সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আম্বানিদের নিরাপত্তা কেন? দিন কয়েক আগে এক জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে এমনটাই প্রশ্ন তুলেছিল ত্রিপুরা হাই কোর্ট। শুধু তাই নয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের হাতে থাকা আম্বানিদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যের নথি এজলাসে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সোমবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্র। আর সেই মামলা গ্রহণ করে শীর্ষ আদালত জানাল, আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার মামলাটির শুনানি হবে।
মহারাষ্ট্র সরকারের সুপারিশে শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি (Mukesh Ambani) ও তাঁর পরিবারকে নিরাপত্তা দেয় কেন্দ্র। রিলায়েন্স গ্রুপের কর্ণধারের উপর হামলার আশঙ্কায় তাঁকে জেড প্লাস ক্যাটেগরির সিকিউরিটি প্রদান করা হয়। তাঁর স্ত্রী নীতা আম্বানি পান ওয়াই প্লাস সিকিউরিটি। তা নিয়েই সম্প্রতি ত্রিপুরা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন বিকাশ সাহা নামের এক ব্যক্তি। তারপরই ৩১ মে ও ২১ জুন দু’টি ইন্টেরিম অর্ডার পাশ করে শীর্ষ আদালত। সেখানে, কী আশঙ্কার ভিত্তিতে আম্বানিদের নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের হাতে থাকা নথি চেয়ে পাঠায় আদালত। আগামীকাল অর্থাৎ ২৮ জুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক আধিকারিককে সমস্ত নথি নিয়ে এজলাসে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তারপরই ত্রিপুরা হাই কোর্টের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্র সরকার।
[আরও পড়ুন: সোনিয়া গান্ধীর ব্যক্তিগত সচিবের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, মামলা দায়ের দিল্লি পুলিশের]
এদিন, শীর্ষ আদালতে বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি জে বি পরদিওয়ালার অবসরকালীন বেঞ্চে কেন্দ্রের হয়ে সওয়াল করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তাঁর যুক্তি, মহারাষ্ট্র সরকারের সুপারিশে শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি ও তার পরিবারকে নিরাপত্তা দিয়েছে কেন্দ্র। তাই এই বিষয়টি ত্রিপুরা হাই কোর্টের এক্তিয়ারের বাইরে। গোয়েন্দা সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনীর রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই মুম্বই নিবাসী মুকেশ ও তাঁর স্ত্রী নীতাকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জনস্বার্থ মামলা অভিযোগ করা মতো তাঁদের সন্তানদের কোনও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হয়নি। আদালতে সলিসিটর জেনারেল আবেদন করেন, যেহেতু কালই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের জবাব তলব করেছে হাই কোর্ট, তাই জরুরি ভিত্তিতে আপিলের শুনানি হোক। সেই আরজি মেনে আগামীকালই শুনানিতে রাজি হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
উল্লেখ্য, গত বছর মুম্বইয়ে মুকেশ আম্বানির বাড়ি ‘অ্যান্টিলা’র কাছে একটি বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি উদ্ধার হয়। ওই ঘটনায় দেশজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়ায়। তদন্তে উঠে আসে একাধিক বিস্ফোরক তথ্য। ওই ঘটনায় নাম জড়ায় পুলিশ অফিসার শচীন ওয়াজের নাম। তারপর তাঁকে বরখাস্ত করে মুম্বই পুলিশ। জানা যায়, যে গাড়িতে বোমা রাখা হয়েছিল তার মালিক ব্যবসায়ী মনসুখ হিরনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় গত বছরের ৫ মার্চ। এরপরে রহস্য আরও গভীর হয়। অ্যান্টিলা মামলায় এনকাউন্টার স্পেশ্যালিস্ট প্রদীপ শর্মাকে গ্রেপ্তার করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA)।