মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: বাড়িতে ঢুকে গৃহকর্তার পায়ে গুলি করে ডাকাতি। লুটপাটের পর রান্নাঘরে পাস্তা, ডিমভাজা করে খেল ডাকাতরা। রক্তাক্ত অবস্থায় ডাকাতদের ভয়ে ঘন্টাখানেক ঘরের মধ্যে পড়ে রইলেন গৃহকর্তা। পরে ডাকাতদল চলে গেলে জখম ওই ব্যক্তিকে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করে। রবিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে হাওড়ার (Howrah) শ্যামপুরের বানেশ্বরপুরের গুড়েপোল এলাকায়।
ইটের গাঁথুনি ও টালির চালের বাড়ি সুকুমার গায়েনের। মাঠের মাঝখানে তাঁর বাড়ি। তাঁর বাড়ি থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে অন্যান্য প্রতিবেশীদের বাড়ি। রবিবার রাতে সুকুমার, তাঁর স্ত্রী, বছর দশেকের মেয়ে ও বছর চারেকের ছেলে বাড়িতে ছিলেন। অভিযোগ, রাত দু’টো নাগাদ তাঁরা ঘরের দরজায় কয়েকজনের লাথির আওয়াজ পান। বাইরে থেকে তাঁরা হুমকি দিতে থাকে। ভয়ে দরজা খুলে দেন গৃহকর্তা। আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দু’জন মুখে কাপড় ঢাকা আততায়ী হুড়মুড়িয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকে যায়। বাড়িতে যা আছে তা দিয়ে দিতে বলে। আলমারির চাবিও দেওয়ার দাবি জানায়। তবে গৃহকর্তা তা দিতে চাননি। তাই আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয় আততায়ারী। ভয়ে তারা সব কিছু দিয়ে দেয়। কিন্তু সেখানে কিছুই পায়নি দুষ্কৃতীরা।
[আরও পড়ুন: বগটুই কাণ্ডের রেশ বিধানসভায়, তৃণমূল-বিজেপির হাতাহাতিতে নাক ফাটল বিধায়কের, ভাঙল চশমাও]
এরপর দুষ্কৃতীরা এক রাউন্ড গুলি চালায়। সুকুমারের চার বছরের ছেলের গলায় থাকা একটি ২ ভরি রুপোর হার ছিনিয়ে নেয়। সুকুমারের বাড়ির পাশেই বাস তাঁর শাশুড়ি কল্পনা হান্দোলের। সুকুমারকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর বাড়িতেও যায় ডাকাতেরা। দরজা খুলে ভিতরে ঢোকে। তাঁকেও আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। একটি বাক্সের চাবি দিতে বলে। সুকুমার বাধা দিলে তাঁর বাঁ পায়ে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পায়ের পাশে গুলি লাগে। রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটে। ভয়ে ওই মহিলাও চাবি দিয়ে দেন। সোনার গয়না পায় ডাকাতেরা। আরও একবার গুলি চালায় ডাকাতেরা। এরপর ওই বাড়ির সদস্যদের একটি ঘরে আটকেও দেয় দুষ্কৃতীরা।
এরপর ডাকাতদল সুকুমারদের রান্নাঘরে ঢোকে। ডিম ভাজে এবং পাস্তা রান্না করে। খাওয়াদাওয়াও করে তারা। পরে কোনওক্রমে সুকুমারের শাশুড়ি কল্পনা ঘরের শিকল খুলে বেরন। সুকুমারদের ঘরের দরজার ছিটকিনি খুলে দেন। সুকুমারকে প্রথমে কমলপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে শ্যামপুর থানার পুলিশ। সুকুমারদের বাড়ির কাছ থেকে একটি কার্তুজ ও একটি কার্তুজের খোল উদ্ধার করা হয়েছে।