দুলাল দে: সেমিফাইনালে টাইব্রেকারের পুলিশ এসিকে হারিয়েছিল এসসি ইস্টবেঙ্গল। শনিবার কন্যাশ্রী কাপের মহিলা ফুটবলের ফাইনাল খেলার কথা ছিল লাল–হলুদের। কিন্তু ফের ভুল ফুটবলার খেলানোয় পুলিশ এসির অভিযোগে বাধ্য হয়ে লাল–হলুদের ফাইনালে ওঠা বাতিল করতে হল IFA’কে। ঠিক হয়েছে, ফাইনাল খেলার পরিবর্তে শনিবার ফের পুলিশের বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল খেলতে নামবে এসসি ইস্টবেঙ্গল (SC East Bengal)।
IFA-এর এই সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও তীব্র ক্ষোভ রয়েছে পুলিশের। আবার প্রবল ক্ষোভ রয়েছে এসসি ইস্টবেঙ্গলের ইনভেস্টরদের মধ্যেও। তাদের কর্তারা বলছেন, “এই প্রতিযোগিতার ব্যাপারে IFA আমাদের সঙ্গে কোনওভাবেই যোগাযোগ করেনি। যা কিছু যোগাযোগ সব হচ্ছে ক্লাবের সঙ্গে। তাই কেন পর পর দু’বার ভুল ফুটবলার খেলানো হয়েছে, তা আমরা বলতে পারব না। ক্লাব কর্তারা বলতে পারবেন।”
শুধু সেমিফাইনাল ম্যাচ নয়। গ্রুপ লিগেও এসসি ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে ফুটবলার খেলানোর অভিযোগ এনেছিল পুলিশ এসি। তাতে লাল–হলুদের তিন পয়েন্ট কাটা যায়। সেমিফাইনালে লাল–হলুদের নিয়ম বিরুদ্ধ ফুটবলার খেলানো নিয়ে ফের সমস্যা। কন্যাশ্রী কাপের নিয়মানুযায়ী, দলে দু’জন আন্তঃরাজ্য ফুটবলার খেলানো যেতে পারে। গ্রুপ লিগে বেশি ফুটবলার খেলানোর পর সেমিফাইনালে সেই পুলিশের বিরুদ্ধেই একই ভুল করে এসসি ইস্টবেঙ্গল। পুলিশের কোচ সুজাতা কর বলেন, “ওরা নিয়ম ভেঙে তিনজন আন্তঃরাজ্য ফুটবলার খেলিয়ে ম্যাচ জিতেছে। ফলে নিয়ম অনুযায়ী ওদের সরিয়ে আমাদের ফাইনালে খেলতে দেওয়া উচিত।”
[আরও পড়ুন: রিলিজ নিয়ে এলে তবেই সই! সবুজ-মেরুন ফুটবলার নিতে আবেদন করবে না লাল-হলুদ]
পুলিশ এসির তরফে অভিযোগ পেয়ে এদিন দু’ক্লাবের কর্তাদেরই ডেকে পাঠায় আইএফএ। দেখা যায়, যে ফুটবলারটিকে নিয়ে অভিযোগ, সিআরএসে তাঁর নাম রয়েছে ‘মীনা খাতুম।’ গত মরশুমে সে মুম্বইয়ের ফুটবলার ছিল। এসসি ইস্টবেঙ্গলের তরফে যে কার্ডে ফুটবলারটি সই করেছেন, তাতে নাম বদলের এফিডেভিট জমা দিয়ে সেখানে নাম হয়েছে, ‘মীনা বেগম।’ যাঁর জন্মস্থান কলকাতা। ফলে লাল–হলুদ কর্তারা বলেন, “আমরা মীনা বেগম নামে কলকাতার ফুটবলার সই করিয়েছি। কী করে জানব, আগে মীনা খাতুম নাম ছিল!”
আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায় তখন দু’দলকেই বুঝিয়ে রাজি করান, সেমিফাইনাল ম্যাচটা ফের রিপ্লে খেলার জন্য। যে ফাইনাল শনিবার হওয়ার কথা ছিল, ঠিক হয়েছে, তা ২৮ অথবা ২৯ ডিসেম্বর হবে। আর শনিবার সেমিফাইনাল ম্যাচ এসসি ইস্টবেঙ্গল মাঠের পরিবর্তে দেওয়া হয়েছে হাওড়া স্টেডিয়ামে। পুলিশের কোচ সুজাতা কর বললেন, “ওদের ফাইনালে ওটা যখন বাতিল করা হচ্ছে, তার মানেই তো প্রমাণিত, এসসি ইস্টবেঙ্গল ভুল ফুটবলার খেলিয়েছে। আইএফএ যেহেতু ফের খেলার জন্য অনুরোধ করেছে, তাই খেলছি। তবে ফুটবলারদের বলেছি, আমাদের সঙ্গে যে অন্যায়টা হল, তার জবাব শনিবার মাঠেই দিতে।”
[আরও পড়ুন: ‘আমার কাজ কথা বলবে’, নির্বাচক প্রধানের দায়িত্ব পেয়ে বিসিসিআইকে ধন্যবাদ চেতন শর্মার]
সমস্যা অন্য আরও একটা জায়গাতেও হয়েছে। এসসি ইস্টবেঙ্গলের তরফে যাবতীয় যোগাযোগের চিঠি শ্রী সিমেন্টের অফিসে পাঠানোর জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায় প্রতিটি চিঠিতেই এসসি ইস্টবেঙ্গল লিখে তা পাঠিয়ে দিচ্ছেন ক্লাব সচিব কল্যান মজুমদারকে। এই প্রসঙ্গে আইএফএ সচিব বললেন, “ক্লাব সচিব জানিয়েছিলেন, তাদের ক্লাবের নাম পরিবর্তন হয়ে এসসি ইস্টবেঙ্গল হবে। আমার সেভাবে ক্রীড়া সূচিতে এসসি ইস্টবেঙ্গল রাখছি। কিন্তু ক্লাব সচিব এসসি ইস্টবেঙ্গলের কোনও প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে কি না, সেটা বলে দেননি। ফলে আমরা ক্লাব সচিবকেই চিঠি দিচ্ছি।” আইএফএ’এর এই আচরণ অবশ্য ভালভাবে নিচ্ছে না ক্লাবের ইনভেস্টর কর্তারা।