সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বাধীনতার পর থেকেই ভারতের আর্থসামাজিক পরিস্থিতির উপর নির্ণায়ক প্রভাব ফেলে আসছে সংরক্ষণ। কিন্তু আদৌ এর প্রয়োজনীয়তা বা বৈধতা কতটা, তা নিয়ে বহু আলোচনা, বিতর্ক, জলঘোলা হয়েছে। বহু মানুষ এই পদ্ধতির বিরোধিতা করেছেন। সংরক্ষণ (Reservation) প্রত্যাহারের দাবিতে মামলা-মোকদ্দমাও কমবেশি হয়েছে। তবে, এর আগে কখনও কোনও আদালত সংরক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি। কিন্তু এবার সেটাই হল মাদ্রাজ হাই কোর্টের এক রায়ে।
সম্প্রতি, মাদ্রাজ হাই কোর্টের (Madras High Court) বিচারপতি পুস্পা সত্যনারায়ণন (Pushpa Sathyanarayanan) একটি পর্যবেক্ষণে ঘুরিয়ে সংরক্ষণের কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। নিজের পর্যবেক্ষণে তিনি লিখেছেন, “উচ্চশিক্ষায় সংরক্ষণ একটি গুরুতর ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা কিনা সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছে। অনেক ক্ষেত্রেই জ্ঞানী এবং যোগ্য পড়ুয়ারা উপযুক্ত শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন না। আবার যারা মেধার ভিত্তিতে সুযোগ পাননি, সংরক্ষণের জোরে তাঁদের সুযোগ হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে অনেক পড়ুয়া নিজেদের স্বপ্ন সফল করতে পারছে না। পিছিয়ে পড়া এবং অবদমিত শ্রেণিকে সমাজের উপরের সারিতে উঠে আসার সুযোগ যে দেওয়া উচিত, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু একইভাবে উচ্চবর্ণের অনেক মানুষই আছেন, যারা হয়তো আর্থিকভাবে দুর্বল। শুধুমাত্র সংরক্ষণের জন্য তাঁদের প্রাপ্য জায়গাটা থেকে যেন বঞ্চিত হতে না হয়।”
[আরও পড়ুন: ‘বড় বিনিয়োগের হটস্পট হবে ভারত, ধাক্কা সত্বেও চলবে আর্থিক সংস্কার’, ঘোষণা নির্মলার]
আদালত বলছে, সংরক্ষণ যে শুধু যোগ্য পড়ুয়াদের বঞ্চিত করছে তাই নয়, তাঁদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতাতেও হস্তক্ষেপ করছে। অনেক সময়ই দেখা কোনও ব্যক্তি বা পড়ুয়া শুধু সংরক্ষণের জন্য নিজের পছন্দের বিষয়ে পড়াশোনা করতে পারছেন না। তাঁকে অন্য কোনও বিষয় বেছে নিতে হচ্ছে। যা ওই ব্যক্তির পছন্দের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ। মাদ্রাজ হাই কোর্টের এই পর্যবেক্ষণ নিঃসন্দেহে পরবর্তীকালে সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনে রসদ জোগাবে। বস্তুত আদালতের এই পর্যবেক্ষণ যে অনেকাংশে বাস্তবের সঙ্গে হুবহু মিলে যায়, সেটা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই।