ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, জলন্ধর: বিজ্ঞানের আবিষ্কার হোক বা উদ্ভাবনী চিন্তা, বরাবরই প্রথম সারিতে বাংলা। রাজ্যের সেই সুনাম জাতীয় বিজ্ঞান সম্মেলনে ধরে রাখল বাংলার এক স্কুলপড়ুয়া। ফেলে দেওয়া জিনিসকে কীভাবে কম খরচে অতি প্রয়োজনীয় জিনিসে রূপান্তর করা যায়, তা দেখিয়েই গোটা দেশকে তাক লাগিয়ে দিল সে। পাঞ্জাবের জলন্ধরে শুরু হওয়া ১০৬তম ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেসের কিশোর বিজ্ঞান প্রদর্শনীতে কলা গাছ থেকে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরি করার পদ্ধতি দেখিয়েছে পাঁশকুড়ার নবম শ্রেণির ছাত্র শ্যামসুন্দর মাইতি। তারপর থেকেই শ্যামসুন্দরকে ‘প্যাড-বয়’ নামে ডাকা শুরু হয়েছে। শুধু নতুন নামকরণই নয়, প্যাড-বয়ের প্রদর্শনী দেশ, বিদেশের বিজ্ঞানীদের প্রশংসাও কুড়িয়েছে। এখন সায়েন্স কংগ্রেস অ্যাসোসিয়েশন প্যাড-বয়কে পুরস্কৃত করে কি না সেটাই দেখার।
[ কঠিন প্রশ্নে বিরক্ত! ছাত্রকে গ্রেপ্তারির নির্দেশ মহারাষ্ট্রের শিক্ষামন্ত্রীর]
সম্প্রতি স্যানিটারি ন্যাপকিন নিয়ে হিন্দি সিনেমা ‘প্যাডম্যান’ দেশ জুড়ে আলোড়ন ফেলেছিল। বাংলার এই প্যাড বয়ের প্রোজেক্টও ‘ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেস’-এ শোরগোল ফেলে দিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার শ্যামসুন্দর পাটনা হাইস্কুলের ছাত্র। স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরি প্রসঙ্গে সে জানায়, “ফেলে দেওয়া কলা পাতা ভাল করে ধুয়ে সেগুলি হাতুড়ি দিয়ে থেঁতলাতে হবে। নিংড়ে জল বের করে তারপর ফুটন্ত জলের উপর রাখতে হবে। জলের ভাপ দেওয়ার পর ফের সেটিকে নিংড়ে আট থেকে দশ ঘন্টা রোদে শুকিয়ে পাতলা পাতলা করে ছিঁড়তে হবে। এর পর স্টেরিলাইজ করা কাঁচি দিয়ে মাপ মতো কেটে ফেললেই অর্ধেক কাজ শেষ। এরপরের কাজও খুবই সহজ। পরিষ্কার কাপড়ে ভরে সেলাই করলেই প্যাড তৈরি।” শ্যামসুন্দরের কথায়, কলা গাছের বাই প্রোডাক্টে তৈরি এই প্যাড নামী কোম্পানির প্যাডের চেয়ে বেশি কার্যকর। তার দাবি, বাজার চলতি প্যাডের থেকে কলা গাছের তৈরি প্যাডের সহন ক্ষমতা অনেক বেশি, খরচও কম। প্রতি প্যাডের খরচ বড়জোর এক থেকে দু টাকা। অনেকের মনেই কৌতুহল, এত খুদে পড়ুয়ার এমন পরিণত ভাবনা এল কীভাবে? শ্যামসুন্দর জানায়, প্রোজেক্টটির ভাবনা আসলে তার এক স্কুল শিক্ষকের। তাঁর অনুপ্রেরণাতেই প্রোজেক্টকে বাস্তব রূপ দিয়েছে সে। এই কাজে তার এক সহপাঠীও সাহায্য করেছে।
[ সবরীমালার পর কেরলের নিষিদ্ধ পাহাড়ের চূড়ায় ওঠাই লক্ষ্য মহিলাদের]
The post কলাগাছ থেকে সস্তায় ন্যাপকিন, অভিনব উদ্ভাবনে তাক লাগাল স্কুলপড়ুয়া appeared first on Sangbad Pratidin.