অর্ণব আইচ: হেলমেট না পরে বাইক চালানোর ক্ষেত্রে এবার আরও কড়া লালবাজার। হেলমেট না থাকলে তিন মাসের জন্য চালকের লাইসেন্স সাসপেন্ড করছে ট্রাফিক পুলিশ। তার সঙ্গে হাজার টাকা জরিমানা। এমনকী, এক বাইকে তিনজন চড়লে বা ট্রিপল রাইডিংয়ের ক্ষেত্রেও হচ্ছে এই একই শাস্তি। পুলিশের মতে, এই কড়া শাস্তির দাওয়াই দেওয়া হলে এই ধরনের ট্রাফিক আইন ভাঙার প্রবণতা অনেকটাই কমবে।
পুলিশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই ট্রাফিক আইন (Traiffic Rules) ভাঙলে বর্ধিত জরিমানা দিতে হচ্ছে গাড়ি বা বাইক চালকদের। প্রত্যেকদিন কলকাতা পুলিশের আওতায় যতগুলি ট্রাফিক আইন ভাঙার মামলা হয়, তার মধ্যে একটি অংশ জুড়ে রয়েছে হেলমেট না পরে বাইক চালানো ও এক বাইকে দুইয়ের বেশি বা তিনজন যাতায়াত করা। বৃহস্পতিবারও কলকাতায় মোট ১২২৪টি ট্রাফিক মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ‘ট্রিপল রাইডিং’য়ের মামলা হয়েছে ১৬৩ ও হেলমেট না পরার অভিযোগে ধরা পড়েছে ৩১৮ জন বাইক চালক। জরিমানা বৃদ্ধি হওয়ার পরও ট্রাফিক আইন ভেঙে বাইক ও স্কুটি চালানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তাই লালবাজারের নতুন নির্দেশ অনুযায়ী ‘ট্রিপল রাইডিং’য়ের (Triple Riding) ক্ষেত্রে এবার থেকে মোটর ভেহিক্যালস আইনের ১২৮/১৯৪(সি) ও হেলমেট না পরে বাইক চালানোর ক্ষেত্রে ওই আইনেরই ১২৯/১৯৪(ডি) ধারা লাগু করা হচ্ছে। এই দু’টি আইনেই হাজার টাকা করে জরিমানা ও তার সঙ্গে তিন মাসের জন্য বাইক চালকের লাইসেন্স সাসপেন্ড করার কথা বলা হয়েছে। লালবাজারের (Lalbazar) এক আধিকারিক জানান, এবার থেকে কেউ হেলমেট না পরলে বা ‘ট্রিপল রাইডিং’ করলে এই ধারা অনুযায়ীই পাঁচশো টাকার বদলে হাজার টাকা জরিমানা ও লাইসেন্স সাসপেন্ড করা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: খরচে লাগাম টেনে দ্রুত প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে, জেলাশাসকদের কড়া বার্তা নবান্নর]
এই ব্যাপারে কলকাতার প্রত্যেকটি ট্রাফিক গার্ড ও অ্যাসিসট্যান্ট কমিশনারকে নির্দেশিকাও পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও শুক্রবার এই ব্যাপারে ট্রাফিক পুলিশের কর্তারা বৈঠকও করেন। সূত্রের খবর, এবার থেকে ‘ট্রিপল রাইডিং’ ও হেলমেট না পরার ক্ষেত্রে হাজার টাকা জরিমানা চাওয়া হচ্ছে। স্পট ফাইন দিলেও সেই চালকের কাছ থেকে লাইসেন্স নিয়ে তা পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে ট্রাফিক গার্ডগুলিতে। সেখান থেকে ওই লাইসেন্স পাঠানো হচ্ছে ট্রাফিক বিভাগের অ্যাসিসট্যান্ট কমিশনারদের। তাঁরা আইন মেনে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করছেন লাইসেন্স। তবে এখনও অনেক বাইক চালক এই নতুন নির্দেশিকার বিষয়টি জানেন না। তাই এই ব্যাপারে সোশ্যাল মিডিয়ায় জোর প্রচার করা হবে। রাস্তায় মাইকিং করেও ট্রাফিক গার্ড ও থানাগুলি প্রচার করবে। এছাড়াও এই বিষয়টি নিয়ে যাতে রাস্তায় বাইক চালকদের সঙ্গে থানা বা ট্রাফিক গার্ডের অশান্তি না হয়, সেই ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
পুরনো জরিমানার ক্ষেত্রে বাইক চালকদের এই দুই অভিযোগে একশো টাকা করে জরিমানা দিতে হত। গত ২৬ জানুয়ারি থেকে নতুন নির্দেশ অনুযায়ী ওই দু’টি অভিযোগে বাইক চালকদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে জরিমানা নিতে শুরু করে। জরিমানা বৃদ্ধির পর প্রথমদিকে ট্রাফিক আইন ভাঙার প্রবণতা কিছুটা কমলেও ধীরে ধীরে তা বাড়তে থাকে। যেখানে গত সোমবার ৯৮০টি ট্রাফিক মামলা হয়েছিল, সেখানে বৃহস্পতিবার তা বেড়ে হয় ১২২৪টি। ট্রাফিক পুলিশের এক কর্তা জানান, নতুন বছরের প্রথম থেকে কলকাতায় বাইক ও স্কুটার দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েছে। নতুন বছরের প্রথম মাসেই শহরে ৩১টি বাইক ও স্কুটি দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।