সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হরিদ্বারের (Haridwar Hate Speeches) ধর্ম সংসদে সংখ্যালঘুদের গণহত্যার ডাক দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেন যতি নরসিংহানন্দ। শনিবার রাতে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। ধর্ম সংসদে উসকানিমূলক ভাষণ দেওয়ার ঘটনায় এটা দ্বিতীয় গ্রেপ্তারি।
এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার ওয়াসিম রিজভি ওরফে জিতেন্দ্র নারায়ণ ত্যাগীকে গ্রেপ্তার করেছিল উত্তরাখণ্ড পুলিশ। গত মাসে হরিদ্বারে তিনদিন ধরে চলে ধর্ম সংসদ। যেখানে উসকানিমূলক এবং বিদ্বেষমূলক ভাষণ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ধর্মীয় নেতাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু তারপরেও পুলিশ ধর্মীয় নেতাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। পরে সুপ্রিম কোর্ট দশদিনের মধ্যে রিপোর্ট তলব করে। তার পরই তৎপর হয় উত্তরাখণ্ড পুলিশ। জিতেন্দ্র গ্রেপ্তারির পর হুমকি দিয়ে যতি নরসিংহানন্দ (Yati Narsinghanand) বলেছিলেন, ‘আপনারা সবাই মরবেন।’ তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকেও গ্রেপ্তার করল পুলিশ।
[আরও পড়ুন: ‘ব্লাউজ পরে আসুন’, অন্তর্বাস পরে আসায় বিমানে উঠতে পারলেন না প্রাক্তন মিস ইউনিভার্স]
বিতর্কিত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন হিন্দু রক্ষা সেনার প্রবোধানন্দ গিরি, বিজেপির মহিলা মোর্চার নেত্রী উদিতা ত্যাগী এবং বিজেপি নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায়। একটি ক্লিপে দেখা যায় প্রবোধানন্দ গিরি বলছেন, “মায়ানমারের মতো আমাদের পুলিশ, সেনা, রাজনীতিবিদ এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের সমস্ত মানুষকে হাতে অস্ত্র তুলে নিতে হবে। এবার ‘সাফাই অভিযান’ চালাতে হবে।” অন্য একটি ক্লিপে পূজা শাকুন পান্ডে নামের এক বক্তা বলেন, “যদি ওদের সমূলে ধ্বংস করতে চান, তাহলে ওদের হত্যা করুন। আমরা এমন ১০০ জন যোদ্ধাকে চাই, যারা ওদের ২০ লাখ লোককে হত্যা করবে।” আরও একটি ক্লিপে স্বামী ধরমদাস মহারাজ বলেন, সুযোগ পেলে তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে হত্যা করতেন। তাঁর কথায়, “যদি আমি সেদিন সংসদে উপস্থিত থাকতাম, যেদিন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেছিলেন, জাতীয় সম্পদের উপর সংখ্যালঘুদের প্রথম অধিকার, আমি নাথুরাম গডসেকে অনুসরণ করতাম। একটি রিভলবার দিয়ে ওঁকে ছ’বার বুকে গুলি করতাম।”
তবে সংসদ ঘিরে যাঁকে নিয়ে এত বিতর্ক সেই যতি নরসিংহনন্দ জানিয়েছিলেন, তিনদিনের সংসদের মূল আলোচ্য ছিল ২০২৯-এ দেশের মুসলিম প্রধানমন্ত্রী। এটা কোনও ভিত্তিহীন ভাবনা নয়। যতি নরসিংহনন্দ বলেন, “আমাদের আশপাশের পরিবেশ দেখলেই বুঝবেন, কীভাবে হিন্দু কমছে আর মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ছে। গত দুই দশক ধরেই আমি এই কথা বোঝানোর চেষ্টা করছি।” সেই যতি নরসিংহানন্দকেই এবার গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ধৃতের সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠতা সর্বজনবিদিত।