সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশ নিয়ে সংসদে বিবৃতি দিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। কথা বললেন সেদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে। অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশের নানা প্রান্তে আক্রান্ত হচ্ছেন সংখ্যালঘুরা। আজ, মঙ্গলবার, রাজ্যসভায় সেকথা জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন জয়শংকর। পাশাপাশি তিনি জানান, পড়শি দেশে এখনও আটকে রয়েছেন প্রায় ১৯ হাজার ভারতীয়। গোটা পরিস্থিতি নজরে রেখে বাংলাদেশ সেনার সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আপাতত ভারতেই রয়েছেন হাসিনা বলে জানান জয়শংকর।
বাংলাদেশে গণ আন্দোলনের জেরে সোমবার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন মুজিবকন্যা হাসিনা। আপাতত দিল্লির সেফ হাউসে রয়েছেন তিনি। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন কেন্দ্র। সাউথ ব্লকে তৎপরতা তুঙ্গে। মঙ্গলবার সর্বদল বৈঠকও হয়েছে সংসদের অ্যানেক্স ভবনে। এর পর দুপুরে সংসদে বিবৃতি দেন বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর। পড়শি দেশে আক্রান্ত হচ্ছেন সংখ্যালঘুরা। আটকে রয়েছেন হাজার হাজার ভারতীয়। এদিন সমস্ত কিছু উল্লেখ করে তিনি বলেন, "আমরা গোটা পরিস্থিতির উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছি। কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা চলছে। প্রায় ১৯ হাজার ভারতীয় রয়েছেন বাংলাদেশে। যার মধ্যে ৯ হাজার পড়ুয়া রয়েছেন। তাঁদের দ্রুত ফেরানো নিয়ে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। জুলাই মাসেই বেশ কয়েকজন দেশে ফিরেছেন। বাংলাদেশে আক্রান্ত হচ্ছেন সংখ্যালঘুরা। এই বিষয়টিও আমরা গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি। বহু গোষ্ঠী, সংগঠন সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দিকটি নিশ্চিত করছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আমরা গভীরভাবে উদ্বেগে থাকব। গত ২৪ ঘণ্টা ধরে আমরা ঢাকার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।"
[আরও পড়ুন: ফের হাসপাতালে অসুস্থ আডবানী, চিকিৎসায় মেডিক্যাল টিম গঠন]
গতকাল ইস্তফা দিয়ে বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে ভারতে পা রাখেন হাসিনা। খুব কম সময়ের মধ্যে তার জন্য দিল্লির কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। এদিন সেনিয়ে রাজ্যসভায় জয়শংকর বলেন, "৫ আগস্ট আন্দোলন এমন আকার ধারণ করে যে শেখ হাসিনা ইস্তফা দিতে বাধ্য হন। তার পর তিনি ভারতে আসার সিদ্ধান্ত নেন। খুব অল্প সময়ের নোটিসে এদেশে আসার আর্জি জানিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। গতকাল সন্ধ্যেবেলা তিনি দিল্লিতে পৌঁছন।" কিন্তু হাসিনা কিংবা বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের পরবর্তী পরিকল্পনা কী, তা খোলসা করেননি জয়শংকর। তবে এদিন তিনি বলেন যে, বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর কিছু সময়ের প্রয়োজন রয়েছে।
সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ দিল্লির কাছে হিন্ডন সামরিক বিমানঘাঁটিতে শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন রেহানাকে নিয়ে অবতরণ করে সিজে-১৩০ বিমান। প্রথমে শোনা যাচ্ছিল, জ্বালানি নিয়ে সেটি রওনা দেবে ব্রিটেনের উদ্দেশে। কিন্তু তার পর শোনা যায়, হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে রাজি হয়নি ব্রিটেন। ফলে আপাতত ভারত ছাড়তে পারেননি হাসিনারা। কিন্তু তিনি অন্য কোনও দেশে যাবেন নাকি ভারতেই থাকবেন, তা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে বিদেশমন্ত্রক। হাসিনা দিল্লির কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন কিনা বা তাতে কেন্দ্র সম্মতি দিয়েছে কিনা তা এখনও জানা যায়নি।