সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেমন আছেন ঐন্দ্রিলা? জ্ঞান ফিরেছে তাঁর? ঐন্দ্রিলার শারীরিক অবস্থা নিয়ে উৎকণ্ঠায় তাঁর পরিবার, দুশ্চিন্তায় অনুরাগীরা। হাসপাতালেই ঐন্দ্রিলার পাশে থেকে রাত কাটাচ্ছেন কাছের মানুষ সব্যসাচী। ঐন্দ্রিলার (Aindrila Sharma) শারীরিক অবস্থা নিয়ে ভুয়ো খবরকে আটকাতে ফেসবুকে কলম ধরলেন সব্যসাচী। তিনি লিখলেন, ”ভাল আছে বলতে আমার ভয় লাগে, কিন্তু ঐন্দ্রিলা আছে। প্রচন্ডভাবে আছে।”
সব্যসাচী আরও লিখলেন, ”হাসপাতালে ছয় দিন পূর্ণ হল আজ, ঐন্দ্রিলার এখনও পুরোপুরি জ্ঞান ফেরেনি। তবে ভেন্টিলেশন থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে, শ্বাসক্রিয়া আগের থেকে অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে, রক্তচাপও মোটামুটি স্বাভাবিক। জ্বর কমেছে। ওর মা যতক্ষণ থাকে, নিজের হাতে ওর ফিজিওথেরাপি করায়, যত্ন নেয়। বাবা আর দিদি ডাক্তারদের সাথে আলোচনা করে। সৌরভ আর দিব্য রোজ রাতে আমার সাথে হাসপাতালে থাকতে আসে। আর আমি দিনে তিনবার করে গল্প করি ঐন্দ্রিলার সাথে। গলা চিনতে পারে, হার্টরেট ১৩০-১৪০ পৌঁছে যায়, দরদর করে ঘাম হয়, হাত মুচড়িয়ে আমার হাত ধরার চেষ্টা করে। প্রথম প্রথম ভয় পেতাম, এখন বুঝি ওটাই ফিরিয়ে আনার এক্সটার্নাল স্টিমুলি। আমার আজকাল কিছুই লিখতে ইচ্ছা করে না, কিন্তু আজ কিছু মানুষের বর্বরতার নমুনা দেখে লিখতে বাধ্য হলাম। ইউটিউবের কল্যাণে কয়েকটা ভুয়ো ভিডিও আর ফেক্ থাম্বনেল বানিয়ে পয়সা রোজগার করা অত্যন্ত ঘৃণ্য মানসিকতার কাজ বলে আমি মনে করি, সেটা যে ওর বাড়ির লোকের মনে কেমন প্রভাব ফেলে তা হয়তো আপনারা বুঝবেন না। আমার চোখে ওর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটেনি, অবনতি ঘটেছে মানবিকতার।
[আরও পড়ুন: শেষ ‘পিলু’র অন্তিম পর্বের শুটিং, মনখারাপ করা পোস্ট নায়ক গৌরবের, আবেগঘন নায়িকা মেঘা ]
‘ভাল আছে’ বলতে আমার ভয় লাগে, কিন্তু ঐন্দ্রিলা আছে। প্রচন্ডভাবে আছে। আমার সামনে শুয়ে থেকেও হয়তো কয়েক সহস্র মাইল দূরে আছে কিন্তু ঠিক ফিরে আসবে। ওর একা থাকতে বিরক্ত লাগে।”
তবে এই প্রথম নয়। হাসপাতাল থেকে সব্যসাচী আগেও লিখেছিলেন ঐন্দ্রিলার নিয়ে। লিখেছেন, তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেনই। অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা লড়াকু মেয়ে। ক্যানসারকে হারিয়েছে সে। রোগবালাই দূর করে কাজেও ফিরেছিল সে। সে লড়তে জানে, তাই আবার জিতবে ঐন্দ্রিলা। আশায় বুক বেঁধেছে পরিবার, অনুরাগীরা। ঐন্দ্রিলা জিতবে না কেন? এই লড়াইয়ে ঢাল তো তাঁর প্রিয় মানুষটি অর্থাৎ অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরী। ঐন্দ্রিলা (Aindrila Sharma) ও সব্যসাচীর প্রেম তো অনুপ্রেরণা। যেভাবে ঐন্দ্রিলার জীবনের ‘জিয়নকাঠি’ হয়ে উঠেছে সব্যসাচী, তাঁকে কুর্ণিশ। ঐন্দ্রিলার সঙ্গে সেও লড়ছে। ভালবাসাকে নিজের কাছে ধরে রাখার জন্য লড়ছে। আর তাই তো বিপদের দিনেও শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়িয়ে সব্যসাচী লিখতে পারেন, ” নিজের হাতে করে নিয়ে এসেছিলাম, নিজের হাতে ওকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাব।”
ঐন্দ্রিলার স্বাস্থ্য নিয়ে উৎকন্ঠায় তাঁর পরিবার। দুশ্চিন্তায় তাঁর অনুরাগীরাও। সবার উদ্দেশেই সব্যসাচী ফেসবুক পোস্টে লিখলেন, ”ঐন্দ্রিলার বিষয়ে অযথা নেতিবাচক খবর ছড়ানো বন্ধ করুন। কিছু নিম্নমানের তথাকথিত মিডিয়ার ভুয়ো খবরে নিজেদের বিভ্রান্তি বাড়াবেন না অথবা ওর বাড়ির লোককে বিরক্ত করবেন না। আমি এখনও অবধি কোনও সংবাদমাধ্যমের সাথে যোগাযোগ করিনি, সাক্ষাৎকার দিইনি, দেবও না। শুধু জেনে রাখুন মেয়েটা লড়ে যাচ্ছে, সাথে লড়ছে একটা গোটা হাসপাতাল। নিজের হাতে করে নিয়ে এসেছিলাম, নিজের হাতে ওকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাবো। এর অন্যথা কিছু হবে না।”