সুব্রত বিশ্বাস: শুক্রবার চলন্ত অমৃতসর মেলে চড়তে গিয়ে বিপজ্জনকভাবে পড়ে যান এক ব্যক্তি। হাওড়া স্টেশনে কর্তব্যরত আরপিএফ ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁকে ধরে ফেলেন। ফলে প্ল্যাটফর্ম ও ট্রেনের ফাঁকে পড়তে পড়তে বেঁচে যান ওই যাত্রী। এ বিষয়ে সতর্ক করেছে রেল। গত এক বছরে শুধু হাওড়া, শিয়ালদহ ডিভিশনেই প্ল্যাটফর্ম ও ট্রেনের ফাঁকে গলতে গলতে বেঁচে গিয়েছেন ৬১ জন যাত্রী। এই সকল যাত্রীদের ত্রাতা হয়ে প্রত্যেকবার এগিয়ে এসেছেন আরপিএফ জওয়ানরা। এমনই তথ্য মিলেছে পূর্ব রেলের বার্ষিক পরিসংখ্যানে।
শনিবার পূর্ব রেলের আইজি পরমশিব ‘সংবাদ প্রতিদিন’কে বার্ষিক পরিসংখ্যান দিয়ে জানান, শুধু রেলের সম্পত্তি রক্ষা নয়, যাত্রী সুরক্ষার সব দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে আরপিএফকে। সুরক্ষার নানা বিষয়ে টিম তৈরি করে যাত্রী নিরাপত্তায় নজর দিচ্ছে আরপিএফ। ‘জীবন সুরক্ষা’ মিশনে যাত্রীদের বাঁচানোর পাশাপাশি চলন্ত ট্রেন ও স্টেশনে গত এক বছরে ১৮ জন মহিলাকে সন্তান প্রসবে সহযোগিতা করেছে পূর্ব রেলের আরপিএফ। ওই বছরে ৭৭৯ জন শিশুকে ঘরে ফিরিয়েছে আরপিএফ। এক বছরে যাত্রীদের সামগ্রী চুরি করে গ্রেপ্তার হয়েছে ৫০৪ জন। ৪৯ লক্ষ টাকার চুরির সামগ্রী উদ্ধার করেছে আরপিএফ।
[আরও পড়ুন: মেরে মাথা ফাটাল ‘শাহজাহান বাহিনী’! সেই আক্রান্ত ইডির বিরুদ্ধেই FIR পুলিশের]
গত বছর লাইন পারাপার, মহিলা ও বিশেষভাবে সক্ষমদের কামরায় চড়া, চেন পুলিং, ট্রেনে মদ গাঁজা সেবন-সহ নানা অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৭১,৩৪১ জনকে। জরিমানা বাবদ আয় হয়েছে আড়াই কোটি। ২০২৩ সালে ট্রেনের টাওয়াল চুরি করে ধৃত ৯৬৪৪ জন। সংরক্ষিত কামরায় সিট দখল করে ধৃত ৬৩৯০ জন। হকার ধৃত ৩০৬৪ জন। রেলে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছে ২৪ জন।
জানা গিয়েছে, সারা বছরে পূর্ব রেলের বিভিন্ন জায়গা থেকে ২৬১৪ টি বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দেয় আরপিএফ। হাওড়া, শিয়ালদহ স্টেশনে সোনা পাচারে ধৃত ১৫ জন। তাদের থেকে আটক হয়েছে ৭ কোটি ১৪ লক্ষের সবার অলংকার। রুপো পাচারে ধৃত ১৮ জন। ১ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকার রুপো উদ্ধার করা হয়েছে। ৪ কোটি ৩২ লক্ষ নগদ টাকাও উদ্ধার হয়েছে বলে বাৎসরিক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে। ৩৭৮ কিলো গাঁজা ও ৭৪ লক্ষ টাকার কফ সিরাপও আটক করে আরপিএফ। হাওড়া, শিয়ালদহ ও আসানসোল ডিভিশনের এই পরিসংখ্যান রেলবোর্ডে পাঠাচ্ছে পূর্ব রেলের আরপিএফ।