গোবিন্দ রায়: আইনি বিপাকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সারদা কাণ্ডে তাঁর বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার ভূমিকা খতিয়ে দেখে অবিলম্বে পদক্ষেপ করুক সিবিআই, এই আরজি মামলাকারীর। আগামী সোমবার মামলার শুনানির সম্ভাবনা। এদিকে, শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অন্যান্য একাধিক মামলায় তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে তাঁর রক্ষাকবচ খারিজের আবেদন জানিয়েছে রাজ্য সরকার। একইদিনে জোড়া মামলায় বেশ চাপে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
একাধিকবার বোমা ফাটিয়েছেন সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেন (Sudipta Sen)। প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকে প্রিজনার্স পিটিশনে তিনি ওয়েলফেয়ার অফিসারের মাধ্যমে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও কলকাতার মুখ্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে চিঠি পাঠান। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) অধিকারী কীভাবে, কত টাকা আদায় করেছেন, তা বিস্তারিতভাবে চিঠিতে উল্লেখ করেন সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেন। এমনকী বিধাননগরের এমপি-এমএলএ আদালতে হাজিরা দিতে এসে বিস্ফোরক কথা বলেন সারদাকর্তা। তিনি জানান, “ব্ল্যাকমেল করে অনেক টাকা নিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।” সারদাকর্তার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শুভেন্দুকে গ্রেপ্তারির দাবিতে আগেই সরব হয় তৃণমূল। এবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করলেন আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার। সারদা কাণ্ডে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার ভূমিকা খতিয়ে দেখে অবিলম্বে পদক্ষেপ করুক সিবিআই, এই আরজি জানান মামলাকারী। আগামী সোমবার মামলার শুনানির সম্ভাবনা।
এদিকে, শুভেন্দু অধিকারীকে দেওয়া রক্ষাকবচ খারিজের আরজি জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ রাজ্য সরকার। চলতি সপ্তাহে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে। মামলায় রাজ্যের বক্তব্য, ২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারির মতো কোনও কড়া পদক্ষেপ না নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। কিন্তু সেই নির্দেশের অপব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। আদালতের ওই নির্দেশকে হাতিয়ার করে তিনি রাজ্যের একাধিক থানায় দায়ের হওয়া মামলায় হাজিরা এড়াচ্ছেন। যার ফলে তদন্ত প্রক্রিয়া থমকে থাকছে। তাই ওই নির্দেশের সংশোধনী আনার আর্জি জানানো হয়েছে রাজ্যের তরফে।
[আরও পড়ুন: সৎকারে বাধা ধর্ম! বছরভর মর্গেই পড়ে বৃদ্ধার দেহ, অবাক কলকাতা হাই কোর্ট]
বাম আমলে বিধানসভা ভাঙচুরের ঘটনাতেও নাম জড়িয়েছিল শুভেন্দু অধিকারীর। সেই মামলারও শুনানি ছিল বুধবার। হাই কোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরী শুনানিতে রাজ্যকে প্রশ্ন করেন, “একজন সাধারণ নাগরিক হিসাবে আমি জানতে চাই বিধানসভা ভাঙচুর মামলার বর্তমান পরিস্থিতি কী? সেই মামলাগুলির ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ হয়েছে? বিধানসভার প্রাচীন স্থাপত্য ভাঙচুর হয়েছে, হেরিটেজ ভাঙচুর হয়েছে। আসবাব ভাঙচুর হয়েছে। সেগুলির ক্ষেত্রে কী হয়েছে? সেই বিরোধীরা এখন শাসক হয়েছে। আপনারা যখন করেছেন তখন সেটা বিধানসভার অভ্যন্তরীণ বিষয় ছিল, তাহলে এখন কেন আদালতে মামলা আসছে?”
এছাড়া, মাসকয়েক আগে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধে বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, কৃষ্ণ কল্যাণী, সৌমেন রায় এবং তন্ময় ঘোষকে হুমকির অভিযোগ ওঠে। হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করে তৃণমূল। সেই ঘটনার শুনানিতে শুভেন্দুর আইনজীবী জানান, “যেহেতু বিধানসভার ভিতরের এবং অধিবেশন চলাকালীন এই ঘটনা ঘটেছে, তাই এটা পুলিশের বিচার্য বিষয় নয়।”