অর্ণব আইচ: আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পর ঠিক কী ভূমিকা ছিল, তা নিয়ে রীতিমতো চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ফরেনসিক রিপোর্ট খতিয়ে সিবিআইয়ের দাবি, তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ(Sandip Ghosh) ও টালা থানার বহিষ্কৃত ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের ফোন থেকে বেশ কিছু ফোন কল খতিয়ে দেখা হয়েছে। তা থেকে মনে করা হচ্ছে, ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা হয়েছে। তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন, তাই সন্দীপ, অভিজিৎ, সঞ্জয়কে ফের নিজেদের হেফাজতে রাখার আবেদন জানাতে চলেছে সিবিআই। পাশাপাশি সন্দীপকে সংশোধনাগারে গিয়েও জেরা করবেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা।
শুক্রবার সিবিআইয়ের দাবি, "এটা পরিষ্কার, সন্দীপ আর অভিজিতের মোবাইল ফোন থেকে বেশ কিছু ফোন কল গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ঘটনা চেপে যাওয়ার চেষ্টা হয়েছিল।'' CFSL-এর রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পর CBI এমনই জানাচ্ছেন তাঁরা। ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাকে 'আত্মহত্যা' তত্ত্ব দিয়ে দেখানোর চেষ্টা হয়েছে কেন, তা তদন্তে দেখা হচ্ছে। এও দেখা হচ্ছে, ঘটনার পর তথ্য নষ্ট বা তথ্য নষ্টের চেষ্টা হয়েছে কিনা। তার তদন্ত পুরোদমে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের ভূমিকা কী ছিল, ষড়যন্ত্রে তার কী যোগ বা তাকে আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রেও কী তথ্য উঠে আসছে, তাও দেখা হচ্ছে।
এই ঘটনায় টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে সিবিআই গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁর সহকর্মীরা পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছিলেন কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। বলা হচ্ছিল, ঘটনায় নিজের ভূমিকা ঠিকমতো পালন করেছিলেন অভিজিৎ মণ্ডল। এখন প্রশ্ন উঠছে, সিবিআইয়ের দাবি অনুযায়ী, সন্দীপ-অভিজিৎ সকলে মিলে ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা করেছেন। তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টা হয়েছে। এসব প্রমাণ হলে কি কলকাতা পুলিশ আর অভিজিৎ মণ্ডলের পাশে থাকবে? সেই প্রশ্ন থাকছেই।
এদিকে, সন্দীপকে প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে জেরা করার আবেদন জানিয়েছিল সিবিআই। বিচারক তা মঞ্জুর করেছেন। সূত্রের খবর, শনিবার সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের। তাঁরা জেলে গিয়ে সন্দীপকে জেরা করতে পারেন বলে জানা গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত যা যা তথ্য মিলেছে, সেসব নিয়ে জেরা করতে চায় সিবিআই।