সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের সব মহিলা নিরাপদ এবং আইনি গর্ভপাতের (Abortion) অধিকারী, এই বিষয়ে বিবাহিত এবং অবিবাহিত মহিলার মধ্যে কোনওরকম পার্থক্য করা অসাংবিধানিক, বৃহস্পতিবার ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। এইসঙ্গে শীর্ষ আদালত মন্তব্য করে, ‘বৈবাহিক ধর্ষণে’র (Marital Rape) কারণেও গর্ভপাতের প্রয়োজন হতে পারে। ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ও ‘ধর্ষণ’ গর্ভপাতের ক্ষেত্রে। শীর্ষ আদালতে ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া সত্বেও আদালতের এমন মন্তব্য উল্লেখযোগ্য বলেই মনে করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট জানায়, একজন নারী বিয়ে করেছেন কী করেননি, তার উপর ভিত্তি করে তাঁকে গর্ভপাতের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না। ২০ থেকে ২৪ সপ্তাহের মধ্যে বিবাহিতদের মতোই একজন অবিবাহিত মহিলাও গর্ভপাত করাতে পারবেন। এক্ষেত্রে ‘মেডিক্যাল টার্মিনেশন অফ প্রেগন্যান্সি আইন’ সংশোধনের কথা উল্লেখ করে আদালত।
[আরও পড়ুন: ফ্লাইওভারে তারস্বরে লাউডস্পিকার বাজিয়ে জন্মদিন উদযাপন, গ্রেপ্তার ২১]
যুগান্তকারী রায়ে আদালত স্পষ্ট করে দেয়, একজন মহিলা বিবাহিত কিনা তার উপর গর্ভপাতের অধিকার নির্ভর করতে পারে না। এইসঙ্গে আদালত জানায়, বিবাহ কোনও আইনি অধিকারের পূর্বশর্ত হতে পারে না কখনও। তাছাড়া সময়ের বাস্তবতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে আমাদের। যুগের নিয়মে সামাজিক বদল আসছে, আইনও এক জায়গায় স্থানু হয়ে থাকতে পারে না।
এইসঙ্গে গর্ভপাতের ক্ষেত্রে ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’কে ‘ধর্ষণ’ বলে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি চন্দ্রচূড় (Dhananjaya Y. Chandrachud) বলেন, বিবাহিত মহিলারাও ‘ধর্ষণে’র শিকার হতে পারেন। স্বামীর আচরণে অবাঞ্ছিত ভাবে গর্ভবতী হতে পারেন এক জন মহিলা। উল্লেখ্য, শীর্ষ আদালতে ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি হয়নি এখনও। এদেশে বৈবাহিক ধর্ষণকে আইনত অপরাধ বলে গন্য কর হয় না, তা সত্বেও আদালতের এমন মন্তব্য উল্লেখ্যযোগ্য বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
[আরও পড়ুন: উৎসবের মরশুমে ফের সামান্য চিন্তা করোনা গ্রাফে, দেশে বেশ খানিকটা বাড়ল দৈনিক আক্রান্ত]
অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য, গর্ভপাতকে নিরাপদ করা জরুরি। ভারতে অনিরাপদ গর্ভপাত অন্তঃসত্ত্বাদের মৃত্যুর অন্যতম কারণ। ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে ঝুঁকিবহুল গর্ভপাত হয়ে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অবিবাহিতরা ঝুঁকিবহুল গর্ভপাত করিয়ে থাকেন। এদিনের রায়ের পর আইনি বিষয়টি স্পষ্ট হবে বলে মনে করা হচ্ছে। নাবালিকার গর্ভপাতের ক্ষেত্রে পকসো আইন অনুয়ায়ী চিকিৎসকের নাম অপ্রকাশিত থাকবে।