সঞ্জয় সেন: কথায় বলে সকাল দেখে নাকি দিন কেমন যাবে তার আভাস পাওয়া যায়। যদিও বলার সময় এখনও আসেনি। তবু বলব, এটিকে মোহনবাগান (Atk Mohunbagan) এভাবে শুরু করবে অনেকে ভাবেননি। দু’টি ম্যাচ খেলে ছ’ পয়েন্ট। লিগ টেবিলে সবুজ-মেরুন শীর্ষে নয় ঠিকই। কিন্তু আজ জিতলে আবার চলে যাবে সবার উপরে।
এই ম্যাচে ধারে-ভারে অবশ্যই এগিয়ে এটিকে মোহনবাগান। ISL-এর দু’টি দল নর্থ ইস্ট ও ওড়িশা সবচেয়ে কম বাজেট নিয়ে এগোয়। অনেকে ভাবেন এই দু’টি দল তুলনায় সহজ। একটা কথা প্রথমেই জানিয়ে রাখি, এই সব দল সবসময় বড় দলের বিরুদ্ধে মরিয়া মনোভাব নিয়ে ঝাঁপায়। হারানোর কিছু নেই ভেবে এগোনোর চেষ্টা করে। অঘটন প্রায়শই ঘটায়। কোচিং অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, এমন সব দলের বিপক্ষে খেলতে গিয়ে আশানুরূপ ফল পাইনি। অনেক সময় হেঁাচট খেয়েছি। তাই আজ খুব সতর্ক হয়ে নামতে হবে রয় কৃষ্ণদের। মুহূর্তের জন্য মনঃসংযোগে যেন চিড় না ধরে। ধরলে তার ফায়দা নিয়ে নিতে পারে ওড়িশা (Odisha FC)।
[আরও পড়ুন: জার্সি খুলে মারাদোনাকে সম্মান জানিয়ে বিপাকে মেসি, দিতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা]
এটিকে মোহনবাগান দলের কোচ আন্তোনিও হাবাসকে কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, তিনি আজ প্রচণ্ড সতর্ক থাকবেন। শুধু তিনি কেন, পুরো দলকে খেলতে নামার আগে পর্যন্ত পইপই করে বুঝিয়ে যাবেন, কেউ যেন হাল ছেড়ে না বসে। খুব অবাক হব, যদি আজ হাবাস টিম মিটিংয়ে সকলকে এসব কথা না বলে থাকেন। স্প্যানিশ কোচ হলেন সেই ধাতের মানুষ যিনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রত্যেকে সজাগ না থাকলে খুব বিরক্ত হন। মানছি, রয় কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়ামসরা থাকা মানে গোল পেতে খুব একটা সমস্যা হবে না। আজ ইনমানকে খেলালে আক্রমণভাগ আরও ধারালো হয়ে উঠবে। মানছি বাঁ–দিক থেকে আক্রমণটা ঠিক মনের মতো হচ্ছে না হাবাসের। তিনি যা চাইছেন তা পাচ্ছেন না। সুসাইরাজ চোট পেয়ে যাওয়ায় এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তবে এই সমস্যাও বেশি দিন থাকবে না। ডান প্রান্তের মতো বাঁ–দিকও সচল হয়ে গেলে এই দলকে রোখা মুশকিল। গতবার ডিফেন্স মাঝে মাঝে সমস্যায় ফেলেছে। এবার সেই ফাটলও বোজানো গিয়েছে। তাই কমপ্লিট দল বলতে যা বোঝায় তাই এখন এটিকে মোহনবাগান।
ওড়িশা দলের কোচ স্টুয়ার্ট ব্যাক্সটার সম্পর্কে আলাদা শ্রদ্ধা রয়েছে হাবাাসের। দু’জনে দক্ষিণ আফ্রিকায় কোচিং করানোর সূত্রে একে অপরকে ভালমতো চেনেন, জানেন। তার উপর ওড়িশা গত ম্যাচে জামশেদপুরের কাছে দু’গোলে পিছিয়ে থেকেও ড্র করেছিল। দিয়েগো মউরিসিও একাই দু’টি গোল করে। তবে সেদিন জামশেদপুুরের গোলকিপার রেহেনেশ প্রথম গোলের ক্ষেত্রে যে ভুল করেছিল আশা করি অরিন্দম ভট্টাচার্য তা করবে না। প্রথম গোল ওড়িশা পেয়েছিল রেহেনেশের করা ভুল থেকে পাওয়া ফ্রি কিকে। ওরা গতম্যাচ যেখানে শেষ করেছিল সেখান থেকেই তারা শুরু করতে চাইবে। আজ নামবে প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী হয়ে। ব্যাক্সটার জানেন শক্তপোক্ত দল হাবাস বাহিনী। তাদের রোখা খুব সহজ হবে না। শেষকালে বলব, খুব বড় অঘটন না ঘটলে তিন ম্যাচে ন’পয়েন্ট পাওয়া হাবাসের কাছে স্রেফ সময়ের অপেক্ষা মাত্র।