সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্রিগেডে (Brigade) মোদির সভায় বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নিয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তী। প্রাক্তন তৃণমূল নেতার এই বিজেপি যোগ মোটেও ভালভাবে নেয়নি তৃণমূল। ‘মহাগুরু’কে বিশ্বাসঘাতক তকমা দিলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও কুণাল ঘোষের গলাতেও একই সুর।
বেশ কিছুদিন ধরেই জল্পনা চলছিল ব্রিগেডে বিজেপির মেগা সভায় গেরুয়া পতাকা হাতে তুলে নিতে পারেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। শনিবার রাতেই কার্যত সেই জল্পনায় সিলমোহর পড়ে যায়। রবিবার বেলা সাড়ে ১২ টা নাগাদ ব্রিগেডের মঞ্চে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। নাম না করে আক্রমণ করেন শাসকদলকে। অনেকেরই ধারণা মিঠুনের যোগদান ভোটের ময়দানে বেশ খানিকটা এগিয়ে দেবে বিজেপিকে। কিন্তু এই তারকার গেরুয়া শিবিরে যোগকে গুরুত্ব দিতে চাইছে না তৃণমূল। এবিষয়ে সৌগত রায় বলেন, “উনি একাধিকবার শিবির বদলেছেন। সাধারণ মানুষের জন্য ওঁর কোনও ত্যাগ নেই। মিঠুনকে ভরসা করা যায় না। বিশ্বাসঘাতকরা ওঁর অভ্যেস।” মিঠুন চক্রবর্তী প্রসঙ্গে ফিরহাদ (Firhad Hakim) বলেন, “উনি নকশাল ছিলেন, মিঠুনদাকে একটা সময়ে সুভাষবাবুরও সঙ্গে দেখেছি। পরে তৃণমূলে এসেছিলেন। ওঁর অনেক রূপ। আরও অনেক রূপ দেখব।” এবিষয়ে মন্তব্য করার আগে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তী ওঁর অত্যন্ত পছন্দের মানুষ। তবে বিরোধীদলের সদস্যকে খোঁচা দিতেও ছাড়েননি তিনি। তাঁর কথায়, “বড় মাপের অভিনেতারা সবসময় বড় হাউস খোঁজেন। এই বিষয়টাও ঠিক তেমনই।” এবিষয়ে বিজেপির কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
[আরও পড়ুন: ‘বাংলাকে উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে ভোট দিন’, ব্রিগেডে ‘আসল’ পরিবর্তনের ডাক মোদির]
উল্লেখ্য, জীবনের প্রথমভাগে নকশাল আন্দোলনে জড়িত ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। পরবর্তীতে বাম নেতা সুভাষ চক্রবর্তীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় তাঁর। পরে সমর্থন করেছিলেন শিবসেনাকে। দীর্ঘদিন এরাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। তৃণমূলের (TMC) তরফে রাজ্যসভার সদস্যও করা হয় তাঁকে। একটা সময় এরাজ্যের শাসকদলের হয়ে ভোটের প্রচারেও দেখা গিয়েছে মিঠুনকে। বছর পাঁচেক আগে একটি চিটফান্ড মামলায় নাম জড়ায় তাঁর। একটি অর্থলগ্নি সংস্থার কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা পাওয়ার অভিযোগ ওঠার কিছুদিন পরই রাজনীতির ময়দান থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। ভগ্ন স্বাস্থ্যের কারণ দেখিয়ে ২০১৬ সালের শেষদিকে রাজ্যসভার সাংসদ পদও ত্যাগ করেন ‘মহাগুরু’। তারপর থেকেই কার্যত রাজনীতির সঙ্গে কোনও যোগাযোগ ছিল না মিঠুনের। এবার ফের রাজনীতির ময়দানে তিনি।