জেলায়। সোমবার শুধু উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়া জেলার কিছু অংশে ভারী বৃষ্টি হয়। আজ মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর থেকে আকাশ পরিষ্কার থাকবে। শুধুমাত্র উপকূলের দুই ২৪ পরগনার আকাশ মেঘলা থাকবে বলে জানা হয়েছে। এই বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে চাষবাসের। 

[আরও পড়ুন: জঙ্গিগোষ্ঠীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে আর্থিক লেনদেন! দুর্গাপুর থেকে গ্রেপ্তার ১]

উল্লেখ্য, এ বছর একাধিকবার অসময়ে বৃষ্টি হয়েছে। যার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চাষাবাদ। সবজি-ফসলের ভয়ংকর ক্ষতি হয়েছে। দুই মেদিনীপুর, চব্বিশ পরগনা, হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকায় ফসলের জমিতে জল ঢুকে গিয়েছে। ধানচাষেরও ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মঙ্গলবার থেকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমবে। দিনদুয়েকের মধ্যেই চার ডিগ্রি তাপমাত্রা কমবে। শুক্রবারের পর থেকে রাজ্যে ফিরবে শীতের আমেজ।” তবে আগামী সপ্তাহের মধ্যে তা ১৫ ডিগ্রি পর্যন্ত নামতে পারে বলে পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup অলিম্পিক`২৪ toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার