shono
Advertisement

স্মৃতির ছবি: জন্মদিনে আর ডি বর্মন

৭৭তম জন্মদিনে কিন্তু দেখা গেল, সুরের ধারা পরিণত হয়েছে উদ্দাম স্রোতে। যা একদিন একান্ত নিজস্ব ছিল আর ডি বর্মনের, তাই হয়ে উঠেছে সবার। The post স্মৃতির ছবি: জন্মদিনে আর ডি বর্মন appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 08:11 PM Jun 27, 2016Updated: 02:44 PM Jun 27, 2016

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ”তৃষ্ণা তখন ছিল না, যখন তুমি সুর নিয়ে নাড়া-ঘাঁটা করে যেতে! আর আমরা অপেক্ষা করে থাকতাম, কখন সেই সুরে আমাদের ঝুলি ভরে উঠবে। তৃষ্ণা জেগেছে এখন, তোমার সুর একটু একটু করে রোজ জমা করছি। পঞ্চম, তুমি কি জানতে, হঠাৎই একদিন তোমার সুরের ধারা থেমে যাবে?”

Advertisement

রেকর্ডিং স্টুডিওয় ভাবমগ্ন তরুণ আর ডি বর্মন

গুলজার যখনই আর ডি বর্মনের কথা বলেছেন, বেশির ভাগ সময়েই তাঁর গলায় ঘনিয়ে উঠেছে গভীর বিষাদ। স্বাভাবিক! প্রিয় বন্ধু বিচ্ছেদে এমনটাই হয়।

জন্মদিনের গুগল ডুডল

তবে, ৭৭তম জন্মদিনে কিন্তু দেখা গেল, সুরের ধারা পরিণত হয়েছে উদ্দাম স্রোতে। যা একদিন একান্ত নিজস্ব ছিল আর ডি বর্মনের, তাই হয়ে উঠেছে সবার। তাঁর সুর নিয়ে পঞ্চমে মেতেছে দেশ। গুগল-এর ডুডলও নিয়ম মেনে পঞ্চমময়!
তবে, এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে প্রয়াত সুরকার-গায়কের মূল্যায়ন করতে যাওয়া বৃথা! মূল্যায়ন তো তখন হয়, যখন যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী থাকে। অথবা, কিছু জানা থাকে না মানুষটিকে নিয়ে।

বাবা শচীন দেব বর্মনের সঙ্গে আর ডি বর্মন

দুটি শর্তের কোনওটিই এ ক্ষেত্রে পূর্ণ হওয়ার নয়। আর ডি বর্মন এখনও অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তাঁর ধারে-কাছে আসার ন্যূনতম ক্ষমতাও কারও নেই! অন্তত, এখনও পর্যন্ত তেমন কাউকে তো পেলাম না আমরা।
আর, নতুন করে কী-ই বা জানার আছে তাঁকে নিয়ে?

নিজের ঘরে, সুরের ঘোরে

তাই স্মৃতির সরণিতে পায়চারিই উচিত হবে। উচিত হবে, তাঁর সুরে বুঁদ হয়ে থাকা। যে কথাটা টুইট করে জানিয়েছেন বলিউডের আয়ুষ্মান খুরানা। আয়ুষ্মান লিখেছেন, ”রোজই তো আর ডি বর্মনের গান শুনি। আজও শুনছি। জানি না, আর কী ভাবে তাঁকে শ্রদ্ধা জানানো যায়!”
ভুল কিছু বলেননি তিনি। দক্ষিণ ভারতকে ছেড়ে দিলে আজও রেডিও প্রতি দিন প্লাবিত হয় আর ডি বর্মনের গানের সুরে। তাঁর সুরেই সকাল হয়, সন্ধে নামে, রাত ঘনিয়ে আসে।

আর ডি বর্মনের সঙ্গে গুলজারের খুনসুটি

এই জায়গাটা তৈরি করে গিয়েছিলেন খোদ আর ডি বর্মনই! গুলজার একবার কথায় কথায় জানিয়েছিলেন আর ডি বর্মনের সঙ্গে তাঁর প্রথম কাজের অভিজ্ঞতার কথা। ছবির নাম ‘পরিচয়’। গান লিখছেন গুলজার, সুর দেবেন আর ডি। আর ডি হঠাৎ করেই গভীর রাতে হানা দিলেন গুলজারের বাড়িতে। বললেন, ”নিচে এসো, গাড়িতে ওঠো!” তার পর সারা রাত গাড়ি নিয়ে মুম্বই চষে বেড়ালেন আর ডি। আর গুলজারকে শুনিয়ে গেলেন একটার পর একটা ছবির জন্য বাঁধা গান!
এই পাগলামিকে অনেকেই বলবেন সৃষ্টিশীলতা! যাঁরা কাছ থেকে দেখেছেন, তাঁরা বলবেন, এটাই আর ডি বর্মন!

অন্তরঙ্গ মুহূর্তে স্ত্রী আশা ভোঁসলের সঙ্গে আর ডি বর্মন

আশা ভোঁসলেও বলেছেন ঠিক এই কথাই! এক দিন আচমকাই আর ডি তাঁকে বলেছিলেন, আজ তাঁরা শপিং-এ যাবেন। বেরনো হল গাড়ি নিয়ে। শেষ পর্যন্ত কিন্তু কেনা হল স্রেফ দুটো কাচের গ্লাস।
তার পর?
ওটারই তো ঝঙ্কার আমরা শুনেছি ‘চুরা লিয়া হ্যায়’ গানে!

রেকর্ডিং স্টুডিও আর ডি এবং আশা

আবার, ‘শোলে’ ছবির সময়ে আর ডি বর্মন স্ত্রীকে বলেছিলেন, ”একটা দৃশ্য ভাবো তো! একজন মোটাসোটা জিপসি উওম্যান বসে আছে আগুনের ধারে। সে একটা গান গাইছে। আর, তাকে ঘিরে নাচছে একজন তন্বী যুবতী।”
আশা গানটার সুর শুনেই বলেছিলেন, ”আমি এই গাইব না! আমার গলা বসে যাবে!”
অতঃপর, আর ডি নিজেই গাইলেন ‘মেহবুবা, মেহবুবা’!

কিশোর কুমারের সঙ্গে আর ডি বর্মন

আজ, জন্মদিনে এই সব স্মৃতি ভিড় করে আসছে ভক্তদের এবং কাছের মানুষদের মনে। আশা যেমন জানিয়েছিলেন এক সাক্ষাৎকারে, আর ডি চলে যাওয়ার পর তাঁর খুব আফসোস হয়। মনে হয়, গানটা তো গাইলেই হত! না হয় আরও কয়েকটা গান ছেড়ে দিতে হত! কিন্তু, মানুষটার ইচ্ছেটা পূর্ণ হত!

গান রেকর্ডিং-এর আগে, লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে

আবার, গুলজারের মনে হয়, পাহাড়ি পথের বাঁকে, মেঘ আর উপত্যকার মাঝে ভেসে আসা সুরের ধারাই খোদ আর ডি বর্মন। যাঁকে তিনি হারিয়ে খুঁজে ফিরছেন।
আমরাও কি সেই সুর খুঁজে বেড়াচ্ছি না প্রতিদিন হন্যে হয়ে?

The post স্মৃতির ছবি: জন্মদিনে আর ডি বর্মন appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement