সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ওয়াকফ বিল বিরোধিতায় সম্মিলিতভাবে কেন্দ্রকে আক্রমণ বিরোধী শিবিরের। প্রায় ১২ ঘণ্টার বিতর্কে প্রস্তাবিত ওয়াকফ বিলকে সাম্প্রদায়িক এবং সংবিধান বিরোধী প্রমাণ করার মরিয়া চেষ্টা করল বিরোধী শিবির। যদিও শেষমেশ সংখ্যাধিক্যের জেরে বিলটি পাশ করিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে মোদি সরকার, তবু যে দীর্ঘ বিতর্ক এই বিলটি নিয়ে সংসদের নিম্নকক্ষে চলল, সেটা রীতিমতো ঐতিহাসিক। অথচ এ হেন বিতর্কে আশ্চর্যজনকভাবে নীরব থেকে গেলেন খোদ বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। তিনি সংসদে এলেন, বসলেন, অথচ ওয়াকফ ইস্যুতে আলোচনায় অংশ নিলেন না।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, ওয়াকফ ইস্যুতে সংসদে দলের পক্ষ রাখার দায়িত্ব যে লোকসভার ডেপুটি লিডার গৌরব গগৈকে দেওয়া হবে সেটা আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। কংগ্রেস সূত্রের দাবি, অসমের নির্বাচনে গৌরবকে মুখ করতে চায় কংগ্রেস। তাই জাতীয় রাজনীতিতে তাঁর গুরুত্ব বাড়াতেই ওয়াকফের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিল নিয়ে আলোচনায় দলের নেতৃত্বভার তাঁকে দেওয়া হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে রাহুল গান্ধী ওয়াকফ আলোচনার সময় সংসদে উপস্থিত ছিলেন। একাধিক দলীয় সাংসদের ভাষণ শুনেছেন কিন্তু নিজে ভাষণ দেননি। তাৎপর্যপূর্ণভাবে গান্ধী পরিবারের আর এক সদস্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকেও দেখা যায়নি সংসদে।
যদিও সমালোচকরা অন্য কথা বলছেন। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের বক্তব্য, ওয়াকফ নিয়ে রাহুলের নীরবতা তাৎপর্যপূর্ণ এবং পরিকল্পিত। রাহুল যখন লোকসভার বিরোধী দলনেতা হলেন তখন থেকেই কংগ্রেসের তরফে বলা হচ্ছিল, এবার সংসদে বিজেপিকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে চান না তিনি। সেকারণেই সাংবিধানিক পদে বসলেন। অথচ, ওয়াকফ ইস্যুতে যেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজে সরকারপক্ষের নেতৃত্ব করলেন, সেখানে রাহুল নীরব থাকলেন কেন? নেপথ্যে কি সেই নরম হিন্দুত্বের অঙ্ক আছে? গান্ধী পরিবারের সদস্যরা কি ইচ্ছাকৃতভাবেই ওয়াকফ বিতর্ক এড়ালেন?
মনে রাখা দরকার, আগামী কয়েক বছরে বিহার, বাংলা, তামিলনাড়ু, অসম, গুজরাটের মতো রাজ্যে নির্বাচন। সেই নির্বাচনগুলিতে মুসলিম ভোট যেমন কংগ্রেসের প্রয়োজন। তেমনই প্রয়োজন হিন্দু ভোটেরও। সম্ভবত সেকারণেই সরাসরি ওয়াকফ বিলের বিরোধিতা করে নিজেদের মুসলিমপন্থী বলে দেগে দিতে চান না গান্ধী পরিবারের সদস্যরা। আবার দল হিসাবে কংগ্রেস এই বিলের বিরোধিতা করে মুসলিমদেরও পাশে থাকার বার্তা দিয়ে গেল। যদিও এই 'দ্বিমুখী' নীতি কতদিন চলবে? সেটা নিয়ে সংশয় রয়েছে।