শুভঙ্কর বসু: আরজি কর হাসপাতাল থেকে সদ্যোজাত নিখোঁজের ঘটনায় সিআইডির ডিআইজি ড. প্রণব কুমারের নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Kolkata high court)। আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট মুখবন্ধ খামে আদালতে জমা দিতে হবে বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ১২ জুন চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে সন্তানের জন্ম দেন বাবুন মণ্ডলের স্ত্রী। ঠিক তার পরেরদিনই সদ্যোজাতের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তবে তার মাকে চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালেই রেখে দেওয়া হয়। অভিযোগ, আরজি করে শিশুটিকে ভরতি নেওয়া হলেও করোনার দোহাই দিয়ে তারপর থেকে শিশুর সঙ্গে পরিবারের কাউকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। এভাবে বেশ কয়েকদিন কেটে যাওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পরিবারের তরফে চাপ দেওয়া হলে গত ২৫ জুন কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৫ জুন তাদের সন্তান মারা গিয়েছে। সেই সঙ্গে মর্গ থেকে একটি পচাগলা দেহ এনে তাদের দেখানো হয়। সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের তরফে মৃত শিশুর ডিএনএ (DNA) টেস্টের দাবি করা হয়। কিন্ত, তা মানতে চায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর ফলে বাধ্য হয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন বাবুন মণ্ডল।
[আরও পড়ুন: গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে অনড় থেকেও বিজেপির সঙ্গে সম্পর্কছেদ, মমতার দ্বারস্থ বিমল গুরুং ]
বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি উঠলে হাসপাতালের যাবতীয় নথি ও ডিএনএ রিপোর্ট তলব করে আদালত। কিন্তু, রাজ্যের তরফে যে রিপোর্ট জমা পড়ে তাতে সন্তুষ্ট না হতে পেরে দ্বিতীয়বারের জন্য ময়নাতদন্ত এবং ডিএনএ রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের যে রিপোর্ট জমা পড়ে তাতে দেখা যাচ্ছে, বাবা-মায়ের ডিএনএর সঙ্গে মৃত শিশুটির ডিএনএ রিপোর্টের মিল নেই।
এরপরই বুধবার এই মামলার শুনানি শেষে ডিআইজি সিআইডি(CID)’র নেতৃত্বে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। তদন্তকারী দলে থাকবেন এনআরএসের এক চিকিৎসক প্রফেসর ডা. সৌরভ চট্টোপাধ্যায়। আদালত জানিয়েছে, শিশুটির হদিশ পেতে সবরকম প্রচেষ্টা চালাবে তদন্তকারী দল। তদন্ত প্রক্রিয়া চালানোর জন্য তাদের সবরকম ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে। যে মৃত শিশুটির দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত হয়েছে সেটি আপাতত সংরক্ষিত থাকবে। তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা যাবে না। ১০ নভেম্বর মুখবন্ধ খামে তা আদালতে জমা দিতে হবে। সেই রিপোর্ট দেখে এ ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে হাই কোর্ট।