সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: আর জি কর মামলা অন্য রাজ্যে স্থানান্তরের প্রস্তাব দিয়ে শীর্ষ আদালতের কড়া ধমক খেলেন বর্ষীয়ান আইনজীবী মহেশ জেঠমালানি। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি চলাকালীন তাঁর প্রস্তাব শুনে পত্রপাঠ খারিজ করে দিলেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি জানান, মামলা অন্য কোথাও স্থানান্তর করা হচ্ছে না। এ ধরনের নির্দেশ মণিপুর সংক্রান্ত মামলায় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এক্ষেত্রে তার প্রয়োজন নেই।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে আর জি কর মামলা। যদিও এদিন আধঘণ্টার মধ্যে শুনানি শেষ হয়ে যায়। বিভিন্ন পক্ষের দেওয়া স্টেটাস রিপোর্ট খতিয়ে দেখেন প্রধান বিচারপতি। সিবিআইকে চার সপ্তাহ পর পরবর্তী স্ট্যাটাস রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেন। এর পরই বর্ষীয়ান আইনজীবী মহেশ জেঠমালানি প্রস্তাব দেন, ''এ রাজ্যের জনতার বিচারব্যবস্থার উপর ভরসা নেই। তাই এই মামলা অন্য রাজ্যে স্থানান্তর করা হোক।'' তা শুনেই রীতিমতো ধমক দেন প্রধান বিচারপতি। বলেন, ''এমন মন্তব্য আপনি করতে পারেন না। কাদের হয়ে আপনি একথা বলছেন? এমন কিছু নয়।'' এর পর পত্রপাঠ প্রস্তাব খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি। তাঁর মন্তব্য, ''এধরনের নির্দেশ আমরা দিয়েছিলাম মণিপুরের ক্ষেত্রে। কিন্তু আর কোনও মামলায় দেওয়া হয়নি। এই মামলাতেও স্থানান্তরের কিছু নেই।''
উল্লেখ্য, মণিপুরে লাগাতার সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনাগুলির তদন্ত করছে সিবিআই। উত্তর-পূর্বের রাজ্যটির অশান্ত পরিস্থিতি সঠিক বিচারের জন্য সেখানে শুনানিতে আপত্তি ছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। সুপ্রিম কোর্টে মামলা অন্যত্র স্থানান্তরের আবেদন জানানো হয়েছিল। গত আগস্টে সেই আবেদনের ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি শুনানির জন্য অসমকে বেছে নেন। তাঁর নির্দেশ ছিল, মণিপুর হিংসা সংক্রান্ত সিবিআইয়ের হাতে থাকা মামলাগুলির শুনানি হবে অসমে। গুয়াহাটি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে এই ভার দেওয়া হয়েছিল।
এদিন তারই আর জি কর মামলা স্থানান্তরের প্রস্তাব শুনে সেকথাই উল্লেখ করলেন ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তবে এধরনের নির্দেশ ব্যতিক্রমী বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন। আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুন মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হবে শিয়ালদহ আদালতে আগামী ১১ নভেম্বর। মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ হবে। প্রতিদিনই শুনানি হবে।