সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০২৩-র ভারতীয় ক্রীড়াদুনিয়ার অন্যতম চর্চিত বিষয় ছিল কুস্তিগিরদের আন্দোলন। কলঙ্কিত অধ্যায়ও বটে। কুস্তি ফেডারেশন প্রধান ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগে সংসদের সামনে প্রতিবাদ করতে গিয়ে জুটেছিল পুলিশের লাঠির মার। সেই আন্দোলনের প্রধান মুখ ছিলেন সাক্ষী মালিক, বজরং পুনিয়া এবং ভিনেশ ফোগাট। এবার নিজের আত্মজীবনী 'উইটনেস'-এর মাধ্যমে সেই অধ্যায়ে ফের আলোকপাত করলেন সাক্ষী(Sakshi Malik)।
যন্তর মন্তরের প্রতিবাদ থেকে হরিদ্বারে পদক বিসর্জনের পরিকল্পনা, নাটকীয়তার কমতি ছিল না কুস্তিগিরদের আন্দোলনে। কিন্তু সাক্ষীর 'উইটনেস' বলছে পদে পদে বিশ্বাসঘাতকতার গল্প, রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য আন্দোলনকে বিপথে চালানোর কাহিনি। মূলত সেই অধ্যায়ের এক ধারাবাহিক ছবি তিনি তুলে ধরতে চেয়েছেন আত্মজীবনীতে। যার সঙ্গে জড়িত আছেন কুস্তিগির ববিতা ফোগাটও। সাক্ষীর মতে ববিতাই প্রথমে সকলকে উৎসাহিত করেছিল আন্দোলনের পথে চলার।
কেন? সাক্ষীর আত্মজীবনী বলছে, ববিতার রাজনৈতিক উচ্চাশার কথা। আসলে ভিনেশের দিদি কোনওদিন আন্দোলনের পক্ষেই ছিল না। সেই 'বিশ্বাসঘাতকতা'য় আহত হয়েছিলেন প্রত্যেকেই। তার পর শুরু হয় রাজনৈতিক চক্রব্যূহর অধ্যায়। সেখানে তৎকালীন ক্রীড়ামন্ত্রী থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ, অনেকের নামই আনছেন সাক্ষী। যখন ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো অনুরাগ ঠাকুর শুনেছিলেন, তখন তাঁর চোখে-মুখে ঘটনার কোনও ছাপই পড়েনি। সাক্ষীর মনে হয়েছে, এই আলোচনা শেষ হলে যেন তৎকালীন ক্রীড়ামন্ত্রী বাঁচেন। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহর ফোন পেয়েছিলেন বজরং। তখনই সাক্ষীর মনে হয়েছিল, কোথাও একটা 'গোলযোগ' তো হয়েছে।
এমনকী যখন তাঁরা ঠিক করেন হরিদ্বারের গঙ্গায় পদক বিসর্জন দেবেন, তখনও রাজনীতির হাত থেকে মুক্তি মেলেনি। সাক্ষীর মতে, এই সময়ের 'নায়ক' কৃষকনেতা নরেশ টিকাইত। কুস্তিগিররা যখন পদক বিসর্জন দিতে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁদেরকে বাধা দেন নরেশ। খানিকক্ষণের মধ্যেই সাক্ষীর মনে হয়, গোটা পরিকল্পনাটাই একটা প্রহসনে পরিণত হল। না ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে চরম পদক্ষেপ নেওয়া গেল, না পদক বিসর্জন দেওয়া গেল। যাঁরা এতদিন সমর্থন করেছিলেন, তাঁরাও একটা সময় দূরে সরে যায়। সেই সমস্ত ঘটনার সাক্ষী 'উইটনেস'। শুধু এই অধ্যায় নয়, তাঁর সঙ্গে হওয়া বহু হেনস্তার কাহিনি তুলে ধরেছেন অলিম্পিকে পদকজয়ী কুস্তিগির।