অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: কর্মজীবনের শেষ দিন তাঁর। এরপর তো অখণ্ড অবসর। অবসরের পর চাকরির কথা ভুলে শেষ জীবনটা কীভাবে কাটাবেন, মোটের উপর কতকটা এমন চিন্তাই করেন আর পাঁচজন। কিন্তু, তিনি একটু আলাদা। বই ছাড়া তিনি কিছু ভাবতে পারেন না। তার উপর তাঁর জীবনের অন্যতম আদর্শ লড়াকু নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আর, সেই আদর্শকে পাথেয় করেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ৮৬টি বই যাতে হাওড়া (Howrah) জেলার সমস্ত গ্রন্থাগারে থাকে, এমনকী, বেসরকারি স্কুল, কলেজেও যাতে এই বই ছাত্রছাত্রীরা পায় তার জন্য নিজে প্রতিটি লাইব্রেরি ও স্কুল-কলেজে গিয়ে এই বই দেওয়ার অঙ্গীকার করলেন এক গ্রন্থাগার কর্মী। শনিবার হাওড়া জেলা গ্রন্থাগার থেকে অবসর নেওয়ার দিনই এই অঙ্গীকার করলেন লোকাল লাইব্রেরি অথরিটির সদস্য নিশীথ সরকার।
২০১৭ সালে রাজ্য সরকার নিশীথবাবুকে জেলার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থাগার কর্মীর সম্মান দিয়েছিল। সাধারণ মানুষের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর বই পৌঁছে দেওয়াকে তিনি একটি আন্দোলন বলে মনে করছেন। তাঁর বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বই বুকে নিয়ে তিনি একাই এই আন্দোলনে নামবেন। এদিন নিশীথবাবু জানালেন, গ্রাম ও শহর মিলিয়ে হাওড়া (Howrah) জেলার ১৩৫টি লাইব্রেরিতেই যাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বই থাকে সেজন্য লাইব্রেরিগুলিতে তিনি নিজে গিয়ে বইগুলি পৌঁছে দেবেন। নিশীথবাবুর কথায়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনাদর্শ, তাঁর দীর্ঘ আন্দোলনের ইতিহাস, বিভিন্ন জনমুখী সামাজিক প্রকল্পের মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের দিনযাপনের পরিবর্তনকে একেবারে সকলের ঘরে পৌঁছে দিতেই তাঁর এই উদ্যোগ।
[আরও পড়ুন: স্কুলের গাফিলতির জের! ‘ঐক্যশ্রী’ প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সংখ্যালঘু পড়ুয়ারা]
এদিন নিশীথবাবু আরও জানালেন, বিধানচন্দ্র রায়ের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সময়েই পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর একের পর এক সামাজিক প্রকল্পগুলো যেভাবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে পুরস্কৃত হয়েছে তা ভারতের যে কোনও রাজ্যের কাছেই ঈর্ষাজনক। দেশের এমন একজন মুখ্যমন্ত্রীর সম্বন্ধে জানা বা পড়া রাজ্যের সমস্ত মানুষের একান্তই উচিত বলে মনে করেন তিনি। হাওড়া বইমেলা, হাওড়া বঙ্কিম মেলার প্রাক্তন প্রধান উদ্যোক্তা তথা সমাজকর্মী নিশীথবাবুর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকেই।