অভিষেক চৌধুরী, কালনা: স্মার্টফোন, ল্যাপটপের গ্রাসে হারাচ্ছে ছেলেবেলা। বইবিমুখ হচ্ছে মানুষ। অধিকাংশ পাঠাগারে ঝুলছে তালা। ধুলো জমছে বইয়ের মলাটে। কোভিড পরিস্থিতিতে সেই প্রবণতা যেন আরও বেড়েছে। এমতাবস্থায় বইপ্রেম ফেরাতে অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে পূর্বস্থলীতে। স্কুল বিল্ডিংয়ের বাইরের দেওয়ালই হয়ে উঠেছে লাইব্রেরি-মুক্ত পাঠাগার।
সহজপাঠ থেকে গোয়েন্দা গল্প, উপন্যাস থেকে প্রবন্ধ, কী নেই সেখানে? দেওয়ালের শোকেসে থরে থরে সাজানো রয়েছে ভিন্ন-ভিন্ন স্বাদের বই। আর তা দেখেই বই পড়ার উৎসাহ তৈরি হচ্ছে পড়ুয়া থেকে এলাকায় থাকা বইপ্রেমীদের মধ্যে। পূর্বস্থলী-১ ব্লকের মিনাপুর নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের উদ্যোগে দেওয়ালের বাইরে শোকেস তৈরি করে এমনই এক ‘মুক্ত পাঠাগার’ তৈরি করা হয়েছে। সেই পাঠাগারেরই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় মঙ্গলবার। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিডিও দেবব্রত জানা, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রসেনজিৎ সরকার-সহ বিশিষ্টজনেরা।
[আরও পড়ুন: মদ মেশানো জল খেয়ে ‘মদ্যপ’ হয়ে গেল দুই মোষ! তারপর…]
স্কুলের দেওয়ালের বাইরের দিকে তৈরি হওয়া এমনই এক মুক্ত পাঠাগারের অভিনব ভাবনায় ভীষণ খুশি পূর্বস্থলীর দোগাছিয়া পঞ্চায়েতের মিনাপুর এলাকার বইপ্রেমীরা। সারা বছর ধরেই সারা দিন যে কোনও সময়ে বইপ্রেমীরা ইচ্ছেমতো ওই পাঠাগারের বই নিয়ে পড়তে পারবেন। কিন্তু বাড়ি নিয়ে যাওয়া চলবে না। সাধারণ জ্ঞানের বই থেকে ছোটদের বই, বড়দের গল্প-উপন্যাস থেকে বিভিন্ন ধরনের ম্যাগাজিনও রাখা হচ্ছে বলে জানান শিক্ষক প্রসেনজিৎ সরকার।
তাঁর কথায়, “অধিকাংশ মানুষ বেশিরভাগ সময়ে টিভির পর্দায় না হলে মোবাইলে ব্যস্ত থাকেন। অথচ এইসব মানুষজনই একসময় বই নিয়ে ব্যস্ত থাকত। তাই বইপ্রেমীদের নতুন করে বই পড়ার উৎসাহ তৈরি করতেই স্কুলের পক্ষ থেকে এই ভাবনা নেওয়া হয়েছে।” এতে বেশ খুশি বইপ্রেমীরাও। এলাকার বইপ্রেমী মইনুল মণ্ডল, সুধাকর ঘোষরা বলেন, “স্কুলের এমন এক ভাবনাকে সাধুবাদ জানাতেই হয়। যে কোনও সময় যখন খুশি আমরা ওখান থেকে বই নিয়ে পড়তে পারব। এটা জেনেও বেশ ভালো লাগছে। মানুষ এখন বই পড়তেই ভুলে গিয়েছে। মানুষকে বইমুখী করতে এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়।” বিডিও দেবব্রত জানা বলেন, “স্কুলের বাইরের দেওয়ালে বইপ্রেমীদের জন্য মুক্ত পাঠাগারের এই ভাবনা বেশ অভিনব। ভীষণ ভালো উদ্যোগ।”
[আরও পড়ুন: প্রেমিকার সঙ্গ চাই, সন্ধে থেকে রাত পর্যন্ত বাড়ির সামনে ডাক ছেড়ে ধরনা ছাগলের!]