সুকুমার সরকার, ঢাকা: করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) মহামারীর সঙ্গে যুঝতে বিশ্বজুড়ে চাহিদার শীর্ষে এখন ভ্যাকসিন। বিভিন্ন জায়গায় যখন হাহাকার চলছে, তখন বাংলাদেশে চলছে ভ্যাকসিন প্রয়োগের মহাযজ্ঞ। অথচ উন্নত অনেক দেশই এখনও হাতে ভ্যাকসিন পেয়ে নাগরিকদের জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারেনি।এখানেই অনেক এগিয়ে ভারত। আর প্রতিবেশী বাংলাদেশের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় তারাও পেয়েছে প্রচুর পরিমান ভ্যাকসিন। আর এই ভ্যাকসিনেই নতুন করে মৈত্রী সূচিত হয়েছে দু’দেশের মধ্যে। ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও উন্নত হয়েছে।
বিশ্বের মহামারীর সময় এই ভ্যাকসিন (Corona vaccine) কূটনীতি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে নিয়ে গেছে নতুন উচ্চতায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, পৃথিবীর বহু দেশই কোভিড-১৯’এর প্রতিষেধকের ফর্মুলা উদ্ভাবন ও উৎপাদনের চেষ্টা করছে। কিন্তু বিশ্ব কোটি কোটি মানুষের টিকার প্রয়োজন মেটানোর মতো উৎপাদন ক্ষমতা আছে একটি দেশেরই, আর তা হল ভারত। বিশ্বে টিকার ৬০ শতাংশই উৎপাদিত হয় ভারতে। এ দেশে টিকা উৎপাদনের বেশ কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে পুনের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি হয়েছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন। তাদের দাবি, মাসে পাঁচ কোটির বেশি ‘কোভিশিল্ড’ ডোজ টিকা তৈরি করছে। উৎপাদন শুরুর কয়েক দিনের মাথায় প্রতিবেশী বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে টিকা পাঠায় ভারত। বাংলাদেশকে উপহার দেওয়া হয় সবচেয়ে বেশি ২০ লক্ষ ডোজের চালান। এতেই ওয়াকিবহাল মহলের মত, ভারত সরকারের কাছে যে ‘প্রতিবেশী প্রথম নীতি’, তা আরেকবার প্রমাণ হল এই ভ্যাকসিন কূটনীতির মাধ্যমে।
[আরও পড়ুন: মুক্তমনা ব্লগার অভিজিৎ হত্যায় ১৬ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা বাংলাদেশের আদালতে]
গত বছর আগস্ট মাসে ভারতের বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বাংলাদেশ সফরে এসে বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেওয়র কথা জানিয়েছিলেন। ভারতের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটার আগেই বাংলাদেশকে টিকা রপ্তানিও শুরু করে ভারত। সেরাম ইনস্টিটিউটের ‘এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটর’ করা হয়েছে বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাকে। ফলে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার তিন কোটি ডোজ বেক্সিমকোর কাছে বিক্রি করবে সেরাম ইনস্টিটিউট। এর প্রথম চালান হিসেবে ৫০ লক্ষ ডোজ গত ২৫ জানুয়ারি হাতে পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আড়াই কোটি ডোজ আসবে ছ’মাসের মধ্যেই। বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশই সবচেয়ে কম দামে ভ্যাকসিন পাচ্ছে। ভারত সরকার যে দামে ভ্যাকসিন পাচ্ছে বাংলাদেশও একই দামে পাচ্ছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এক টুইটে বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে ‘সর্বোচ্চ গুরুত্ব’ দেয় ভারত, ‘ভ্যাকসিনমৈত্রী’ তারই নজির।