ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: 'টাকার বিনিময়ে পরিকল্পিত ভাবে সন্দেশখালিতে নারী নির্যাতনের গল্প সাজিয়েছিল বিজেপি,' সন্দেশখালি স্টিং অপরেশনের প্রথম ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই এমন অভিযোগ তোলা হয়েছিল শাসক দলের তরফে। এরই মাঝে প্রকাশ্যে এল সন্দেশখালি স্টিং অপরেশনের দ্বিতীয় ভিডিও। যেখানে সন্দেশখালি ২ ব্লকে বিজেপির (BJP) মণ্ডল সভাপতি সেই গঙ্গাধর কয়ালকেই বলতে শোনা যাচ্ছে, আন্দোলন করানোর জন্য এখনও পর্যন্ত ৭২ জন মহিলাকে টাকা দেওয়া হয়েছে। বহু আন্দোলনকারীকে দেওয়া হয়েছে মোবাইল ফোন। সন্দেশখালির পর আন্দোলনের আঁচ এসে পড়ে জেলিয়াখালি, বেড়মুজুরে। সেখানেও মহিলাদের ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি গঙ্গাধরের।
শনিবার রাতে সন্দেশখালি (Sandeshkhali) স্টিং অপরেশনের দ্বিতীয় ভিডিও প্রকাশ্যে আসে। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি 'সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল'। ভিডিওতে সন্দেশখালিতে বিজেপির ঘাঁটি শক্ত করতে আরও টাকার দাবি জানাতে শোনা গিয়েছে এলাকার বিজেপি নেতাকে। ৪৬ মিনিট ৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে গঙ্গাধর বলছেন, "সত্যিই খালি হাতে হবে না এ সব। আমরা না হয় দীর্ঘ দিন করে আসছি। আমরা মেনে নিতে পারব। কিন্তু সবাই তা করতে পারবে না। সন্দেশখালিতে এক টাকা ছাড়া তারা কথা বলবে না।" এর পরই আন্দোলন সংগঠিত করতে টাকা দেওয়ার কথা স্বীকার করে গঙ্গাধর বলেন, "আমার এলাকায় ৭২ জন মহিলা টাকা পেয়েছেন।"
[আরও পড়ুন: খুনের হুমকি দিতেন মুকুটমণি! ‘মিঠুন স্যর বললেন, ভয় পেও না পাশে আছি’, দাবি স্বস্তিকার]
ভিডিওতে প্রশ্নকর্তা গঙ্গাধরকে প্রশ্ন করেন, নির্বাচন উপলক্ষে মোট কত টাকা লাগবে? উত্তরে অন্তত ১ লক্ষ টাকা দাবি করতে শোনা গিয়েছে গঙ্গাধরকে। এছাড়া ১০টা বাইক, তার তেল খরচ ও ভোট উপলক্ষে এলাকায় মদের ব্যবস্থা করার কথা বলেন ওই বিজেপি নেতা। কত টাকার মদ লাগবে জানতে চাওয়া হলে বিজেপি নেতা বলেন, "আদিবাসী এলাকায় বেশি লাগে। তফসিলি এলাকায় একটু কম। তিনটে অঞ্চলে প্রায় ৫০টি বুথ রয়েছে। সন্দেশখালিতে ১০টি বুথ রয়েছে। সেখানে বেশি মদ লাগবে। তাও বুথ প্রতি ৫ হাজার করে ধরুন।"
[আরও পড়ুন: মাছি গলার সুযোগ পাবে না, সংসদের নিরাপত্তায় নয়া ব্লু প্রিন্ট শাহের মন্ত্রকের]
শুধু তাই নয়, ভোট করাতে এলাকায় অস্ত্রেরও দাবি জানাতে শোনা যাচ্ছে বিজেপির মণ্ডল সভাপতিকে। তিনি বলেন, "কোরাকাটি আর মণিপুরের জন্য অস্ত্র লাগবে। সন্দেশখালিতে আমার লাগবে না। মূলত পিস্তলই লাগবে বেশি। কোরাকাটির জন্য ৩০টা আর মণিপুরের জন্য ২০টা। ৫০টা হলে ঠিক আছে।" এমনকী টাকার বিনিময়ে এই আন্দোলনে যে সব আন্দোলনকারীরা নেমেছিলেন গঙ্গাধর তাঁদের নাম ও ফোন নম্বর প্রকাশ করেছেন ওই ভিডিওতে।
[আরও পড়ুন: প্রবল ধুলোঝড়ে বেসামাল দিল্লি, বেঘোরে প্রাণ গেল ২ জনের, আহত ২৩]
সন্দেশখালির দ্বিতীয় ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর স্বাভাবিকভাবেই শোরগোল শুরু হয়েছে। তৃণমূলের তরফে আগেই অভিযোগ করা হয়েছিল বিজেপি টাকা দিয়ে গোটা বিষয়টি সাজিয়েছে। এখন দ্বিতীয় ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই প্রশ্ন উঠছে, নির্বাচনকে মাথায় রেখে ঠিক কত গভীর ষড়যন্ত্রের বীজ বোনা হয়েছিল সন্দেশখালিতে?