সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: দুর্গাপুর ব্যারাজের (Durgapur Barrage) ভাঙা লকগেট মেরামতির কাজ শুরু করার আগেই বেশ কয়েক দফায় পরিবর্তন করতে হয়েছে নকশায়। আর তার জেরেই কাজ শুরু হতে এত বিলম্ব। কাজ শেষের পর বৃহস্পতিবার রাত থেকেই জল ঢুকবে ব্যারাজে। সেই জল বাড়ি বাড়ি পৌঁছতে শুক্রবার রাত হয়ে যেতে পারে। আবার শনিবার সকালও হতে পারে। তা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না সেচ দপ্তরের আধিকারিকরা।
বিপর্যয়ের পাঁচ দিন পর বুধবার দুপুর থেকে পূর্নোদ্যমে দুর্গাপুর ব্যারাজের ভাঙা ৩১ নং লকগেট মেরামতির কাজ শুরু হয়। সেচ দপ্তরের নির্দিষ্ট নকশাকে সামনে রেখে ডিএসপি’র কারিগরি সাহায্যে শুরু হয় মেরামতি। কিন্তু ‘গ্রাউন্ড জিরো’তে পরিস্থিতি অনুযায়ী বদল হতে থাকে নকশা। বিপর্যস্ত ৩১ নম্বর লক গটকে পুরো সিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সেচ দপ্তর। যেহেতু ওখানে বসেই লকগেট সিলের কাজ করতে হচ্ছে, তাই প্রয়োজনমতো বদল হতে থাকে পরিকল্পনা ও নকশায়। এদিন ভোরের দিকে লকগেট মেরামতির কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, তা শেষ হতে বৃহস্পতিবার সন্ধে গড়িয়ে গিয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, বৃহস্পতিবার বিকালে মেরামতির কাজ শেষ হলে সন্ধের পর থেকেই পানীয় জল সরবারহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে। যদিও ‘গ্রাউন্ড জিরো’তে দাঁড়িয়ে অতটা আশা করছেন না অনেকেই।
[আরও পড়ুন: অবশেষে স্বস্তি, নিউ নর্মালে আগামী সপ্তাহ থেকেই বঙ্গে চালু হচ্ছে লোকাল ট্রেন]
বৃহস্পতিবার ভোরেই ডিভিসিকে মাইথন ও পাঞ্চেত ড্যাম থেকে জল ছাড়ার সংকেত দিয়ে দেয় সেচ দপ্তর। সকাল সাড়ে ছ’টা থেকে ধীরে ধীরে জল ছাড়া শুরুও হয়ে যায়। এই জল ব্যারাজে পৌঁছতে প্রায় ১০ ঘণ্টা সময় লাগবে। সেচ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম ধাপে ২০০০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। ধাপে ধাপে প্রায় ৯ হাজার কিউসেক ছাড়া হবে। পানীয় জল সরবরাহ করার প্রয়োজনে জলাধারে ৪ হাজার ৯৯৭ একর ফিট জল প্রয়োজন। জলাধারে ২১১.৫ ফিট জল দাঁড়ালেই সেই জল ক্যানেলে ঢুকবে। এই পরিমাণ জল জমতে শুক্রবার ভোর হয়ে যাবে বলে সেচ দপ্তরের আধিকারিকদের ধারণা। এরপর সেই জল ক্যানেলে গেলে তা পাম্প করে পরিস্রুত করার পরই মিলবে পানীয় জল। এই প্রক্রিয়া শেষ হতে হতে শুক্রবার রাত গড়িয়ে যাবেই বলে ধারণা কর্মরত ইঞ্জিনিয়ারদের।
[আরও পড়ুন: ‘বাংলা বিরোধী অমিত শাহ’, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের দিনই পালটা প্রচার তৃণমূলের]
এদিকে, দুর্গাপুর নগর নিগমের পাম্পে হাওয়া জমেছে বলে জানা গিয়েছে। তাই সেক্ষেত্রে পাম্প কর্মক্ষম হতে একটু সময় লাগবে। তা সারিয়ে ফেলতে ইতিমধ্যেই উদ্যোগী হয়েছে নিগম। নতুন কোনও বিপর্যয় না হলে শুক্রবার রাতের পর থেকে যে কোনও সময়ই নলবাহিত জল মিলতে পারে। সেচ দপ্তরের দামোদর হেড ওয়ার্কসের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় সিং জানান, “পরিস্থিতির সঙ্গে পরিকাঠামো প্রস্তুত করতে একটু সময় লেগেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধের পর শেষ হয়ে যাবে লকগেট মেরামতির কাজ। তারপরই শুরু হবে জল সরবরাহ।” কবে আবার জল সরবরাহ স্বাভাবিক হয়, এখন সেই অপেক্ষাতেই প্রহর কাটছে দুর্গাপুরবাসীর।
ছবি: উদয়ন গুহরায়।