সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিরাট কোহলি (Virat Kohli) আর রোহিত শর্মা- একই দলের দুই স্তম্ভ হলেও তাঁদের নিয়ে আলোচনার অন্ত নেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁরা একে অপরকে ফলো করেন কিনা, মাঠের বাইরে কেমন সম্পর্ক-তা নিয়ে পাতার পর পাতা বিশ্লেষণ করে ফেলেন আমজনতা। এমনকি খুনের ঘটনার সঙ্গেও জড়িয়ে যায়, ‘রোহিত ভক্তকে খুন করেছে বিরাট ভক্ত’। কিন্তু রবিবার রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে হারিয়ে রোহিতের (Rohit Sharma) মুখে বিরাটের দরাজ প্রশংসা। ভারত অধিনায়ক সাফ জানিয়ে দিলেন, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভারতীয় হিসাবে সর্বকালের সেরা ইনিংস খেলেছেন বিরাট।
পরপর উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া ভারতীয় দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলে জয়ের সরণিতে পৌঁছে দিয়েছেন কিং কোহলি। মাত্র ৫৩ বলে ৮২ রানের ইনিংস খেলে সকলকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, ফুরিয়ে যাননি তিনি। চোখের সামনে এহেন অবিশ্বাস্য ইনিংস দেখে ঘোর কাটেনি রোহিতেরও। ম্যাচের পর সাংবাদিক সম্মেলনে এসে তিনি বললেন, “জীবনের সেরা ইনিংসটা খেলেছে বিরাট। যে পরিস্থিতিতে আমাদের দল দাঁড়িয়েছিল, সেখান থেকে বিচার করতে গেলে আমি বলব, ভারতীয় হিসাবে টি-টোয়েন্টি (India vs Pakistan) ক্রিকেটের সেরা ইনিংস আজ খেলেছে বিরাট। কারণ ১৩ ওভারের শেষেও আমরা অনেক অনেক পিছিয়ে ছিলাম।”
[আরও পড়ুন: রুদ্ধশ্বাস শেষ ওভার থেকে বিরাটকে কোলে নিয়ে রোহিতের নাচ, ভারত-পাক ম্যাচের সেরা ৫ মুহূর্ত]
রান সংগ্রাহকের তালিকায় বরাবর টক্কর থাকে বিরাট-রোহিতের মধ্যে। রবিবারের ম্যাচে রোহিতকে পিছনে ফেলে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের মালিক হলেন কোহলি। তাতেও এতটুকু বিষণ্ণ শোনায়ানি রোহিতের গলার স্বর। মাঠের মধ্যে বিরাটকে কোলে নিয়ে নাচ করেছিলেন রোহিত। সেই মেজাজ ধরে রেখেই সাংবাদিক বৈঠকে সতীর্থের ভূয়সী প্রশংসা করলেন ভারত অধিনায়ক। জানিয়ে দিলেন, “মাঝের কিছু সময় মোটেই ব্যর্থ হননি বিরাট। কিন্তু ওর কাছ থেকে সকলে এত বেশি প্রত্যাশা করে, যে ভাল ইনিংস গুলোকেও ব্যর্থ হিসাবে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। বিশ্বকাপে আসার আগে ধীরে ধীরে ফের নিজের জাত চেনাতে শুরু করে বিরাট। সকলেই জানি, রান তাড়া করতে বিরাট কতটা দক্ষ। হার্দিকের সঙ্গে ওর পার্টনারশিপটাই ম্যাচের রং বদলে দিল।”
একই সুর পাক অধিনায়ক বাবর আজমের (Babar Azam) গলাতেও। বরাবরই বিরাটকে শ্রদ্ধা করেন পাক ব্যাটার। ম্যাচে বিরাট বিক্রম দেখার পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানালেন, “ভারত-পাক ম্যাচে অবশ্যই খুব চাপ থাকে। কিন্তু বিরাট যেভাবে সমস্ত প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে ব্যাটিং করল, তাতেই ম্যাচ একেবারে ঘুরে গেল। এইভাবে ম্যাচ জেতাতে পারলে, প্রত্যেক ক্রিকেটারের আত্মবিশ্বাস অবশ্যই বেড়ে যায়।” ঠিক এক বছর আগেই একই প্রেক্ষাপটে ম্যাচ খেলতে নেমেছিল ভারত আর পাকিস্তান। সেদিন মাথা নীচু করে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল বিরাটকে। কিন্তু এক বছর পরে শুধু যে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন তা নয়, বরং তাঁকে কুর্নিশ জানালো সতীর্থ থেকে বিপক্ষ সকলেই।