দেবব্রত মণ্ডল, কুলতলি: ছাগলের লোভেই কুপোকাত কুলতলির (Kultali) ত্রাস। বৃহস্পতিবার ভোররাতে বনদপ্তরের পাতা জালে ধরা দিল রয়্যাল বেঙ্গলটি (Royal Bengal Tiger)। তার পর থেকে তার কান ফাটানো গর্জনে এলাকার মানুষের প্রাণপাখি খাঁচা ছাড়া হওয়ার জোগার। বহু চেষ্টা করেও অবশ্য জাল থেকে বেরতে পারেনি সে। বনদপ্তরের তৎপরতায় আতঙ্কে কাটিয়ে স্বস্তিতে কুলতলি ব্লকের বাসিন্দারা।
কুলতলি থানার দেবীপুর দেউলবাড়ি এলাকা বুধবার সকালে গ্রামবাসীরা বাঘের টাটকা পায়ের ছাপ দেখতে পান। মুহূর্তের মধ্যেই পেটকুলচাঁদ-সহ পাশের সাবুর আলিকাটা এলাকা জুড়ে ব্যাপক শোরগোল ছড়িয়ে পড়ে বাসিন্দাদের মধ্যে। সেই খবর পাওয়া মাত্রই বনদপ্তরের রায়দিঘি রেঞ্জের অন্তর্গত কুলতলি বিট অফিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। সেই ছাপ পরীক্ষা করে বাঘের বলে চিহ্নিত করেন। এরপর ঘটনাস্থলে চলে যান রায়দিঘির রেঞ্জার-সহ অন্যান্য বন কর্মীরা। বাঘের পায়ের ছাপ ঘিরে এলাকায় যাতে কোনওরকম আইনশৃঙ্খলার অবনতি না হয়, সেই কারণে ঘটনাস্থলে যায় কুলতলি থানার পুলিশও।
[আরও পড়ুন: সিগন্যাল ছাড়াই রেললাইনে কাজ! ট্রলির সঙ্গে সংঘর্ষ দুরন্ত গতিতে আসা বর্ধমান লোকালের]
এদিকে পায়ের ছাপ ধরে এগোতেই তার দেখা মেলে। কোনওরকম ঝুঁকি নেয়নি বন কর্মকর্তারা। ঘটনাস্থলে পৌঁছন বনদপ্তরের এডিএফও অনুরাগ চৌধুরীরও। বাঘটি যেখানে ঘাপটি মেরেছিল এডিএফও র নির্দেশ মেনে ঘিরে ফেলা হয় সেই এলাকাটি।
নাইলনের জালের সঙ্গে স্টিলের জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় ওই এলাকা। সন্ধেয় সেখানে পাতা হয় একটি লোহার খাঁচা। তার মধ্যে ছাগলের টোপও দেওয়া হয়। আর তাতেই বাজিমাত। ভোর ৩ টা নাগাদ সেই ছাগলের লোভেই বনদপ্তরের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে বসে ধূর্ত বাঘ। তারপর কান ফাটা হুঙ্কারের আওয়াজ আসতেই বনকর্মীরা নিশ্চিত হন যে বাঘ বন্দী খেলা শেষ হয়েছে। এরপর দ্রুত সেই খাঁচা-সহ বাঘটিকে বনদপ্তরের বোটে চাপিয়ে সুন্দরবনের বনদপ্তরের বনি ক্যাম্পের দিকে রওনা দেন বনকর্মীরা।
[আরও পড়ুন: বঙ্গে ফের লাফিয়ে বাড়ল করোনা সংক্রমণ, কলকাতা-সহ ২ জেলায় একদিনে আক্রান্ত শতাধিক]
মনে করা হচ্ছে, আজমলমারি ১ নম্বর জঙ্গল থেকে বাঘটি কোনওভাবে বেরিয়ে চলে এসেছিল পেটকুলচাঁদ ও সাবুর আলিকাটা এলাকার দিকে। এদিকে বৃহস্পতিবার ধরা পড়া ওই বাঘের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন পশু চিকিৎসকরা। তারপর বনদপ্তরের শীর্ষকর্তাদের নির্দেশ মেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যে রয়্যাল বেঙ্গলটিকে দূরের জঙ্গলে তার নিজের পরিবেশে ফেরানো হবে কিনা। বয়স আনুমানিক ৪-৫ বছর হতে পারে।