সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবশেষ সত্যি হল আশঙ্কা। রুশপন্থী বিদ্রোহীদের দখলে থাকা ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্রের মর্যাদা দিল রাশিয়া। ফলে ক্রিমিয়ার পর আবারও বিভক্ত হল ইউক্রেন। এহেন চরম উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে জরুরি বৈঠকে বসেছে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা বৈঠক। পরিস্থিতির মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ফোনে আলোচনা করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি।
[আরও পড়ুন: ফরাসি বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক জয়শংকরের, আলোচনার কেন্দ্রে আফগানিস্তান ও ইউক্রেন]
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সোমবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদা দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, অবিলম্বে ডোনেৎস্ক এবং লুহানস্কের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্তের প্রয়োজন। ইউক্রেন আসলে আমেরিকার হাতের পুতুল।”
রুশ প্রেসিডেন্টের এহেন পদক্ষেপের ফলে কূটনৈতিক মহলের আশঙ্কা, এই পদক্ষেপের ফলে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর সরকারের সঙ্গে সঙ্ঘাত শুরু হতে পারে রাশিয়ার। ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলে রাশিয়ার সেনাবাহিনী প্রবেশ করেছে বলেই খবর। এদিকে, এই ঘোষণার পরই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দখলে থাকা ওই দুই প্রদেশের উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে বলে ঘোষণা করেছে আমেরিকা। একইসঙ্গে, ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বে আঘাত হানার জন্য মস্কোকে একহাত নিয়েছে হোয়াইট হাউস।
[আরও পড়ুন: ইউক্রেনে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে লড়াই বিদ্রোহীদের, বৈঠকে রাজি পুতিন-বাইডেন]
এদিকে, ইউক্রেন নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। সেখানে আমেরিকার প্রতিনিধি রাশিয়ার নিরুদ্ধে আগ্রাসনের অভিযোগে সরব হয়েছেন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করার জন্য আমরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করব। আমাদের এবং মিত্র দেশগুলির কাছে পরিস্থিতি খুব স্পষ্ট। ইউক্রেনে যদি রাশিয়া আরও আগ্রাসন চালায় তাহলে আমরা প্রবল জবাব দেব।” পালটা রুশ প্রতিনিধির জবাব, দোনবাস অঞ্চলে রক্তপাত মেনে নিতে পারে না রাশিয়া। এই বিষয়ে অত্যন্ত নেতিবাচক ভূমিকা পালন করছে পশ্চিমের দেশগুলি।
পূর্ব ইউরোপে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় উদ্বিগ্ন ভারত। ইউক্রেন থেকে প্রায় ২০ হাজার পড়ুয়ার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছে নয়াদিল্লি। এদিন রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি বলেন, “ইউক্রেনে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এখন ভারতের কাছে সবচেয়ে জরুরি কাজ।” শুধু তাই নয়, বৈঠকে রাশিয়া ও ইউক্রেন সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের পক্ষে মত দিয়েছে নয়াদিল্লি।