সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: আর জি কর হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের মতো ঘটনা (RG Kar Doctor Death) গোটা দেশে ভয় ধরিয়ে দিয়েছে। মঙ্গলবার এনিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুরুতেই এর ভয়াবহতার কথা উল্লেখ করল প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। তাঁদের পর্যবেক্ষণ, এটা শুধু কলকাতারই নয়, হায়দরাবাদ, আহমেদাবাদ, বিহার-সহ নানা জায়গায় ডাক্তাররা আক্রান্ত হচ্ছেন। চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে জাতীয় টাস্ক ফোর্স গঠনের নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। এই টাস্ক ফোর্স তিন সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দেবে শীর্ষ আদালতে। জাতীয় টাস্ক ফোর্সের সদস্য হিসেবে থাকবেন কেন্দ্রীয় সচিবরা।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)আর জি কর মামলার শুনানির কিছুক্ষণের মধ্যে জাতীয় টাস্ক ফোর্স (National Task Force) গঠনের নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি (CJI) ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্র। কীভাবে, কাদের নিয়ে তা তৈরি হবে, তাও ঠিক করে দিয়েছেন বিচারপতিরা। প্রধান বিচারপতির পরামর্শ -
জাতীয় টাস্ক ফোর্সের সদস্য হোক
- সার্জন (ভাইস অ্যাডমিরাল) আর সারিন
- ডাঃ ডি নাগেশ্বর রেড্ডি
- ডাঃ এম শ্রীনিবাস
- ডাঃ প্রতিমা মূর্তি
- ডাঃ গোবর্ধন দত্ত পুরী
- ডাঃ সৌমিত্র রাওয়াত
- ডাঃ পদ্ম শ্রীবাস্তব (নিউরোলজিস্ট, AIIMS)
- অধ্যাপক অনিতা সাক্সেনা (প্রধান কার্ডিওলজিস্ট, AIIMS)
- অধ্যাপক পল্লবী সাপ্রে (ডিন, গ্রান্ট মেডিক্যাল কলেজ, মুম্বই)
এছাড়া জাতীয় টাস্ক ফোর্সের তত্বাবধানে থাকুন কেন্দ্রীয় সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সচিব, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের (NMC)চেয়ারম্যান, ন্যাশনার বোর্ড অফ এক্সামিনারসের প্রেসিডেন্ট।
[আরও পড়ুন: RG Kar কাণ্ডের জের, চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় হাসপাতালগুলিকে একগুচ্ছ নির্দেশিকা স্বাস্থ্য মন্ত্রকের]
তাঁদের কাজ মূল কী? রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের স্বাস্থ্যবিভাগের সচিবদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য -
- কোথায় কত নিরাপত্তাবাহিনী
- হাসপাতালগুলিতে কটি বিশ্রামকক্ষ
- কী কী সুবিধা পাওয়া যায় রেস্ট রুমে
- গোটা হাসপাতাল চত্বর সিসিটিভির আওতায় কি না
- হাসপাতালের ভিতরে বা বাইরে পুলিশ ফাঁড়ি আছে কি না
এসব তথ্য নথিভুক্ত করে কেন্দ্রকে দিতে হবে। কেন্দ্রের তরফে তা হলফনামা আকারে পেশ করা হবে শীর্ষ আদালতে। এ বিষয়ে বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত কর্মীর নিরাপত্তা অগ্রাধিকার। হাসপাতালে হোক বা ও অন্য কোথাও, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য আলাদা বিশ্রামকক্ষ, শৌচালয় থাকা প্রাথমিক পরিষেবার মধ্য়ে পড়ে। তা কোনও হাসপাতালে না থাকা দুর্ভাগ্যজনক। এসব খতিয়ে দেখতে হবে ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্সকে। এছাড়া কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ নির্বিশেষে কোনও স্বাস্থ্য়কর্মীর যৌন হেনস্তা রুখতে হবে। এসব বাদ দিয়ে টাস্ক ফোর্সেরও যদি কিছু পরামর্শ থাকে, তাও জানাতে হবে শীর্ষ আদালতে।