সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সব রাজ্যেই মুক্তি পাবে ‘পদ্মাবত’। সাফ জানিয়ে দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সেন্সরের ছাড়পত্র সত্ত্বেও ছবিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল দেশের ছ’টি রাজ্য। এর বিরুদ্ধেই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ছবির প্রযোজকরা। বৃহস্পতিবার সকালেই সে মামলার শুনানি শুরু হয়। প্রযোজনা সংস্থার পক্ষ থেকে সওয়াল করেন আইনজীবী হরিশ সালভে। তিনি প্রশ্ন তোলেন সিবিএফসি যখন একটি ছবিকে ছাড়পত্র দিয়ে দিয়েছে। তারপর কেমন করে এ দেশের একাধিক রাজ্যে তা নিষিদ্ধ হতে পারে? এর জবাবে সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র জানান, এ ঘটনা সাংবিধানিক বিচারবুদ্ধির ক্ষেত্রে একটি অভিঘাত। সেন্সরের মতো সংস্থা শংসাপত্র দেওয়ার পর রাজ্যগুলি তাতে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে না। যে রাজ্যগুলি ইতিমধ্যেই ছবিটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে তা কার্যকর তো হবেই না, উপরন্তু নতুন করে কোনও রাজ্য ‘পদ্মাবত’-কে নিষিদ্ধ করতে পারবে না। এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় শীর্ষ আদালতের পক্ষ থেকে।
[এবার ‘চাঁদের পাহাড়’-কেও ছাপিয়ে গেল ‘আমাজন অভিযান’]
ইতিহাস নির্ভর ছবি তৈরি করার হ্যাপা পরিচালক-প্রযোজক সঞ্জয় লীলা বনশালি বেশ ভাল ভাবেই টের পেয়েছেন। মরুশহরে শুটিংয়ে সময় থেকেই কর্ণি সেনার তাণ্ডব চলছিল। ছবির পোস্টার ও ট্রেলার রিলিজের পর তা আরও বড় আকার ধারণ করে। কর্ণি সেনার মতোই আরও কট্টরপন্থী সংগঠন ছবির বিরুদ্ধে সরব হতে থাকে। বিজেপির একাধিক সাংসদের মুখেও হুমকি শোনা গিয়েছে। যদিও প্রযোজনা সংস্থার পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছিল এ ছবিতে রাজপুতদের সম্মান ও গৌরবের গাথাই তুলে ধরা হয়েছে। এমন কোনও দৃশ্য ছবিতে নেই যাতে তাঁদের সম্মানহানি হয়। তা সত্ত্বেও বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে। পরিচালকের মাথা কেটে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। নায়িকা দীপিকার নাক কেটে তাঁকে পঙ্গু করারও কথা বলা হয়। দীপিকার মাথার দাম ১০ কোটি টাকা ধার্য করা হয়। যদিও এত বিক্ষোভের মধ্যেও নিজের সহকর্মীদের পাশে পেয়েছিলেন সঞ্জয়। টলিউড-বলিউড ছবির স্বাধীনতার দাবিকে ব্ল্যাকআউট পালন করেছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তৎকালীন ‘পদ্মাবতী’র পাশে দাঁড়ান।
[মুক্তির এত মাস পর আরও এক পালক জুড়ল ‘বাহুবলী ২’-এর মুকুটে]
শেষে সুপ্রিম কোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। ছবির মুক্তির বিষয়টি দেখার দায়িত্ব প্রসূন জোশীর সিবিএফসির উপরই ন্যাস্ত করে শীর্ষ আদালত। বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়। যাতে মেওয়ারের রাজ পরিবারের প্রতিনিধি ও ইতিহাসবিদরাও ছিলেন। এর মধ্যেই আবার সংসদীয় কমিটির কাছেও নিজের ছবি নিয়ে জবাবদিহি করে আসেন পরিচালক। ডিসক্লেমারের ত্রুটি কাটিয়ে বহু টালবাহানার পর শেষে শংসাপত্র জোটে ছবির ভাগ্যে।‘পদ্মাবতী’ নাম পালটে হয় ‘পদ্মাবত’। ‘ঘুমর’ গানে দীপিকার মধ্যপ্রদেশও ঢেকে ফেলতে হয় পরিচালককে। ২৫ তারিখ ছবির মুক্তির দিনও ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। এত কিছুর পরও ছবিকে নিষিদ্ধ করা হয় গুজরাট, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও হরিয়ানার মতো রাজ্যে। শীর্ষ আদালতের এই ঘোষণায় অবশ্য সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়তে পারে রাজস্থানে। কারণ ছবির বিরুদ্ধে এখনও অনড় মনোভাব রয়েছে কর্ণি সেনার। তাই বিক্ষোভের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তবে বিক্ষোভ যতোই হোক। বৃহস্পতিবারের রায়ে নিজেদের ছবির মুক্তি নিয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে গেল সঞ্জয় লীলা বনশালি অ্যান্ড কোম্পানি। ২৫ তারিখই যে ছবি সারা দেশে মুক্তি পাবে। তা একপ্রকার নিশ্চিত।
[‘প্যাডম্যান’-এর কাহিনি বলতে অক্সফোর্ডে যাচ্ছেন অক্ষয়-টুইঙ্কল]
The post সব রাজ্যেই মুক্তি পাবে ‘পদ্মাবত’, জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট appeared first on Sangbad Pratidin.