সোমনাথ লাহা: টলিউডের গতানুগতিক চেনা ছকের বাইরের ছবির তালিকায় নয়া সংযোজন পরিচালক নবারুণ সেনের ছবি ‘দ্বিখণ্ডিত’। নিজের প্রথম ছবিতেই ডিস অ্যাসোসিয়েটিভ আইডেনটিটি ডিসঅর্ডারের মতো মনোরোগকে কেন্দ্র করে সেলুলয়েডের আঙিনায় চিত্রনাট্যের বুনন ঘটিয়েছেন পরিচালক। পেশায় অ্যাপ্লিকেশন আর্কিটেক্ট নবারুণ ইতিমধ্যেই কাজ করেছেন হলিউডের বেশ কিছু ছবির অ্যাসিস্ট্যান্ট ও অবজার্ভার হিসাবে। এটিই তাঁর পরিচালিত প্রথম ছবি। ফ্রেমভিউ এন্টারটেনমেন্টের ব্যানারে নির্মিত এই ছবির প্রযোজক নবারুণ স্বয়ং।
[নির্মল ধরের ‘উর্বশীদের দিনরাত্রি’-র সৌজন্যে ফিরে দেখা সিনে সুন্দরীদের]
সাইকোলজিক্যাল ড্রামার আবহে গাথা ‘দ্বিখণ্ডিত’ মূলত এক অর্থে স্বপ্ন আর বাস্তবের জলছবি। গল্প আর বাস্তবতার ফারাকটুকু মুছে গিয়ে যখন চরিত্ররা একে একে এসে ভিড় জমায়, বাস্তব জগতের আঙিনায়, মননে, চারপাশের জীবনে, নাড়া দিয়ে যায় জীবনচর্যাকে। তখনই বোধ হয় জীবনও দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। ছবিতে মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, অঞ্জনা বসু, সায়নী ঘোষ ও কৌশিক কর। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে এই ছবির টিজার। মনোরোগের মতো বিষয় ভাবনাকে ঘিরে সাইকোলজিক্যাল আবহে মাখা ছবির টিজার তাই চমকে দেওয়ার পাশাপাশি ধাক্কা দিয়ে যায় দর্শকমনে। অন্য ধরনের এই ছবিকে ঘিরে তাই ক্রমশ আগ্রহ বাড়ছে দর্শকমহলে। ছবির কাহিনি আবর্তিত হয়েছে পেশায় লেখক কৌশিক (শাশ্বত)-কে কেন্দ্র করে। ডিস অ্যাসোসিয়েটিভ আইডেনটিটি ডিসঅর্ডারের শিকার কৌশিক তার নিজের লেখা গল্পের চরিত্রগুলোকে হ্যালুসিনেট করার পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে তার গল্পের কোনও একটি চরিত্রের মতো আচরণ করে। ফলে কৌশিকের সঙ্গে তার স্ত্রী সুমনা (অঞ্জনা)-র দাম্পত্য জীবনে শুরু হয় টানাপোড়েন। এমনকী কৌশিকের অস্বাভাবিক আচরণের শিকারও হতে হয় সুমনাকে। ফলে হাসপাতালে ভরতি হতে হয় কৌশিককে। হাসপাতালের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দীপা (সায়নী) কৌশিকের সমস্যার কথা বুঝতে পেরে তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয়। সেই সময় একজন চিত্র পরিচালক ঋত্বিক (কৌশিক) কৌশিকের লেখা কাহিনি পড়ে অনুপ্রাণিত হয়ে সেটি থেকে একটি ছবি তৈরির পরিকল্পনা নেয়। সেই খবর জানতে পেরে সুমনা ও দীপা ঠিক করে কৌশিককে সেই ছবিটি দেখানোর। তারপর কী হয়? কৌশিক কি আদৌ সুস্থ হয়ে ওঠে? উত্তর থাকছে ছবির পর্দায়।
[লম্বা সফরে সবাই ব্যস্ত ফোনে! বিরক্ত আশা ভোঁসলে]
পরিচালক নিজেই ছবির কাহিনি ও চিত্রনাট্য লিখেছেন। অন্য চরিত্রে আছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, রুমকি চট্টোপাধ্যায়, পার্থ মিত্র, রিনা মিত্র ও অন্য শিল্পীরা। সংগীত পরিচালনায় অরূপ ভট্টাচার্য ও প্রিয়াঙ্ক দাস। এছাড়া ছবির একটি গানের সংগীত পরিচালনা করেছেন চিরন্তন বন্দ্যোপাধ্যায়, গীতিকার সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়। প্লে-ব্যাকে আছেন অন্বেষা দত্তগুপ্ত, বনি চক্রবর্তী, চিরন্তন বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবির শুটিং হয়েছে কলকাতা ও তার আশপাশের অঞ্চল জুড়ে। অরিজিন্যাল কনসেপ্ট নিয়ে তৈরি এই ছবিকে ঘিরে রীতিমতো আশাবাদী পরিচালক নিজেও। তবে এই ছবির হাত ধরে সেলুলয়েডের আঙিনায় যে অন্যরকমের কাহিনির স্বাদ পেতে চলেছেন দর্শকরা, সেকথা বলাই যায়। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে মার্চ মাস নাগাদ মুক্তি পেতে পারে এই ছবি।
The post স্বপ্ন আর বাস্তবের জলছবি ‘দ্বিখণ্ডিত’, সাইকোলজিক্যাল ড্রামায় শাশ্বত appeared first on Sangbad Pratidin.