সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হজরত মহম্মদকে (Prophet Mohammad Row) নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে দেশে বিদেশে সৃষ্টি হয়েছে অশান্তি। ভারতের নানা রাজ্যে হিংসা ছড়িয়েছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বেশ চাপের মুখে পড়েছে ভারত। সেই পরিস্থিতি নিয়ে এই প্রথমবার মুখ খুললেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর (S Jaishankar)। কেবলমাত্র উপসাগরীয় দেশগুলিই নয়, দক্ষিণ এশিয়ার কিছু রাষ্ট্র থেকেও নূপুর শর্মার (Nupur Sharma) বক্তব্যের বিরোধিতা করে বার্তা দেওয়া হয়েছিল। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেই জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে আরও বলেছেন, বিতর্কের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছে বেশ কিছু দেশ। তবে তারা সফল হবে না বলেই দাবি করেছেন জয়শংকর।
নূপুর শর্মার মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই বিজেপির তরফ থেকে সাফাই দিয়ে বলা হয়, এই কথা তাদের দলীয় স্বার্থের বিরোধী। সকল ধর্মকে সমান চোখে দেখা হয় তাদের দলে। সেই সঙ্গে নূপুর শর্মা ও নবীন জিন্দলকে বহিষ্কার করা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, এই মন্তব্য একান্তই বিজেপির দলীয় মত। তার সঙ্গে একমত নয় সরকার। সেই প্রসঙ্গ টেনে জয়শংকর বলেছেন, সংশ্লিষ্ট দেশগুলি এই কথা বুঝেছে। তারা বহুদিন ধরেই আমাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রেখেছে। এটা যে আমাদের সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি নয়, সেই কথাও বুঝেছে।”
[আরও পড়ুন: স্বচ্ছ ভারত অভিযানে মোদি, টানেল পরিদর্শনে গিয়ে নিজের হাতে ফেললেন আবর্জনা, ভাইরাল ভিডিও]
এরপরেই তিনি বলেন, শুধুমাত্র মধ্যপ্রাচ্য নয়, দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ থেকেও পয়গম্বর বিতর্কে তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। তবে সরকারের অবস্থানে তারা সন্তুষ্ট বলেই জানিয়েছেন জয়শংকর। তাছাড়াও তিনি বলেন, “বিতর্কের সুযোগ নিয়ে বেশ কিছু দেশ ঘোলা জলে মাছ ধরতে চেয়েছিল। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিষয়টা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটা খেলার মতো। এখানে কুইন্সবেরি নিয়ম মেনে খেলা হয় না।” প্রসঙ্গত, বক্সিংয়ের প্রচলিত আইন এই কুইন্সবেরি নিয়ম। খেলোয়াড়ি মানসিকতার পরিচয় দিয়ে খেলার ময়দানে নামতে হয়।
জয়শংকর বলেছেন, “আমাদের সংস্কৃতি কী, সেটা আমাদেরকেই বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে হবে। গত কয়েকদিনে আমরা সেই কাজটিই করেছি। নানা দেশ এখন বুঝতে পারছে ভারতীয় সংস্কৃতির স্বরূপ।” তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, যেসব দেশে গণতন্ত্র নেই, তারাও ভারতের গণতান্ত্রিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। সেই কথার উত্তরে জয়শংকর বলেন, “বিষয়টা ওভাবে দেখা উচিত নয়। আমি মনে করি এই ঘটনায় মানুষের ভাবাবেগে আঘাত লেগেছিল। সেই কারণেই ভারতের দিকে আঙুল উঠেছিল। তবে ভারত সরকারের অবস্থান এখন সকলের কাছেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাই এখন আর কোনও সমস্যা হবে না বলেই মত বিদেশমন্ত্রীর।