সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: সাময়িক স্বস্তি পেলেও ফের বিপাকে বাইজুস। সম্প্রতি, ন্যাশনাল কোম্পানি ল অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল (NCLAT) নির্দেশ দিয়েছিল বাইজুসের বিরুদ্ধে দেউলিয়া সংক্রান্ত আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে না। বুধবার সেই নির্দেশ খারিজ করল দেশের শীর্ষ আদালত। একইসঙ্গে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিসিসিআই-এর স্পন্সরশিপ চুক্তির বকেয়া অনুযায়ী নিজেদের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে যে ১৫৮.৯ কোটি টাকা এই সংস্থা দিয়েছে তা এসক্রো অ্যাকাউন্টে জমা রাখা হবে। যার নিয়ন্ত্রণ থাকবে ক্রেডিটরস কমিটির (CoC) কাছে। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ বাইজুসের কাছে বিরাট ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।
স্পন্সরশিপ চুক্তি বাবদ বিসিসিআইয়ের কাছেও বিপুল টাকা বকেয়া ছিল বাইজুসের। সেই বকেয়া টাকা আদায়ের জন্য এনসিএলএটি-তে আবেদন জানিয়েছিল সংস্থাটি। আর্জি ছিল, বাইজুসের বিরুদ্ধে দেউলিয়া সংক্রান্ত আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা হোক। সেই মামলায় বাইজুসকে দেউলিয়া ঘোষণা করার প্রক্রিয়া চালানোর আবেদন খারিজ করে এনসিএলএটি। এবং উভয়পক্ষকে বোঝাপড়ার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই মতো ১৫৮.৯ কোটি টাকা বিসিসিআইকে দেবে বলে সিদ্ধান্ত নেয় বাইজুস। এদিকে বাইজু'স-এর কাছে ১ বিলিয়ন ডলার পাওনা রয়েছে মার্কিন বিনিয়োগকারী সংস্থা 'গ্লাস ট্রাস্টের'। বাকি সমস্ত ঋণদাতার তুলনায় বিসিসিআই-কে নিয়ে বাইজুসের অধিক তৎপরতার বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানায় তারা।
সেই মামলার শুনানিতে বুধবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ ন্যাশনাল কোম্পানি ল অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের সেই নির্দেশ খারিজ করে। আদালত জানায়, এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করার বা আপত্তি জানানোর মতো আইনি অধিকার ওই মার্কিন সংস্থার রয়েছে। বাইজুসকে দেউলিয়া ঘোষণা করার প্রক্রিয়া বন্ধ করার যে নির্দেশ এনসিএলএটি দিয়েছে তা ত্রুটিপূর্ণ। বাইজুসের বিরুদ্ধে দেউলিয়া সংক্রান্ত আইনি প্রক্রিয়া চালু রাখা হবে। একইসঙ্গে বোঝাপড়ার মাধ্যমে বিসিসিআইকে যে ১৫৮.৯ কোটি টাকা বাইজুস দিয়েছে তা ক্রেডিটরস কমিটির নিয়ন্ত্রণে জমা থাকবে, যতদিন না সমস্যার সমাধান হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এককালে দাপটের সঙ্গে ব্যবসা শুরু করলেও বর্তমান বেহাল দশা বেঙ্গালুরুর এডু-টেক সংস্থা বাইজুসের। বিদেশি মুদ্রা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ বাইজু রবীন্দ্রনের বিরুদ্ধে। বছর দুয়েক আগে থেকেই ব্যাপক সমস্যায় ছিল বাইজুস সংস্থাটি। বিদেশি মুদ্রা আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তাদের ৯ হাজার কোটি টাকা জরিমানা করে। এরইমাঝে শোনা যায় বাইজুসের প্রতিষ্ঠাতা বাইজু রবীন্দ্রন দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। তবে দেশ ছাড়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে রবীন্দ্রন জানান, বাবার চিকিৎসার জন্য দুবাই এসেছেন তিনি। কিন্তু দেশান্তরি হয়ে নয়। নিজের সংস্থাকে বিপন্মুক্ত করাই তাঁর উদ্দেশ্য।