নন্দন দত্ত, সিউড়ি: তারাপীঠের সঙ্গে রাশিয়া, থাইল্যান্ড-সহ বর্হিবিশ্বের যোগ ঘটালেন তারা মা। কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠ মহাশ্মশানে তন্ত্রসাধনা করতে রাশিয়া, থাইল্যান্ড থেকে হাজির হলেন সাধক-সাধিকারা। ইতিমধ্যে দিল্লি, অসম থেকেও মহাশ্মশানে তান্ত্রিকরা হাজির হয়েছেন। গত চার বছর ধরে করোনার জেরে বাইরে থেকে সাধন দিনে মহাক্ষেত্রে তন্ত্রসাধনায় লোকসমাগম কমে এসেছিল। এবছর যেন সুদে আসলে তা পূরণ করে দিচ্ছে বিদেশিরা। এখন থেকেই জমে উঠছে তারাক্ষেত্র।
সামনের বৃহস্পতিবার ভাদ্র মাসের অমাবস্যা। এই দিনটিই কৌশিকী অমাবস্যা হিসেবে খ্যাত। মহিষাসুর বধের পর শুম্ভ নিশুম্ভর অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে নিজের কোষ থেকে আলোকজ্যোতি বিচ্ছুরণ করে দেবীমূর্তির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মহামায়া। নিজের কোষ থেকে দেবীর জন্ম হয়েছিল তাই তিনি কৌশিকী। পরবর্তীতে তিনি কালী ও তারা মা রূপে নিজেকে রুপান্তরিত করেন। তাই কৌশিকী অমাবস্যার দিনে মহাশ্মশানে সাধনা করে সিদ্ধিলাভের আশা করেন সাধকরা । কারণ উত্তরবাহিনী দ্বারকা নদীতে স্নান সেরে শ্মশানের শ্বেত শিমুলের গাছের তলায় সাধনা করে বামাক্ষ্যাপা সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। দ্বারকা নদীতে স্নান এদিন কুম্ভস্নানের সমান পুন্যলাভ হয়।
[আরও পড়ুন: ‘ডার্ক ওয়েবে’ই রঙিন কলকাতার রাত! কড়ি ফেললেই পৌঁছে যাচ্ছে যথেচ্ছ মাদক]
তাই সিদ্ধিলাভের আশায় সিদ্ধপীঠ তারাপীঠে শনিবার সুদূর রাশিয়া থেকে হাজির হলেন অর্নপূর্ণা নাথ। পরনে যোগীনির বেশ। পায়ে কঙ্কন। গলায় রুদ্রাক্ষ। জটাধারী। তিনি জানালেন, তারাপীঠে আসার কোনও পরিকল্পনা ছিল না তাঁর। মা যেন ডাকলেন। তাই সেই ডাক উপেক্ষা করতে পারলেন না। দলবল, সঙ্গীসাথী নিয়ে হাজির হয়েছে মহাশ্মশানে। কৌশিকী অমাবস্যায় তিনি সেখানেই মহাযজ্ঞ করবেন। কামনা করবেন বিশ্ব মঙ্গলের। তবে শুধু রাশিয়া নয়, থাইল্যান্ড, দিল্লি, অসম থেকে বহু সাধক-সাধিকা আগে থেকেই মহাশ্মশানে এসে তাবু ফেলেছেন। তৈরি করছেন যজ্ঞবেদী। আয়োজন চলছে শান্তিযজ্ঞের। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবার উপর নজরদারির পাশাপাশি তাদের সহযোগিতা করা হচ্ছে।