দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: মানুষের পাতা জালে নয়, নিজেই অবশেষে জঙ্গলে ফিরল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার (Royal Bengal Tiger)। সোমবার ভোরের দিকে সুন্দরবনের (Sunderban) গারাল নদী পেরিয়ে পঞ্চমুখানি দিয়ে পার হয়ে গভীর জঙ্গলে ঢুকে যায় বাঘটি। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন গ্রামবাসীরা। বনদপ্তর সূত্রে খবর, রবিবার রাতভর দপ্তরের কর্মীরা গ্রামের দিকে রাতপাহারা ব্যবস্থা করেন। এলাকা নেট দিয়ে ঘিরে রাখা হয়। লোকালয় থেকে বাঘকে তাড়াতে এত সব ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তবে ভোরের দিকে সে নিজেই চলে যায় ডেরায়। কর্দমাক্ত জমিতে বাঘের পায়ের ছাপ দেখে এ বিষয়ে নিশ্চিত হন স্থানীয় বাসিন্দা ও বনকর্মীরা।
শীতের মরশুমে কুলতলির পর কুমিরমারি, গোসাবায় (Gosaba)দক্ষিণরায়কে নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল গত সপ্তাহ থেকে। বৃহস্পতিবার রাতে বাঘের আতঙ্কে কাঁটা গোসাবা। স্থানীয় সূত্রে খবর, সাতজেলিয়ার চরগেরি এলাকা সংলগ্ন জঙ্গলে ঢুকে পড়ে এক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। দাবি, ম্যানগ্রোভের জঙ্গলেই নাকি লুকিয়ে ছিল দক্ষিণরায়। পটকা ফাটিয়ে নিজেরাই বাঘ তাড়ানোর চেষ্টা করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পাশাপাশি খবর দেওয়া হয় বনদপ্তরে। তারপর কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও অধরা ছিল ‘ডোরাকাটা’। কুমিরমারিতেও একটি বাঘ দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল।
[আরও পড়ুন: দুই বাঘের প্রেম প্রস্তাবে ‘না’, ভালবাসার অত্যাচারে জঙ্গল ত্যাগ কুমিরমারির বাঘিনীর!]
তবে শনিবার রাতের দিকে কুমিরমারির বাঘকে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুঁড়ে কাবু করে ফেলা সম্ভব হলেও গোসাবার সাতজেলিয়ায় ডোরাকাটাকে নিয়ে আতঙ্ক জারি ছিল। ছাগল কিংবা বাঘিনীর স্বরের টোপ দিয়েও তাকে বশ করা যাচ্ছিল না। রবিবার সকালে চরগেরি গ্রামের আশপাশে দু’টি ছাগলের টোপ পাতা হয়েছিল। ছাগলের লোভে বাঘ এসে জালে পড়ে কিনা, সেই অপেক্ষাতেই ছিলেন সকলে। যাতে সে কোনওভাবেই লোকালয়ের দিকে চলে না যেতে পারে, তাই সবরকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে রাতভর পটকা ফাটানো হয়। পরে অবশেষে ভোরের দিকে গারাল নদী টপকে পঞ্চমুখানি ২ নং জঙ্গলের দিকে চলে যায়। সকালে নদীর চরে তার পায়ের ছাপ দেখে বোঝা যায়, নিজেই ডেরায় ফিরেছে।