সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লডকডাউনে দেশবাসীর মনোবল বৃদ্ধিতে দিন দুয়েক আগেই নয়া দাওয়াইয়ের ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ৫ এপ্রিল অর্থাৎ আজ গোটা দেশবাসীর কাছ থেকে ৯ মিনিট চেয়েছেন। রাত ৯টায় ঠিক ৯ মিনিটের জন্য ঘরের সমস্ত আলো নিভিয়ে নিজের বাড়ির বারান্দায় কিংবা ছাদে এসে প্রদীপ, মোমবাতি অথবা টর্চের আলো জ্বালানোর নিদান দিয়েছেন। বাড়িতে এসব মজুদ না থাকলেও কুছ পরোয়া নেহি! মোবাইলের ফ্ল্যাশ জ্বালালেও হবে। মোদির এই মোমবাতি জ্বালানোর নিদানকেই কটাক্ষ করেছেন জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা ঋদ্ধি সেন।
“জাতি, ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি, লিঙ্গ নির্বিশেষে গোটা বিশ্বের মানবজাতি আজ এমন সংকটকালীন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কী অদ্ভূত না, এই ১৩৩ কোটির দেশে যেখানে প্রায় ১.৭ মিলিয়ন মানুষ খিদের জ্বালায় ভুগছে, তারা কীভাবে মোদির এই মোদির এই মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের বিলাসিতা দেখাবে? যাদের মাথা গোজার ঠাঁই পর্যন্ত নেই তারা কীভাবে নিজেদের ঘরের বাতি নেভাবে?” প্রশ্ন তুলেছেন অভিনেতা ঋদ্ধি সেন।
[আরও পড়ুন: ‘আমার বাড়িতে লাইট বন্ধ থাকবে না’, মোদির ‘মোমবাতি’ নিদানকে বয়কট অপর্ণার]
মোমবাতি-প্রদীপ জ্বালানোর নেপথ্যের কারণ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, “রবিবার রাতে এই কাজের মাধ্যমেই আমাদের প্রমাণ করতে হবে যে আমরা কেউ হেরে যাইনি। আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের বাড়িতে থেকেও কারোর থেকে বিচ্ছিন্ন নই, আমরা সবাই একত্রিত, কেউ একা নই।” মোদির এই বার্তার স্বপক্ষেই ঋদ্ধি পালটা যুক্তি দেখিয়েছেন। খানিক বাঁকা ভাবেই মোদিকে বিঁধলেন তিনি। অভিনেতার কথায়, “অবশেষে আমরা COVID-19 মোকাবিলার পথ খুঁজে পেয়েছি। মোমবাতি, মোবাইলের ফ্ল্যাশের আলোয় ৯ মিনিটেই সমস্ত ভাইরাস চলে যাবে। আর এই পন্থা অবলম্বন করেই গোটা দেশকে আমরা বুঝিয়ে দেব যে আমরা একা নই। প্রধানমন্ত্রীর মুখের কথাই হোক কিংবা করোনা রুখতে সরকারি কর্মসূচী কোনওটাই যদিও ‘আমরা যে এই একা নই’ তা বোঝানোর জন্য যথেষ্ট নয়! করোনার মতো এমন মহামারিও যথেষ্ট নয় আমাদের বোঝানোর জন্য যে আমরা একা নই। বিঘ্নিত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিও আমাদের বোঝানোর জন্য যথেষ্ট নয় যে আমরা একা নই!”
শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে কাশ্মীর ইস্যু এবং দিল্লিতে হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত হওয়ার প্রসঙ্গ টেনেও তিনি মোদিকে বিঁধেছেন। তাঁর কথায়, “কোথায় সে সময় তো মোমবাতি নিয়ে এমন সংহতির বার্তা দেওয়ার নিদের্শ দিতে দেখলাম না!” এরপর কিছুটা ব্যাঙ্গাত্মকভাবেই ঋদ্ধি বলেন, “কিন্তু তাতে কী, চলুন আমরা সবাই ৫ এপ্রিলের কর্মসূচী পালন করি! আমরা সবাই এই নির্দেশ পালন করি, কারণ হাজার হলেও ‘ব্রুটাস’ তো একজন সম্মানীয় ব্যক্তি!”
[আরও পড়ুন: মিউজিক ভিডিওয় অশ্লীলভাবে বঙ্গনারীদের দেখানোর অভিযোগ, FIR বাদশার বিরুদ্ধে]
The post ‘খিদের জ্বালা নিয়ে আশ্রয়হীনরা মোম জ্বালানোর বিলাসিতা দেখাবে?’, প্রশ্ন তুললেন ঋদ্ধি সেন appeared first on Sangbad Pratidin.