shono
Advertisement

ডেঙ্গু নিয়ে অযথা আতঙ্ক নয়, নজর দিন এই বিষয়গুলিতেই

প্রতিকারের উপায় বাতলালেন চিকিৎসক শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। পড়ুন, জানুন আর অবশ্যই সতর্ক থাকুন। The post ডেঙ্গু নিয়ে অযথা আতঙ্ক নয়, নজর দিন এই বিষয়গুলিতেই appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 05:13 PM Nov 07, 2017Updated: 08:43 AM Nov 09, 2017

ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কের পরিবেশ চারদিকে।গলদ ঠিক কোথায়? এই আতঙ্কের শেষই বা কোথায়?  উত্তর খুঁজলেন শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। শুনলেন সুপর্ণা মজুমদার

Advertisement

ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কে রাজ্যবাসী। কিন্তু আতঙ্ক বা প্যানিক ঠিক কী নিয়ে? ডেঙ্গু হচ্ছে বলে, না ডেঙ্গু হলে যথাযথ চিকিৎসা মিলছে না বলে? ডেঙ্গুর কারণ আমরা জেনেছি। কিন্তু তার প্রতিকার এবং সঠিক চিকিৎসা এখনও অনাবিষ্কৃত। বলা হয়েছে, ডেঙ্গুর কোনও চিকিৎসা নেই। না আছে প্রতিষেধক ভ্যাকসিন, না কোনও সঠিক ওষুধ। তবে রোগটা ডেঙ্গু কিনা তা বোঝার কিছু পরীক্ষা রয়েছে। কিন্তু তার চিকিৎসা কী হবে? রোগী বাড়িতে থাকলেও যা হাসপাতালে গেলেও তাই। প্রচুর জল খেতে হবে, আর জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল। জিপি অর্থাৎ জেনারেল ফিজিশিয়ান এলেও যা বলবেন, বিশেষজ্ঞ এলেও তা বলবেন। তবুও কেন রোগীরা হাসপাতালে যেতে চাইছেন? ভর্তি হতে চাইছেন? কারণ এক তো এ রাজ্যে সকলের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে ডাকার ক্ষমতা নেই। আর দুই, রোগটা মাঝে মাঝে মারাত্মক হয়ে যায়। হঠাৎ প্লেটলেট কমে যায়, আর তা রোগীর মৃত্যুর কারণ হয়। এই পরিণতি যে কখন কার হবে তা জ্বরের শুরু থেকে বোঝা যায় না। জানতে হলে প্রয়োজন বারবার রক্ত পরীক্ষা করা। যা বাড়ি থেকে করা সম্ভব নয়। হাসপাতালে থেকেই তা করানো সম্ভব। অতএব চল হাসপাতাল।

শোনা যাচ্ছে, এক একটা হাসপাতালে হাজার হাজার জ্বরের রোগী ভিড় করছেন। বিভিন্ন পত্রিকায় তার ছবিও বের হচ্ছে। এক, দুই হাজার রোগীকে পরিষেবা দেওয়ার মতো পরিকাঠামো যে কোনও হাসপাতালেই নেই, তা বলাই বাহুল্য। না আছে অত বেড, ডাক্তার কিংবা নার্স। যদি সত্যি হাসপাতালগুলি সকলকে ভর্তি করে নিতে পারত তাহলে বোধহয় ডেঙ্গু নিয়ে এত আতঙ্কই ছড়াতো না। কার ‘বিনাইন’ ডেঙ্গু, আর কার ‘ম্যালিগন্যান্ট’ ডেঙ্গু,  আগে থেকে তা বোঝা যায় না বলেই রোগীরা আশ্রয় চাইছেন। তাঁরা জানতে চাইছে কোন ধরনের ডেঙ্গু হয়েছে তাঁদের। এতে প্রাণ যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে কি না?

[কী এমন মাহাত্ম্য আদাজলে, যে প্রবাদে পরিণত হয়েছে?]

