বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: ভোটমুখী রাজস্থানে বড়সড় ধাক্কা খেতে চলেছে কংগ্রেস (Congress)। রবিবার হাত ছেড়ে নিজের দল ঘোষণা করতে চলেছেন শচীন পাইলট (Sachin Pilot)। ওইদিন জয়পুরে সমাবেশের ডাক দিয়েছেন মরুরাজ্যের এই গুজ্জর সম্প্রদায়ের জনপ্রিয় নেতা। সেখান থেকেই নিজের নতুন দলের নাম ঘোষণা করতে পারেন তিনি। বিষয়টি জানাজানি হতেই নড়েচড়ে বসেছে কংগ্রেস। বিদ্রোহী শচীনকে নিরস্ত করতে দলের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপালকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কথা বলছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেও। কিন্তু বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রয়াত কংগ্রেস নেতা রাজেশ পাইলট তনয়ের সম্পর্ক যে পর্যায়ে পৌঁছেছে তাতে শচীনকে আদৌ নিরস্ত করা যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
অন্যদিকে, ইতিমধ্যেই বিদ্রোহী গুজ্জর নেতার সঙ্গে নতুন দল গঠন নিয়ে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক হয় বলে জানা গিয়েছে। নতুন দলের নাম, স্লোগান থেকে শুরু করে ভোটের রণকৌশল সবই ‘আইপ্যাকে’র উপরই ছেড়ে দিয়েছেন শচীন পাইলট। চলতি বছরের নভেম্বরে তিন রাজ্য রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ে ভোট। বছর ঘুরলেই তেলেঙ্গানা বিধানসভার নির্বাচন। তারপরই লোকসভা ভোটের ঢাকে কাঠি পড়বে। যদি না লোকসভার ভোট এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয় নরেন্দ্র মোদি সরকার। তার আগে কর্ণাটক জয়ে খানিকটা হলেও অক্সিজেন পেয়েছে শতাব্দীপ্রাচীন কংগ্রেস। রাজস্থান ও ছত্তিশগড় ধরে রাখার পাশাপাশি গেরুয়া শিবিরের হাত থেকে মধ্যপ্রদেশ ছিনিয়ে আনতে মরিয়া কংগ্রেস।
[আরও পড়ুন: ৭.২ শতাংশ নয়, ভারতের GDP বৃদ্ধির হার ৪ শতাংশেরও কম! কেন্দ্রের দাবি খণ্ডন স্বামীর]
তাই মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ে গোষ্ঠীকোন্দল গত মাসেই দুই রাজ্যের যুযুধান শিবিরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাহুল গান্ধী ও মল্লিকার্জুন খাড়গে। বৈঠক শেষে বিবাদ মিটে গিয়েছে বলে দাবিও করা হয়। কিন্তু রাজস্থানের বিবাদ ‘যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরে’ই আছে তা প্রকাশ হয় রাজ্যে ফিরে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট ও শচীন পাইলট একে অপরের বিরুদ্ধে মুখ খোলায়।
এবার জয়পুরে গেহলট সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে রবিবার জয়পুরে সমাবেশ করবেন বলে ঘোষণা করেছেন শচীন। সমাবেশ থেকেই তিনি নতুন দল ঘোষণা করবেন বলেও সূত্রের খবর। এদিকে এই পরিস্থিতিতে চরম অস্বস্তিতে এআইসিসি। কারণ রাহুল গান্ধী আমেরিকা সফরে। খাড়গে সংগঠন ও পারিবারিক কাজে ব্যস্ত। তাই রাজস্থানের পরিস্থিতি সামাল দিতে কে সি বেণুগোপালকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁর পক্ষে কীভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মধ্যেই।