সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সময়ের সঙ্গেই দ্রুত পালটেছে আমেরিকা ও কুর্দ বিদ্রোহীদের মধ্যে সম্পর্ক৷ এককালের মিত্র মার্কিন ফৌজ আজ কুর্দদের কাছে বিশ্বাসঘাতক৷ আর হবে নাই বা কেন, ওয়াশিংটনের ডাকেই ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে লড়াইয়ে সব থেকে বেশি রক্ত দিয়েছে কুর্দিশ মিলিশিয়া ‘YPG’৷ কিন্তু তুরস্কের আগ্রাসনের মুখে তাদেরই একা ফেলে সিরিয়া থেকে কার্যত বিদায় নিচ্ছে আমেরিকার সেনাবাহিনী৷ ফলে পিছিয়ে আসা মার্কিন জওয়ানদের উপর পচা ডিম, আলু ছুঁড়েই গায়ের ঝাল মেটাচ্ছেন ক্ষুব্ধ কুর্দ জনতা৷
চলতি মাসের শুরুতেই সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তারপরই মিত্রশক্তি কুর্দ মিলিশিয়া বা ‘সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস’-কে কার্যত জলাঞ্জলি দিয়ে কুর্দ অধ্যুষিত উত্তরপূর্ব সিরিয়ার সমস্ত ঘাঁটি থেকে সরে এসেছে মার্কিন সেনা। সদ্য একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে কুর্দি সংবাদমাধ্যম৷ দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া সেই ভিডিওয় তুলে ধরা হয়েছে গত সোমবারের একটি ঘটনা৷ দেখা যাচ্ছে, তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তের কুর্দ প্রধান কামিশলি শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছে একের পর এক মার্কিন সাঁজোয়া গাড়ি৷ আর রাস্তার ধার থেকে পচা ডিম, আলু ছুঁড়ছে বিক্ষুব্ধ কুর্দ জনতা৷ অনেকককেই বলতে শোনা গেল, ‘ইঁদুরের মতো মাঠ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে আমেরিকা৷’ প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে লড়াইয়ের ময়দানে কুর্দদের একা ফেলে যেতে চাইছে না মার্কিন ফৌজও৷ তবে ট্রাম্পের নির্দেশে একপ্রকার বধ্য হয়eই ওরে আসতে হচ্ছে তাঁদের৷
মার্কিন বিদেশ প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এসপার জানিয়েছেন, কুর্দদের অঞ্চলে থাক তেলের ক্ষণীগুলির সুরক্ষার জন্য সেনার কয়েকটি ইউনিট রাখার কথা ভাব হচ্ছে৷ এদিকে, মার্কিন সেনার এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, উত্তর সিরিয়ার সব ঘাঁটি ছেড়ে আপাতত কোবানে শহরে এসে জড়ো হয়েছে মার্কিন ফৌজ। সেখান থেকে জওযানদের বিমানে করে আমেরিকা ফিরিয়ে আনা হবে। এই মুহূর্তে সিরিয়ায় রয়েছে প্রায় ১ হাজার মার্কিন সেনা। কুর্দ বিদ্রোহীদের সঙ্গে মিলে ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে লড়াই করেছে তাঁরা। তবে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগানের সঙ্গে গোপন বোঝাপড়ার পর মার্কিন ফৌজ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প। তারপরই ‘ফ্রি জোন’ গড়ার উদ্দেশ্যে সিরিয়ার কুর্দ বিদ্রোহীদের দখলে থাক এলাকায় সামরিক অভিযান শুরু করেছে তুরস্কের বাহিনী। এদিকে, মার্কিন ফৌজ সরে যাওয়ায় খুশি রাশিয়া। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই মানবিজে একাধিক মার্কিন সামরিক ঘাঁটির দখল নিয়েছে রুশ সেনা। পাশাপাশি শহরে প্রবেশ করেছে মস্কোর বন্ধু প্রেসিডেন্ট বাশার-আল-আসাদের বাহিনীও। সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে সিরিয়ায় ক্ষমতা দখলের বেনজির লড়াই চলছে। আর এই যুদ্ধের মাশুল গুনতে হচ্ছে নিরীহ নাগরিকদের।
[আরও পড়ুন: জঙ্গিদের মদত দিচ্ছে পাকিস্তান তাই ভারতের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে না, দাবি আমেরিকার]
দেখুন ভিডিও: