সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: একটানা তিনদিন ধরে চলছে কুড়মি সমাজের আন্দোলন। তার জেরে স্তব্ধ রেল পরিষেবা। তবে শুধু রেল নয়। কাজ না পাওয়ায় এবার আন্দোলনে শামিল দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের অস্থায়ী কর্মীরাও। ডিপো থেকে বেরচ্ছে না একটিও বাস। ভোগান্তির শিকার যাত্রীরা।
পুরুলিয়ার বেলগুমায় এসবিএসটিসি’র ডিপো। কলকাতা, উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে মোট ৩০টি রুট রয়েছে। ৩০টির মধ্যে এখন মাত্র ১২টি রুটে গাড়ি চলছে। এসবিএসটিসি’র অস্থায়ী কর্মীদের দাবি, তাঁরা ঠিকমতো কাজ পাচ্ছে না। সারা মাসে মোটে ১২ থেকে ১৪ দিন কাজ পাচ্ছেন। প্রতিদিন কাজ করলে ৫১৯ টাকা পান। তাতে আর্থিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে। কর্মীদের দাবি, মাসে অন্তত ২৬ দিন কাজ দিতে হবে। ৫১৯ টাকার বদলে ১০০০ টাকা দৈনিক হিসাবে কাজ দিতে হবে। এই দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কর্মবিরতিতে শামিল এসবিএসটিসি’র অস্থায়ী গাড়িচালক এবং কন্ডাক্টর। আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি।
[আরও পড়ুন: প্রেম-যৌনতা-প্রতিশোধ! বীরভূমের শিশুখুনের নেপথ্যের কারণ জানলে চমকে যাবেন]
কন্ডাক্টর অপূর্ব লাল মহালানি এবং চালক আমিরুল শেখের দাবি, ২৬ দিনের কাজ না দেওয়ার বন্দোবস্ত হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এসবিএসটিসি বেলগুমা ডিপো ম্যানেজার ইন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন ধরেননি। তাই তাঁর প্রতিক্রিয়া পাওয়া সম্ভব হয়নি। এদিনের কর্মবিরতিতে আইএনটিটিইউসি নেতৃত্ব দিলেও সে বিষয়ে তেমন কিছু জানা নেই বলেই দাবি আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি উজ্জ্বল কুমারের। তিনি বলেন, “কী হয়েছে দেখছি। যাতে দ্রুত সমাধান করা যায় তা দেখছি।” এদিকে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাস না পাওয়ায় ভোগান্তির শিকার ভারতী সুপকার নামে এক যাত্রীও। তিনি জানান, পুরুলিয়া থেকে বাঁকুড়ায় যাওয়ার জন্য কোনও বাস পাচ্ছিলেন না। বহু কষ্টে একটি বেসরকারি বাসে করেই তাঁকে বাঁকুড়ায় পৌঁছতে হয়েছে।
এদিকে, কুড়মিদের আন্দোলন তিনদিনে পড়ল। একটানা আন্দোলনের ফলে বৃহস্পতিবারও স্তব্ধ রেল পরিষেবা। বুধবার আদ্রা ও খড়গপুর ডিভিশনের মোট ৬২টি ট্রেন বাতিল হয়ে যায়। তার মধ্যে ২২টি দূরপাল্লার ট্রেনও ছিল। ঠিক একইভাবে বৃহস্পতিবারও বহু ট্রেন বাতিল হয়ে যায়।