প্রখ্যাত চিকিৎসক মনে করেন, রোগীদের যদি হাসপাতাল ভর্তি করে নিতে পারত তাহলে ডেঙ্গু নিয়ে সরকারের উপর তেমন কোনও চাপই সৃষ্টি হত না। বিরোধী পক্ষও এ নিয়ে বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ত না। কিন্তু অজস্র মানুষকে বেড দিতে গেলে, নতুন হাসপাতাল বিল্ডিং তৈরি করতে হবে। যা সরকারি-বেসরকারি কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। তাহলে বেড আসবে কোথা থেকে? এর জন্য রাজ্যের ডেকরেটরদের উপর ভরসা করা যেতে পারে। তাঁরা খুবই দক্ষ। প্রত্যেক হাসপাতালেও বহু জায়গা অতিরিক্ত থাকে। সেখানে অস্থায়ী দালান তৈরি করে রোগীদের থাকার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। পাশে অস্থায়ী শৌচালয় ও জলের ব্যবস্থাও করা যায়। বিদ্যুতের জন্য কোনও অনুমতিরও দরকার পড়ে না। সেখানেই বেড দেওয়া যেতে পারে রোগীদের। প্রয়োজনে ৫০০ থেকে ১০০০ বেডের সুবন্দোবস্ত করা যেতে পারে।

কিন্তু শুধু বেড বাড়ালেই হবে না। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যকর্মীও চাই। বিশেষ করে নার্স। এমনিতেই রাজ্যে নার্সের অভাব। তাহলে এত নার্স কোথায় মিলবে? এর জন্য আয়াদের উপর ভরসা করা যেতে পারে। প্রয়োজনের তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজে লাগানো যেতে পারে। আবার যাঁরা নার্স হিসেবে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তাঁদেরও কাজে লাগানো যেতে পারে। একজন সিনিয়র নার্সের হাতে এঁদের পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া যায়। যে কোনও হাসপাতালকে ঘিরে অনেক জিপি থাকেন, তাঁদেরও ডেঙ্গু প্রতিরোধে কাজে লাগানো যেতে পারে। মনে রাখতে হবে ডেঙ্গু ক্রমশই জাতীয় এমারজেন্সিতে পরিণত হচ্ছে। এই সমস্ত রোগী এক ছাদের তলায় থাকলে তাঁদের প্রয়োজনীয় সেবা করা যাবে। আবার রোগ প্রতিরোধ করাটাও অনেক সহজ হবে।

[সন্তানের জন্ম দিতে পারবেন পুরুষরাও, সম্ভাবনায় উচ্ছ্বসিত চিকিৎসকরা]

ডেঙ্গু নিয়ে প্রচারেও নানা ত্রুটি লক্ষ করা যাচ্ছে। এই রোগ পরিষ্কার জলেই বেশি ছড়ায়।  এদিকে প্রচারে দেখানো হচ্ছে শুধু নোংরা জলেই নাকি মশার বংশবৃদ্ধি হচ্ছে। এবার প্রয়োজন পরিষ্কার জলের দিকে খেয়াল রাখার। রাজ্যের সুইমিং পুলগুলোতে বিশেষ নজর দিতে হবে। ভেবে দেখবেন, সুইমিং পুলের জল সবসময় কাজে লাগে না। দিনের বেলায় লোকজন তাতে সাঁতার কাটেন বটে, কিন্তু রাত্রিবেলা বেশিরভাগ সুইমিং পুলই খালি পড়ে থাকে। আর তার শান্ত জলে এক রাতের মধ্যেই ডেঙ্গুর মশা জন্ম নিতে পারে। যেখানে মানুষ কৃত্রিম আলোয় কাজ করছেন সেখানেও খেয়াল রাখা জরুরি। সেখানেও মশার উপদ্রব হতে পারে।

শেষে একটাই কথা বলার, ডেঙ্গু নিয়ে রাজনৈতিক যুদ্ধ বন্ধ হোক। যা এই যুদ্ধ করছেন তাঁরা নতুন করে ভাবুন, এই রোগ থেকে কীভাবে মুক্তি পাওয়া যায়? সর্ব্বোপরি একটা কথা বলা যায়, ডেঙ্গুর রোগীদের যদি কোথাও আলাদা ভাবে রাখা যায়। আর সেখানে মশাদের প্রবেশ আটকানো যায়। তাহলে এ রোগ ছড়ানোর কোনও সম্ভাবনাই থাকবে না।

দেখে নিন কী বলছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক-

 

The post ডেঙ্গু নিয়ে অযথা আতঙ্ক নয়, নজর দিন এই বিষয়গুলিতেই appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার