সুবীর দাস, কল্যাণী: আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের পাশে দাঁড়িয়ে ফের 'গণইস্তফা'। এবার 'গণইস্তফা'র পথে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালের ৭৭ জন চিকিৎসক। ইতিমধ্যে ওই হাসপাতালের রেজিস্ট্রারকে ই-মেল মারফৎ 'গণইস্তফা'র সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তাঁরা। চিকিৎসকরা জানান, সোমবার থেকে তাঁরা আর কাজ করবেন না। এর আগে এসএসকেএম, আর জি কর এবং সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বেশ কয়েকজন চিকিৎসক 'গণইস্তফা' দেন।
কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালের চিকিৎসকদের দাবি, অনশনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা একে একে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এই পরিস্থিতিতে মানসিক অবস্থা একেবারে ভালো নেই। তাই বর্তমান সময়ে চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। জোর করে কাজ করলে রোগীদের জীবন সংকট তৈরির আশঙ্কায় 'গণইস্তফা'র সিদ্ধান্ত বলেই ই-মেলে উল্লেখ করেছেন চিকিৎসকরা।
প্রসঙ্গত, নিরাপত্তা সংক্রান্ত ১০ দফা দাবিতে সরকারের উপর চাপ বাড়াতে আমরণ অনশনে জুনিয়র চিকিৎসকরা। উৎসবের মাঝে ধর্মতলার মঞ্চে এই মুহূর্তে ৮ জন জুনিয়র চিকিৎসক অনশন করছেন। চলতি সপ্তাহেই তাঁদের সমর্থনে আর জি কর, এসএসকেএম-সহ একাধিক হাসপাতালের চিকিৎসকরা গণইস্তফার পথে হেঁটেছেন। আগেই অবশ্য তাঁরা গণইস্তফার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরাও গণইস্তফা দিয়েছেন। তবে সকলেই জানিয়েছিলেন, সরকার তাঁদের ইস্তফা গ্রহণ না করা পর্যন্ত তাঁরা পরিষেবা চালিয়ে যাবেন। তাঁদের এই ইস্তফাপত্র সরকার যে গ্রহণ করছে না, তা শনিবারই সাফ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি স্পষ্টভাবে জানান, "সার্ভিস রুল অনুসারে, ইস্তফাপত্র ব্যক্তিগতভাবে দিতে হয়। বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে এধরনের গণইস্তফা জমা পড়েছে। অনেক জায়গায় তার প্রতি পাতায় স্বাক্ষরও নেই। এটা একটা সমবেত আবেদনপত্র মাত্র। নিয়োগকর্তার কাছে নিযুক্তকে ব্যক্তিগতভাবে ইস্তফাপত্র জমা দিতে হয়, ব্যক্তিগত কারণ জানিয়ে। সুতরাং, গণইস্তফার নামে যা জমা পড়েছে, তা গ্রাহ্য নয়। এনিয়ে সরকার বিভ্রান্তি দূর করতে চায়।” তার পরেও কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালের ৭৭ চিকিৎসকের 'গণইস্তফা'র সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া হবে কিনা, সেটাই এখন দেখার।