সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঋষি-নীতুর প্রেমকাহিনি হার মানাবে সিনেমাকেও। হ্যাঁ, ঠিক এমনটাই বলতেন কাপুর পরিবারের ঘনিষ্ঠরা। যে পাঞ্জাবী পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করতে গিয়ে তাঁর মা-বাবাকে রাজি করাতে বেগ পেতে হয়েছিল ঋষি কাপুরকে, সেই অভিনেতাকে নিয়েই নাকি একসময়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন স্ত্রী নীতু কাপুর। শুধু তাই নয়, পুলিশের দ্বারস্থও নাকি হয়েছেন। ছেলে রণবীর ও মেয়ে রিধিমাকে নিয়ে বাড়ি ছেড়েও চলে গিয়েছিলেন নীতু। কারণ? ঋষি কাপুরের মদ্যপানের অভ্যেসকে মোটেই বরদাস্ত করতেন না! কিন্তু ঋষি তো ভারী আমুদে মানুষ। লোকজন নিয়ে হইচই করতে ভালবাসেন। তবে সে যাই হোক, চরম দুর্দিন এলেও কিন্তু ঋষির হাত ছেড়ে চলে যাননি নীতু। দাম্পত্যে মাধুর্য বাঁচিয়ে রাখার কথা বলতেন এই তারকা দম্পতি।
সাতের দশকের মাঝামাঝি। ‘জহেরিলা ইনসান’ ছবির সেটে আলাপ ঋষি কাপুর এবং নীতু সিংয়ের। প্রথম দেখাতেই কিন্তু প্রেমে পড়েননি তাঁরা। বরং, প্রথম দিকে নীতুর সঙ্গে ভারী মজা করতেন ঋষি। নানারকম ঠাট্টাও করতেন অভিনেত্রীকে নিয়ে। ওদিকে ষোড়শী অভিনেত্রী ঋষিকে দেখলে কেমন যেন সিঁটিয়েই থাকতেন গোড়ার দিকে। তবে একবার কাপুর নন্দন প্যারিস উড়ে গেলেন ‘বারুদ’ ছবির আউটডোরে শুটিং করতে। মিস করা শুরু করেন নীতুকে। বুঝতে পারেন যে হাসি-ঠাট্টা, বন্ধুত্বের মাঝেই শুধু তাঁদের সম্পর্ক আর আটকে নেই। এবার নীতুকে বলা দরকার। যেমন ভাবা তেমন কাজ! ঋষি টেলিগ্রাম করে ফেললেন নীতুকে- ‘ইয়ে শিখনী বড়ি ইয়াদ আতি হ্যায়…।’ ব্যস প্রেমের শুরু সেখান থেকেই। ‘ববি’র পর থেকে বলিউডের চার্মিং প্রিন্স ঋষি অনেক নায়িকার মনেই হিল্লোল তুলেছিলেন। সেসব কথা নীতুকে শেয়ারও করতেন ঋষি। তবে শেষ অবধি নীতুকেই জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেন কাপুর পরিবারের আদুরে চিন্টু। ধার করা আংটি দিয়ে নিজেরা বাগদানও সেরেছিলেন।
[আরও পড়ুন: ঠিক যেন সিনেমা! ইরফান-ঋষির ‘ডি-ডে’ ছবির দৃশ্যই বর্তমানে ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়]
দীর্ঘ ৫ বছর প্রেম করার পর ১৯৮০ সালের জানুয়ারিতে বিয়ে করেন তাঁরা। রণধীরের স্ত্রী ববিতার পর কাপুর পরিবারে বউ হয়ে আসেন আরেক অভিনেত্রী। বিয়ের পরই অভিনয় কেরিয়ারকে বিদায় জানান নীতু। নিজের ইচ্ছেতেই। গুছিয়ে সংসার পাতবেন বলে। তবে নীতু কিন্তু কোনওদিন অভিনয় ছাড়ার নেপথ্যে কাপুর পরিবারের রীতিকে দোষারোপ করেননি। একবার নাকি তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে রাজ কাপুর, শশী কাপুর, রণধীর-ঋষিকে একসঙ্গে দেখে বিয়ের প্রথম প্রথম তিনি কী ভাবতেন? শিখ পরিবারের মেয়ের স্পষ্ট উত্তর ছিল- ‘আমিও কিন্তু ফেলনা নই!’
ঋষি-নীতুর বিয়ে অনেক কিছুর সাক্ষী। সেই বিয়েতেই বিচ্ছেদের পর ফের মুখোমুখি হয়েছিলেন ঋষির বাবা রাজ কাপুর এবং নার্গিস। নীতুকে সাজানোর দায়িত্ব পড়েছিল অভিনেত্রী তথা নীতুর প্রিয় বান্ধবী রেখার উপর। নীতুর বিয়েতে রেখার সাজ অনেকেরই মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছিল! আটের দশকের মাঝামাঝি রিধিমা হল। তারপর রণবীর। ঋষি কাপুর তখন কেরিয়ারের মধ্যগগনে। ছেলেমানুষ, আমুদে এভাবেই শুটিংয়ের ফাঁকে পরিবারকেও যেমন সময় দিতেন, আবার পার্টিতে হুইস্কি-শ্যাম্পেনের ফোয়ারাও ছোটাতেন। এসব নিয়ে হাজার ঝগড়া হলেও বন্ধু, চিরপ্রেমিক ঋষিকে ছেড়ে যাননি নীতু। জীবনের শেষ দিন অবধি পাশে থেকেছেন। খেয়াল রেখেছেন।
[আরও পড়ুন: পঞ্চভূতে বিলীন ঋষি কাপুর, মুম্বইয়ের চন্দনওয়ারি শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন করলেন ছেলে রণবীর]
The post ঋষি-নীতুর প্রেমকাহিনি সিনেমার মতোই! হাজার কলহ সত্ত্বেও সম্পর্কে মাধুর্য বাঁচিয়ে রেখেছিলেন appeared first on Sangbad Pratidin.