সুপর্ণা মজুমদার: আর জি কর কাণ্ডের পর হাসপাতালে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অপর্ণা সেন। প্রতিবাদ করতে গিয়ে হাসপাতাল চত্বরে চূড়ান্ত ক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছিল অপর্ণা সেনকে। বিশিষ্ট শিল্পীকে 'চটিচাটা বুদ্ধিজীবী' বলেও আক্রমণ করা হয়। তবুও প্রতিবাদ থামাননি একসময়কার 'পরিবর্তনের পোস্টার গার্ল'। রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর, নাগরিক মিছিলেও শামিল হলেন অপর্ণা।
আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে আবারও পথে নেমেছেন 'তিলোত্তমা'রা। সেখান থেকেই তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে মুখ খুললেন প্রবীণ অভিনেত্রী তথা পরিচালক। ঘটনার তিন সপ্তাহ পেরলেও কেন অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে ছাড়া আর কোনও কিণারা খুঁজে পাচ্ছে না সিবিআই? প্রশ্ন তুলেছেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়-সহ অনেকেই। তদন্তের স্লথ গতিতে একাংশ যখন অসন্তুষ্ট, তখন অপর্ণা সেন কোথাও গিয়ে আশার আলো দেখছেন।
রবিবার নাগরিক মিছিলে শামিল হয়ে কলকাতার রাজপথে দাঁড়িয়ে অপর্ণা সেন বললেন, "আমি আশাহত হইনি। এখনও আশাবাদী। তার কারণ, এই ধরণের ইস্যুতে তদন্তের ক্ষেত্রে সময়ের প্রয়োজন হয়। আসল তদন্তটা তো শুধু সঞ্জয় রায়কে নিয়ে নয়, আসল তদন্ত হচ্ছে, এই আঁতাঁতটা নিয়ে। আর এই আঁতাতটা ভাঙার জন্য যে সন্দীপ ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তাতে আমি খুশি।" প্রসঙ্গত গত ৯ আগস্টের ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে যায় এক সপ্তাহ বাদে। তবে সিজিও কমপ্লেক্সে গত ২ সপ্তাহ ধরে সন্দীপ ঘোষকে জেরা করলেও এখনও ফসপ্রসূ কিছু এগোয়নি বলেই দাবি করছেন আমজনতা থেকে সেলেবরা। সেই আবহে অপর্ণা সেন জানালেন, আর জি কর হাসপাতালের অন্দরে আঁতাঁত ভাঙার জন্য সন্দীপ ঘোষকে জেরা করায় খুশি তিনি।
এর আগে ‘নাগরিক সমাজের ধিক্কার পদযাত্রা’তেও যোগ দিয়েছিলেন অপর্ণা। তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন, "এই সিভিক ভলান্টিয়াররা কারা? তাঁদের কেন ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে?… এই সিভিক ভলান্টিয়ারদের ঢোকা বন্ধ করা হোক। পুলিশের জবাবদিহি করার প্রয়োজন আছে। কেন পুলিশ মৃতাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখেও এটাকে একটা আত্মহত্যার ঘটনা বলে ঘোষণা করল? কেন পুলিশ তড়িঘড়ি এত ব্যস্ত হয়ে উঠল ময়নাতদন্ত করার জন্য? কেন এই হাসপাতালে যেখানে এমন ঘটনা ঘটেছে সেখানেই কেন ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করতে বলা হল? এই সব প্রশ্ন আমাদের সকলের মনে উঠেছে এবং এই সব প্রশ্নের জবাব আমরা চাই। এই জবাব পাওয়ার অধিকার আমাদের আছে। আমাদের দাবি যে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও এখানে তদন্ত হোক… ছাত্রছাত্রীদের বলছি- আমার কণ্ঠ তোমাদের কণ্ঠের সঙ্গে মেলালাম।"