সুকুমার সরকার, ঢাকা: ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের আবহে বিতর্কিত মন্তব্যের জের। বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে জবাব তলব করল রুষ্ট রাশিয়া (Russia)।
[আরও পড়ুন: নিহত কান্দাহার বিমান অপহরণ কাণ্ডের মূলচক্রী জাহুর মিস্ত্রি!]
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানী ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক দলগুলোকে ইউক্রেনের আলোচিত প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মতো ‘মাঠে থাকার’ আহ্বান জানান নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হাজী হাবিবুল আউয়াল। এক সংবাদ সম্মেলনে রাজনৈতিক দলগুলোকে মাঠ না ছাড়ার পরামর্শ দিতে গিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে সিইসি সেদিন বলেন, “মাঠ ছেড়ে চলে এলে হবে না। মাঠে থাকবেন। কষ্ট হবে। ইউক্রেনের জেলেনস্কি পালিয়ে যেতে পারতেন, কিন্তু তিনি পালাননি। তিনি রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিরোধ যুদ্ধ করে যাচ্ছেন। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সরে এলে হবে না।” তাঁর এহেন মন্তব্যে ঢাকা ও মস্কোর মধ্যে কিছুটা চাপানউতোর তৈরি হয়েছে। তারপরই এই বক্তব্যের ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মানটিটস্কি।
ঢাকার বিদেশমন্ত্রক সূত্রে খবর, কোনও আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে জবাব তলব করেনি রাশিয়া। মন্ত্রকের একজন আধিকারিকের সঙ্গে অন্য একটি বিষয়ে মৌখিক আলাপে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত মানটিটস্কি সিইসির ওই বক্তব্যের ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছেন। রাজনৈতিক দলগুলোকে ‘জেলেনস্কির মতো মাঠে থাকার’ আহ্বান জানানোর মাধ্যমে সিইসি রাশিয়া বিরোধী অবস্থান ব্যক্ত করছেন বলে আলাপে মত দেন রুশ রাষ্ট্রদূত। এ সময় রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়, এই বক্তব্য সিইসির একান্ত ব্যক্তিগত, বাংলাদেশের অবস্থান নয়। বাংলাদেশ শুরু থেকেই ইউক্রেন সংকটে নীতিগতভাবে নিরপেক্ষ অবস্থানে রয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ওই বক্তব্য দেশে ব্যাপক আলোচিত হয়।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় ইউক্রেন ইস্যুতে প্রস্তাবের পক্ষে বাংলাদেশ ভোট দেয়নি, আবার বিরুদ্ধেও ভোট দেয়নি। বাংলাদেশ ভোটদানে ‘অ্যাবস্টেইন’ বা বিরত থেকেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, নীতি ও কৌশলগত কারণে বাংলাদেশের এ অবস্থানের বিষয়েও রাশিয়া অবগত। একই সঙ্গে এই ভোট নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন মহল যে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে সে বিষয়ে তারা দৃষ্টি রাখছে।