shono
Advertisement

Breaking News

বাড়ির নিমগাছেই ছিল বাসা! ডালপালা কাটতেই উপদ্রব শুরু ‘অশরীরী’র, আতঙ্কে কাঁটা গৃহস্থ

ওঝার দ্বারস্থ কাটোয়ার পরিবার।
Posted: 09:10 AM Jun 12, 2022Updated: 12:14 PM Jun 12, 2022

ধীমান রায়, কাটোয়া: শুরু হয়েছিল উচ্ছেদ প্রক্রিয়া। কিন্তু তাঁর ‘ঘরে’ হাত পড়তেই বিপত্তি। পালটা উচ্ছেদকারীদেরই ঠাঁই নাড়া করতে কোমর বেঁধেছেন তিনি। অথচ কোনও পুলিশ-প্রশাসন কিছুই করতে পারছেন না। কারণ, প্রতিহিংসা পরায়ণ সেই ‘তিনি’ তো কোনও রক্তমাংসের মানুষ নন, বরং এক ‘অশরীরী’! আপাতত অশরীরীর তাণ্ডবে কাঁটা কাটোয়ার (Katwa) আখড়া গ্রামের আচার্য পরিবার। বাড়ি থেকে অশরীরীকে তাড়াতে ওঝার দ্বারস্থ হয়েছে তারা। যদিও এই ভূতের গল্পে বিশ্বাস করতে নারাজ পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চ। বিষয়টি তারা খোঁজ নিয়ে দেখছে।

Advertisement

কাটোয়ার আখড়া গ্রামের গোয়ালপাড়ার বাসিন্দা রঞ্জিত আচার্য, পৌরহিত্য করেন। আবার রাজমিস্ত্রির জোগারের কাজও করতে যান। বাড়িতে রয়েছেন বিধবা মা, স্ত্রী ও এক ছেলে নয়ন। নুন আনতে পান্তা ফুরনো সংসার। তাঁদের বাড়ির মধ্যেই রয়েছে একটি নিমগাছ। সেই নিমগাছ কাটার প্রক্রিয়া শুরু হতেই বিপত্তি। এমন পরিস্থিতি যে আতঙ্কে কাঁটা আচার্য পরিবার গৃহত্যাগী হওয়ার জোগার।

বাড়িতে ভাঙচুর। ছবি: জয়ন্ত দাস।

 

[আরও পড়ুন: অশান্তির মধ্যে হাওড়া পুলিশে বিরাট রদবদল, কমিশনার পদে এলেন প্রবীণ ত্রিপাঠী]

রঞ্জিতবাবুদের শৌচাগারের সামনের উঠোনে বেড়ে ওঠা নিমগাছটি প্রায় ১৮ বছরের পুরনো। এযাবৎকাল গাছটিতে তিনি হাত দেননি। কিন্তু সম্প্রতি গাছটি কেটে ফেলার কাজ শুরু করেছেন। বাড়ির মালিক রঞ্জিত বাবু জানাচ্ছেন, গাছটিতে হাত পড়ার পর থেকেই তাঁদের বাড়িতে শুরু হয়েছে অশরীরীর উপদ্রব। ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর হচ্ছে। কে এমনটা ঘটাচ্ছে তা অবশ্য তাঁরা জানেন না। কারণ, কাউকেই দেখা যাচ্ছে না।

বাড়িতে ভাঙচুর। ছবি: জয়ন্ত দাস।

রঞ্জিতবাবুর কথায়,”নিমগাছটি বছর-বছর একটু আধটু ছেঁটে দিতাম। কিন্তু কোনও সমস্যা হয়নি। গাছের পাতা পড়ে বাড়িঘর অপরিষ্কার হচ্ছিল। তাই গাছটি সম্পূর্ণ কেটে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। দিন দশেক আগে গাছের ডালপালা কেটে দেওয়ার পর যখন কাণ্ডের একাংশ কাটা হয়, সেদিন রাত থেকেই ওই অশরীরী ঘরের মধ্যে জিনিসপত্র ভাঙচুর করছে। চোখের সামনেই জলের বালতি, চালের টিন উলটে দিচ্ছে। বাসনপত্র ফেলে দিচ্ছে।” একা রঞ্জিতবাবু নন, একই কথা বলছেন তাঁদের প্রতিবেশীরাও। প্রতিবেশী দিব্যেন্দু ঘোষের কথায়, “আমি একবার রঞ্জিতদের বাড়িতে কিছুক্ষণ ছিলাম। আমার চোখের সামনেই জলের বালতিটা কে যেন লাথি মেরে ছিটকে ফেলে দিল। ভয়ে পালিয়ে এসেছি। তারপর থেকে ওদের বাড়িতে যাইনি।”

গাছ কাটার পর। ছবি: জয়ন্ত দাস।

 

[আরও পড়ুন: পয়গম্বর মন্তব্য বিতর্কের জেরে দেশজুড়ে অশান্তি! রাজ্যগুলিকে সতর্ক করল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক]

অশরীরীর উপদ্রব থেকে মুক্তি পেতে দাঁইহাটের ঠাকুরবাড়ির দ্বারস্থ হন আচার্য পরিবার। সেখান থেকে বলা হয়েছে,”ওই নিমগাছে এক ব্রহ্মদৈত্যের আশ্রয় ছিল। গাছটি কাটায় রেগে গিয়ে সেই এসব ঘটাচ্ছে।” আপাতত নিমগাছটি কাটার কাজ অসমাপ্ত। নিয়ম করে গাছের তলায় দু’বেলা ধুপধুনো দিচ্ছেন রঞ্জিতবাবুরা। ক্ষমা চাইছেন সেই ‘ব্রহ্মদৈত্যের’কাছে।

ছবি: জয়ন্ত দাস।

যদিও অলৌকিকতার বিষয়টি অস্বীকার করছে বিজ্ঞানমঞ্চ। এ প্রসঙ্গে কাটোয়ায় পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চের সম্পাদক জয়ন্ত সরকার বলেন,” ওর মধ্যে কোনও অলৌকিকতা নেই। জিনিসপত্র ফেলে দেওয়ার বিষয়টি হয় কেউ ঘটাচ্ছে, অথবা দু একবার কোনওভাবে পড়ে গিয়েছে।মনে হচ্ছে ওই পরিবারের মধ্যে একটা মনস্তাত্বিক সমস্যা কাজ করছে। আমরা খোঁজ নেব।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup অলিম্পিক`২৪ toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার