অর্ণব দাস, বারাসত: পরীক্ষা চলাকালীন পড়ুয়াদের মোবাইল আটক করা হয়েছিল। আর তাতেই ধুন্ধুমার বেঁধে গেল উত্তর ২৪ পরগনার ছোট জাগুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। বাঁশ, লাঠি নিয়ে চড়াও হয় পড়ুয়াদের একাংশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে প্রাণ গেল স্কুলের অশিক্ষক কর্মীর। সঠিক তদন্তের দাবিতে সরব মৃতের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম শিবু শী (৬৮)। স্কুলের অস্থায়ী অশিক্ষক কর্মী। জানা গিয়েছে, স্কুলে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষার সময় মোবাইল আনা নিষিদ্ধ করছিল কর্তৃপক্ষ। তার পরেও কয়েকজন ছাত্রছাত্রী ফোন এনেছিল। পরীক্ষা চলাকালীন সেই ফোন বাজেয়াপ্ত করেন প্রধান শিক্ষক। বলা হয়েছিল পরীক্ষা শেষ হলে অভিভাবকদের নিয়ে স্কুলে আসতে হবে, তবেই মোবাইল ফেরত দেওয়া হবে।
[আরও পড়ুন: সংঘর্ষের মধ্যেই মণিপুরে ‘ঐতিহাসিক’ সাফল্য, অস্ত্র ছেড়ে শান্তিচুক্তি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের]
ছাত্র-ছাত্রীদের জানানো হয়, বিকেল তিনটের মধ্যে অভিভাবক নিয়ে এসে মোবাইলগুলি নিয়ে যেতে হবে। জানা গিয়েছে, পরীক্ষা শেষে কয়েকজন অভিভাবক এসে মোবাইল নিয়ে যাওয়ার পরও ১৪-১৫টি মোবাইল রয়ে গিয়েছিল। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক চলে যাওয়ার পর তার ঘরে তালা দেন স্কুলের অস্থায়ী কর্মী শিবু শী। তখনই কয়েকজন ছাত্রছাত্রী তার উপর চড়াও হয়ে ঘর খুলে মোবাইলগুলি ফেরত দিতে বলে। অভিযোগ, সেই সময় গালিগালাজ সহ ধাক্কাধাক্কি করা হয় তাঁকে। বৃদ্ধ শিবুকে মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এই নিগ্রহের কারণেই তিনি অসুস্থ হয়ে পরেন। পড়ুয়াদের ভিড় থেকে কোনমতে বেরিয়ে শিবু আশ্রয় নেন স্কুলের পাশে একটি বন্ধ দোকানের সামনে। তখন স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ছোটজাগুলিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানেই চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক মানবেন্দ্র মন্ডল বলেন, “পরীক্ষা চলাকালীন ছাত্রছাত্রীদের মোবাইল আনতে নিষেধ করে নোটিস দেওয়া হয়েছিল। এরপরেও কয়েক জন ছাত্রছাত্রী মোবাইল আনায় আটকে রাখা হয়েছিল। ঘটনার সময় আমি চলে গিয়েছিলাম। শুনেছি একটা গন্ডগোল হয়েছে। এর জেরে অসুস্থ্য হয়ে শিবু শীর মৃত্যু হয়েছে।” স্কুলের পরিচালন সমিতির সদস্য রবিউল ইসলাম বলেন, “ঘটনার সময় স্কুলের সিসি ক্যামেরা সচল ছিল। গোটা বিষয়টি দত্তপুকুর থানার পুলিশ খতিয়ে দেখছে।” বৃহস্পতিবার স্কুল বন্ধ রাখা হচ্ছে।